ইতিহাসের পাতা

স্টিফেন হকিং

স্টিফেন হকিং তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ, মহাবিশ্ববিদ, লেখক, কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক মহাকাশবিদ্যা বিভাগের পরিচালক এবং প্রফেসর জন্ম: ৮ জানুয়ারি, ১৯৪২খ্রি. মৃতু্য: ১৪ মার্চ ২০১৮খ্রি.

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য় স্টিফেন হকিং একজন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ, মহাবিশ্ববিদ, লেখক, ক্যামব্র্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক মহাকাশবিদ্যা বিভাগের পরিচালক এবং প্রফেসর ছিলেন। ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি স্টিভেন হকিংয়ের জন্ম লন্ডনের অক্সফোর্ডে। হকিংয়ের বাবা ড. ফ্রাঙ্ক হকিং একজন জীববিজ্ঞান গবেষক ও মা ইসোবেল হকিং একজন রাজনৈতিক কর্মী। লন্ডনের হাইগেটের বাইরন হাউস স্কুলে হকিংয়ের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। হকিং ১৯৫৯ সালের অক্টোবরে ১৭ বছর বয়সে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তার স্নাতক পাঠগ্রহণ শুরু করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর করতে আসার পর হকিং 'মটর নিউরন ডিজিজ'-এ আক্রান্ত হন। এ কারণে তার প্রায় সব মাংসপেশি ধীরে ধীরে অবশ হয়ে আসে। ক্যামব্রিজে প্রথম দুই বছর তার কাজ তেমন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ছিল না। কিন্তু রোগের প্রকোপ কিছুটা থামলে, হকিং তার সুপারভাইজার ডেনিশ উইলিয়াম শিয়ামার সাহায্য নিয়ে পিএইচডি অভিসন্দর্ভের কাজে এগিয়ে যান। তত্ত্বীয় কসমোলজি আর কোয়ান্টাম মধ্যাকর্ষ হকিংয়ের প্রধান গবেষণা ক্ষেত্র। ১৯৬০-এর দশকে ক্যামব্রিজের বন্ধু ও সহকর্মী রজার পেনরোজের সঙ্গে মিলে হকিং আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব থেকে একটি নতুন মডেল তৈরি করেন। সেই মডেলের ওপর ভিত্তি করে ১৯৭০-এর দশকে হকিং তাদের পেনরোজ-হকিং তত্ত্বের প্রথমটি প্রমাণ করেন। এই তত্ত্বগুলো প্রথমবারের মতো কোয়ান্টাম মহাকর্ষে এককত্বের পর্যাপ্ত শর্তগুলো পূরণ করে। কসমোলজি ও কোয়ান্টাম হকিংয়ের প্রধান গবেষণার ক্ষেত্র ছিল। আপেক্ষিকতার তত্ত্ব থেকে নতুন মডেল তৈরি করেন হকিং। এই বিকিরণের নাম পরবর্তীতে তার নামেই 'হকিং বিকিরণ' রাখা হয়। এই আবিষ্কার কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে আগের ধারণার পরিবর্তন ঘটিয়েছে। ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষণা করেছেন, ১৯৭৪ সালে আবিষ্কার করেন- কৃষ্ণগহ্বর সম্পূর্ণ কৃষ্ণ নয়, পদার্থের কোয়ান্টামের আচরণ বিচার করলে দেখা যায় কৃষ্ণগহ্বর থেকে কণিকা এবং বিকিরণ নিঃসৃত হতে পারে। কৃষ্ণগহ্বরে তপ্ত বস্তু পিন্ডের মতো বিকিরণ নিঃসৃত করতে পারে। ১৯৭৪ সালে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে তিনি লন্ডন রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালের এপ্রিলে হকিংয়ের বিখ্যাত বই 'এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম' প্রকাশিত হয় এবং সে বছরই গিনেস বুকে নাম ওঠে বেস্ট সেলার হিসেবে। তার 'আ ব্রিফ হিস্টোরি অফ টাইম' বইটি বিশ্বজুড়ে এক কোটিবারের বেশি বিক্রি হয়েছে, অনূদিত হয়েছে ৩০টিরও বেশি ভাষায়। এ ছাড়া তার উলেস্নখযোগ্য বইগুলো হলো- কৃষ্ণগহ্বর, শিশু মহাবিশ্ব ও অন্যান্য রচনা, দ্য ইউনিভার্স ইন আ নাটশেল, অন দ্য সোল্ডার্স অব জায়ান্টস, গড ক্রিয়েটেড দ্য ইন্টিজার্স: দ্য ম্যাথমেটিক্যাল ব্রেকথ্রম্নস দ্যাট চেঞ্জড হিস্ট্রি, দ্য ড্রিমস দ্যাট স্টাফ ইজ মেড অফ : দ্য মোস্ট অ্যাস্টাউন্ডিং পেপার্স অব কোয়ান্টাম ফিজিক্স অ্যান্ড হাউ দে শুক দ্য সায়েন্টিফিক ওয়ার্ল্ড, মাই ব্রিফ হিস্ট্রি। তিনি তার কর্মক্ষেত্রে অবদানের জন্য বহু পুরস্কার অর্জন করেছেন- অ্যাডামস পুরস্কার (১৯৬৬), এডিংটন পদক (১৯৭৫), ম্যাক্সওয়েল পদক ও পুরস্কার (১৯৭৬), গাণিতিক পদার্থবিদ্যায় ড্যানি হাইনম্যান পুরস্কার (১৯৭৬), হিউ পদক (১৯৭৬), আলবার্ট আইনস্টাইন পদক (১৯৭৮), রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির স্বর্ণপদক (১৯৮৫), ডিরাক পুরস্কার (১৯৮৭)। স্টিফেন হকিং ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজে ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ, ৭৬ বছর বয়সে মৃতু্যবরণ করেন। \হউলফ পুরস্কার (১৯৮৮), প্রিন্স অব অ্যাস্টুরিয়াস পুরস্কার (১৯৮৯), অ্যান্ড্রু গেম্যান্ট পুরস্কার (১৯৯৮), নেলর পুরস্কার ও লেকচারশিপ (১৯৯৯), লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার (১৯৯৯), রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের আলবার্ট পদক (১৯৯৯), কপলি পদক (২০০৬), প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯), ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স পুরস্কার (২০১২), বিবিভিএ ফাউন্ডেশন ফ্রন্টিয়ারস অব নলেজ পুরস্কার (২০১৫)।