প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি

বিজ্ঞান

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

নূরমোহাম্মদ দেওয়ান, প্রধান শিক্ষক শিক্ষা নিকেতন, চাঁদপুর
খাদ্য শৃঙ্খল
প্রশ্ন. খাদ্যশৃঙ্খল কী? ধান, ঘাসফড়িং, ব্যাঙ, সাপ, ঈগল- এ খাদ্যশৃঙ্খলে ব্যাঙ বিলুপ্ত হলে কী ঘটবে ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর : সবুজ উদ্ভিদ খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণ করে। এ সবুজ উদ্ভিদকে খায় ছোট ছোট প্রাণী। আবার ছোট প্রাণীকে খায় বড় প্রাণী। এভাবে পরিবেশে খাদ্য ও খাদকের মধ্যে যেসব ধারাবাহিকতা বিদ্যমান তাকেই খাদ্যশৃঙ্খল বলে। প্রশ্নে উলিস্নখিত খাদ্যশৃঙ্খল থেকে যদি ব্যাঙ বিলুপ্ত হয়ে যায়, তবে ঘাসফড়িংয়ের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এতে ধান ক্ষেতে ঘাসফড়িংয়ের আক্রমণ বেড়ে যাবে। ফলে ধান গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ধানের ফলন কমে যাবে। অন্যদিকে সাপ ও ঈগল খাদ্যের অভাবে মারা যাবে। প্রশ্ন. উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর : উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে আমরা খাদ্য ও ওষুধসহ বেঁচে থাকার অনেক জিনিস পাই। জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন আমরা উদ্ভিদ থেকেই পেয়ে থাকি। উদ্ভিদের দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে তৈরি হয় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ। বিভিন্ন প্রাণীকে আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি। আবার প্রাণীর দেহের বিভিন্ন অংশ থেকেও তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ওষুধ। প্রশ্ন. পরিবেশ দূষণের উৎস কী? তোমার এলাকার পরিবেশ দূষণ রোধে তোমার বন্ধুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার দুটি উপায় লেখ। উত্তর : যেসব কারণ পরিবেশের ক্ষতি করে সেগুলোই পরিবেশ দূষণের উৎস। যেমন- বায়ু দূষণের উৎস শিল্পকারখানা, যানবাহন, ইটের ভাটা ইত্যাদি। পানি দূষণের উৎস রাসায়নিক সার, কীটনাশক, কলকারখানার বর্জ্য। আবার মাটি দূষণের উৎস পস্নাস্টিক, পলিথিন ইত্যাদি। আমার এলাকার পরিবেশ দূষণ রোধে আমার বন্ধুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার দুটি উপায় হলো- ১. পরিবেশ দূষণের কারণ ও পরিবেশ দূষণ হলে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী ও জীবজন্তুর ওপর কী কী প্রভাব পড়তে পারে তা পয়েন্ট আকারে কাগজে লিখে বন্ধুদের দিতে পারি। ২. বন্ধুদের এক জায়গায় জড়ো করে পরিবেশ দূষণ রোধে কী কী পন্থা অবলম্বন করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনা করতে পারি। প্রশ্ন. মাটি দূষণ কাকে বলে? তোমার এলাকার মাটি দূষণের কারণ ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর : মাটিতে বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান যুক্ত হয়ে মাটির স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হওয়াকে মাটি দূষণ বলে। আমার এলাকার মাটি দূষণের ৪টি কারণ নিম্নরূপ- ১. বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য মাটিতে ফেলা। ২. চাষাবাদের জন্য সার ও কীটনাশক ব্যবহার। ৩. পলিথিন ও পস্নাস্টিক মাটিতে ফেলা। ৪. বন-জঙ্গল ধ্বংস করা। প্রশ্ন. কাঁচা পায়খানা এবং জমিতে অধিক হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার গ্রামবাসীদের জীবনে কী প্রভাব ফেলবে বলে তুমি মনে কর? ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর : কাঁচা পায়খানা একই সঙ্গে বায়ু ও পানিকে দূষিত করে। জমিতে অধিক রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে জমি ধীরে ধীরে উর্বরাশক্তি হারাবে। আবার কাঁচা পায়খানার মল ও রাসায়নিক সার বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে পুকুর, ডোবা, খাল, বিল ও নদীর পানিতে পড়ে পানিকে দূষিত করে। এ দূষিত পানি রান্নাবান্না ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করলে গ্রামবাসীদের বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ যেমন- ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরা, টাইফয়েড ও জন্ডিসের মতো মারাত্মক রোগ দেখা দেবে। প্রশ্ন. কলকারখানার বর্জ্যে কী দূষিত হয়? তোমার এলাকার পরিবেশ নানা ধরনের দূষণে আক্রান্ত। এ অবস্থায় পরিবেশ রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে তোমার অভিমত ৪টি বাক্যে ব্যক্ত কর। উত্তর : কলকারখানার বর্জ্যে পানি দূষিত হয়। দূষণে আক্রান্ত আমার এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণের উপায় নিচে ৪টি বাক্যে ব্যক্ত করা হলো- ১. বনজঙ্গল কাটা বন্ধ করতে হবে। ২. অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, কলকারখানা তৈরি করা যাবে না। ৩. প্রয়োজন ছাড়া জমিতে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। ৪. পস্নাস্টিক, পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। প্রশ্ন. কলকারখানা, বিড়ি-সিগারেট ও রান্নাঘরের ধোঁয়া দ্বারা কী দূষণ হচ্ছে? এ দূষণ রোধে তোমার করণীয় ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর : কলকারখানা, বিড়ি-সিগারেট ও রান্নাঘরের ধোঁয়া দ্বারা বায়ু দূষণ হচ্ছে। নিম্নলিখিতভাবে বায়ু দূষণ রোধ করা যেতে পারে- কালো ধোঁয়া উৎপাদন করে এমন যানবাহন ব্যবহার বন্ধ করা। কলকারখানায় কম জ্বালানি ব্যবহৃত হয় এমন উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। ধূমপান না করা, বিশেষ করে অন্য মানুষের কাছে বা বদ্ধস্থানে ধূমপান না করা। উন্নত চুলা ব্যবহারের পাশাপাশি রান্নাঘরে বায়ু চলাচলের ভালো ব্যবস্থা তৈরি করা। প্রশ্ন. পরিবেশ দূষণ কী? বায়ু ও পানি দূষণ রোধে করণীয় সম্পর্কে তোমার পরামর্শ ৪টি বাক্যে উপস্থাপন কর। উত্তর : আমাদের চারপাশের পরিবেশকে আমরা নানাভাবে ব্যবহার করি, যার ফলে পরিবেশে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। এসব পরিবর্তন যখন আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয় তখন তাকে পরিবেশ দূষণ বলে। সুপরিকল্পিতভাবে বাসগৃহ নির্মাণ, শিল্পকারখানা স্থাপন, যানবাহন চালনা করলে বায়ু দূষণ রোধ করা সম্ভব। এ ছাড়াও বেশি করে গাছ লাগালে বায়ু দূষণ রোধ হয়। জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে, পুকুর বা জলাশয়ের ওপর কাঁচা পায়খানা তৈরি না করে বাড়ির এক কোনায় পাকা পায়খানা তৈরি করে, কলকারখানা ও বাড়ির বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা করলে পানি দূষণ রোধ হবে। প্রশ্ন. শব্দ দূষণ রোধে তুমি কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পার সংক্ষেপে লেখ। উত্তর : শব্দ দূষণ রোধে আমি যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি তা হলো- ১. কোনো অনুষ্ঠানে উচ্চৈঃস্বরে গান বাজাব না। ২. আতশবাজি বা পটকা ফুটাব না। ৩. উচ্চৈঃস্বরে আওয়াজ বা গোলমাল করব না। ৪. মাইক বাজানো থেকে বিরত থাকব। ৫. যারা শব্দ দূষণ করে তাদের এর ক্ষতিকর দিক বোঝানোর চেষ্টা করব। প্রশ্ন. পরিবেশে পানি দূষণের প্রভাবে কী কী ঘটতে পারে লেখ। উত্তর : পানি দূষণের প্রভাবে পরিবেশে যেসব ঘটনা ঘটতে পারে তা হলো- ১. দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে মানুষ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে। যেমন- ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ইত্যাদি। ২. জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতু্য ঘটবে। ৩. পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। প্রশ্ন. পরিবেশ সংরক্ষণের পাঁচটি উপায় লেখ। উত্তর : পরিবেশ সংরক্ষণের পাঁচটি উপায় হলো- ১. অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও কলকারখানা তৈরি না করা। ২. বনজঙ্গল কাটাসহ নদীনালা ভরাট বন্ধ করা। ৩. কলকারখানার বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা নেয়া। ৪. পস্নাস্টিক ও পলিথিন যেখানে সেখানে না ফেলা। ৫. মৃত জীবজন্তু ও জৈব আবর্জনা মাটিতে গর্ত করে মাটিচাপা দিয়ে রাখা। প্রশ্ন. পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ৫টি বাক্যে বর্ণনা কর। উত্তর : পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ৫টি বাক্যে নিচে বর্ণনা করা হলো- ১. পরিবেশ দূণের ফলে বায়ু, পানি ও মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়। ২. শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরাসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। ৩. অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিলুপ্তি ঘটে। ৪. মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। ৫. পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।