প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি (বিজ্ঞান)

পরিবেশ সংরক্ষণের উপায়-

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

নূরমোহাম্মদ দেওয়ান, প্রধান শিক্ষক শিক্ষা নিকেতন, চাঁদপুর য়
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা থেকে কাঠামোগত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো। প্রশ্ন. শব্দদূষণ কী? শব্দদূষণের ৪টি কারণ লেখ। উত্তর : হঠাৎ উচ্চ আওয়াজ, গোলমাল বা বিভিন্ন উচ্চমাত্রায় শব্দের কারণে মানুষের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। শব্দের এ আধিক্যই শব্দদূষণ নামে পরিচিত। শব্দদূষণের ৪টি কারণ নিচে দেয়া হলো- ১. উচ্চৈঃস্বরে মাইক বাজানো। ২. বিনা প্রয়োজনে গাড়ির হর্ন বাজানো। ৩. যানবাহন, পেস্নন বা লঞ্চের শব্দ। ৪. শিল্পকারখানার শব্দ। প্রশ্ন. পরিবেশ দূষণ কী? কীভাবে বায়ুদূষণ ঘটে তা ৩টি বাক্যে বর্ণনা কর। উত্তর : আমাদের চারপাশের পরিবেশকে আমরা নানাভাবে ব্যবহার করি, যার ফলে পরিবেশে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। এসব পরিবর্তন যখন আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয় তখন তাকে পরিবেশ দূষণ বলে। নিম্নলিখিত উপায়ে বায়ু দূষণ ঘটে থাকে- ১. অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ, শিল্পকারখানা স্থাপন, যানবাহন চালানো, ইটের ভাটায় ইট পোড়ানো ইত্যাদি কারণে বায়ু দূষিত হয়। ২. ঘনবসতি এলাকায় আবর্জনা ও মলমূত্র নিষ্কাশনের তেমন কোনো ব্যবস্থাপনা না থাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে বায়ুতে মিশে বায়ু দূষণ ঘটায়। ৩. জমিতে অতিরিক্ত পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছিটানোর সময় রাসায়নিক উপাদান বায়ুর সঙ্গে মিশে বায়ু দূষিত করে। প্রশ্ন. তোমাদের বাড়ির পুকুরের পানি দূষিত হলে পরিবারের ওপর কী প্রভাব পড়বে? ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর : আমাদের বাড়ির পুকুরের পানি দূষিত হলে আমাদের পরিবারের ওপর নিচের প্রভাবগুলো পড়বে- ১. পরিবারের সদস্যদের কলেরা, আমাশয়, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পেটের পীড়া দেখা দিতে পারে। ২. চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ৩. গোসল করতে সমস্যা হবে। ৪. থালা-বাসন ধুতে সমস্যা হবে। ৫. কাপড় কাচতে বা ধুতে সমস্যা হবে। প্রশ্ন. মনে কর তোমার গ্রামের কিছু পুকুরের পানি দূষিত হয়ে গেছে। গ্রামের অবশিষ্ট পুকুরগুলো দূষণের কবল থেকে রক্ষা করতে তুমি কী করবে? অথবা, পানি দূষণ রোধে তোমার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ উলেস্নখ কর। উত্তর : গ্রামের অবশিষ্ট পুকুরগুলোকে দূষণের কবল থেকে রক্ষা করতে আমি নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করব- ১. গ্রামবাসীকে ওই পুকুরগুলোর পানিতে বাসন-কোসন মাজা, ময়লা কাপড় কাচা ও সাবান দিয়ে গোসল করতে নিষেধ করব। ২. গরু-মহিষ গোসল করাতে নিষেধ করব। ৩. বিশেষ করে পুকুরপাড়ের জমিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে নিষেধ করব। ৪. মরা ও পচা জীবজন্তু এবং জৈব আবর্জনা পানিতে ফেলতে নিষেধ করব। ৫. সব সময় স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহারের পরামর্শ দেব। প্রশ্ন. নিরাপদ পানি কী? তোমাকে পুকুর, নদী বা ট্যাপের পানি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ করতে বলা হলো। এ পানিকে সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ করতে তোমার অবলম্বনকৃত পদ্ধতি ৪টি বাক্যে বর্ণনা কর। উত্তর : যে পানি রোগজীবাণুমুক্ত এবং যা পানের উপযোগী তাকে নিরাপদ পানি বলে। যেমন- আর্সেনিকমুক্ত নলকূপের পানি, বৃষ্টির পানি ইত্যাদি। পুকুর, নদী বা ট্যাপের পানিতে নানারকম জীবাণু মিশে থাকে। এ পানিকে সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ করতে আমি ফুটানো পদ্ধতি অবলম্বন করব। এ প্রক্রিয়ায় পানি ফুটতে শুরু করার পর আরো ২০ মিনিট তাপ দিলে পানিতে থাকা জীবাণু মারা যায়। এরপর পানিকে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিলে তা পান করার জন্য নিরাপদ হয়। প্রশ্ন. দূষণে আক্রান্ত একটি নদীর পানি দূষণ রোধের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে তা ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর : দূষণে আক্রান্ত একটি নদীর পানি দূষণ রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে- ১. নদীর পানিতে কোনো ধরনের ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। ২. কলকারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলার আগে দূষণমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. জীবনজন্তুর মৃতদেহ, মলমূত্র নদীতে ফেলা যাবে না। ৪. নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ড্রেনগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। ৫. সর্বোপরি নদীর পানির দূষণ রোধে সরকারকে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। প্রশ্ন. দূষিত পানি কী? তোমার এলাকা বন্যাকবলিত হলে তুমি কিভাবে বিশুদ্ধ পানি পান করতে পার সে সম্পর্কে ৪টি বাক্য লেখ। উত্তর : পানিতে ক্ষতিকর কোনো কিছু মিশে থাকলে সে পানিকে দূষিত পানি বলা হয়। বন্যার সময় পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানি পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় পানি ফুটানোও সম্ভব হয় না। ফুটানো ছাড়া ছাঁকন বা থিতানো বদ্ধতিতে পানি পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় আমি বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ (ফিটকিরি, বিস্নচিং পাউডার, হ্যালোজেন ট্যাবলেট ইত্যাদি) মিশিয়ে পানিকে জীবাণুমুক্ত করে পান করতে পারব। প্রশ্ন. বায়ুতে যে সব সময়ই কিছু জলীয় বাষ্প থাকে তা কিভাবে প্রমাণ করবে? উত্তর : বায়ুতে সব সময়ই কিছু জলীয় বাষ্প থাকে। নিচের পরীক্ষাটির সাহায্যে সহজেই তা প্রমাণ করা যায়- একটি কাচের গস্নাসে কয়েক টুকরো বরফ নিই। তারপর কিছুক্ষণ রেখে দিই। লক্ষ্য করলে দেখব যে, গস্নাসের বাইরের গায়ে পানি জমে আছে। হাত দিয়ে গস্নাস ধরলে হাতে পানি লাগবে এবং গস্নাসটি ঠান্ডা অনুভূত হবে। গস্নাসের বাইরের গায়ের এ পানি বরফ থেকে আসেনি। আসলে গস্নাসের চারপাশের বায়ুতে যে জলীয় বাষ্প ছিল তাই ঠান্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়েছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, বায়ুতে সব সময়ই কিছু জলীয় বাষ্প থাকে।