ইতিহাসের পাতা ডরিস লেসিং

প্রকাশ | ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
ডরিস লেসিং ঔপন্যাসিক, কবি, নাট্যকার, জীবনীলেখক এবং ছোটগল্পকার জন্ম :২২ অক্টোবর, ১৯১৯ মৃতু্য :১৭ নভেম্বর, ২০১৩
ডরিস লেসিং একজন ব্রিটিশ উপন্যাসিক, কবি, নাট্যকার, জীবনীলেখক এবং ছোটগল্পকার। ২০০৭ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়িনী। আটাশি বছর বয়সে এই পুরস্কার জিতে সাহিত্যে তিনিই প্রবীণতমা এবং নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে একাদশতম। এই লেখিকার জন্ম ইরানের কিরমান শহরে, ১৯১৯ সালের ২২ অক্টোবর। বাবা-মা দু'জনেই ব্রিটিশ। মা ছিলেন নার্স আর বাবা চাকরি করতেন ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অব পার্সিয়াতে, কেরানি হিসেবে। পরবর্তী সময়ে ভাগ্যান্বেষণে তিনি চলে যান দক্ষিণ রোডেশিয়ায়। সেখানেই কাটে ডরিস লেসিংয়ের শৈশব। চৌদ্দ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দিলেও নিজেকে স্বশিক্ষিত করে তোলেন লেসিং। শৈশবেই তার পরিচয় ঘটে ডিকেন্স, স্কট, স্টিভেনশন ও কিপলিংয়ের মতো সাহিত্যিকদের রচনার সঙ্গে। পরে তিনি পাঠ করেন ডি.এইচ. লরেন্স, তলস্তয় ও দস্তয়েভস্কি। যা তার চিন্তা ও কল্পনাকে সুবিন্যস্ত করে। ১৯৪৯ সালের ওই বছরই তার প্রথম উপন্যাস 'দ্য গ্রাস ইজ সিংগিং' প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার পেশাদার লেখকজীবনের শুরু। কিন্তু তিনি খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে যান তার দ্যা গোল্ডেন নোটবুক (১৯৬২) উপন্যাসের জন্য। এই উপন্যাস বিবেচিত হয় নারীবাদী ক্লাসিক হিসেবে। ডরিস লেসিংয়ের লেখার মধ্যে আছে- সমাজ-রাজনীতি, নানামুখী সংস্কৃতির বিরোধ, বর্ণবাদ কেন্দ্রিক অসাম্যের অবিচার, ব্যক্তির নিজের মধ্যে উপস্থিত বিপরীতমুখী উপাদানগুলোর বিরোধ, ব্যক্তিগত মূল্যবোধ এবং সামষ্টিকতার বিরোধ। স্পষ্টভাষণের কারণেই দক্ষিণ রোডেশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত হন লেসিং। ১৯৫১-১৯৫৯ সালে রচিত শিক্ষামূলক সিরিজ উপন্যাস 'চিলড্রেন অব ভায়োলেন্স' লেখেন। ১৯৬২-তে এসে তিনি লেখেন "দ্য গোল্ডেন নোটবুক"- যেখানে একজন সমসাময়িক সাহিত্যিকের বিভিন্নমুখী সত্তা ফুটে ওঠে অবিশ্বাস্য গভীরতা এবং ব্যাপ্তি নিয়ে। ডরিস লেসিংয়ের অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আছে 'দ্য গুড টেরোরিস্ট (১৯৮৫)', 'দ্য ফিফথ চাইল্ড (১৯৮৮)'। জেন সমারস ছদ্মনামে তিনি দুটো উপন্যাস প্রকাশ করেন: 'দ্য ডায়েরি অব আ গুড নেইবার (১৯৮৩)' এবং 'ইফ দ্য ওল্ড কুড (১৯৮৪)'। ১৯৯৫ সালের জুনে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে অনারারি ডিগ্রি গ্রহণ করেন ডরিস এবং একই বছর দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণ করেন। ১৯৫৬ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পর সেটাই প্রথম ভ্রমণ। চলিস্নশ বছর আগে যেসব বিষয়ের জন্য তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, সেবার সেসব বিষয়ের ওপরই লেখক হিসেবে তাকে স্বাগত জানানো হয়। ওদিকে দীর্ঘ ত্রিশ বছর পর ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয় তার 'গোয়িং হোম', 'ইন পারসু্যট অব ইংলিশ' এবং 'লাভ অ্যাগেইন', 'লাভ অ্যাগেইন' বইয়ের জন্য সেবার নোবেল সাহিত্য এবং ব্রিটেনের উইনটারস গিল্ড অ্যাওয়ার্ড ফর ফিকশনের জন্য মনোনীত হন। তার আত্মজীবনীর দ্বিতীয় খন্ড 'ওয়াকিং ইন দ্য শেড' প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে, এবং সেবারই ন্যাশনাল বুক ক্রিটিকস সার্কল অ্যাওয়ার্ডের আত্মজীবনী বিভাগে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর নতুন সহস্রাব্দ শুরুর প্রাক্কালে যুক্তরাজ্যের অনার্স লিস্টে 'কম্পেনিয়ন অব অনার' হিসেবে নিযুক্ত হন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ওই পুরস্কার প্রদান করেন। ডরিস লেসিং ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর মৃতু্যবরণ করেন।