এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি বাংলা দ্বিতীয় পত্র

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

মো. ইমরান হোসেন, সহকারী শিক্ষক ইস্টার্ন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দনিয়া, ঢাকা
বাল্যকালে বিদ্যাভ্যাস করতে হয়
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো ২. 'ইয়া'>'এ' বিভক্তিযুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার ক) অনন্তরতা বা পর্যায় বোঝাতে : হাত-মুখ ধুয়ে পড়তে বস। খ) হেতু অর্থে : ছেলেটি কুসঙ্গে মিশে নষ্ট হয়ে গেল। গ) ক্রিয়া বিশেষণ অর্থে: চেঁচিয়ে কথা বলো না। ঘ) ক্রিয়ার অবিচ্ছিন্নতা বোঝাতে: হৃদয়ের কথা কহিয়া কহিয়া গাহিয়া গান। ঙ) ভাববাচক বিশেষ্য গঠনে : সেখানে আর গিয়ে কাজ নাই। চ) অব্যয় পদেও অনুরূপ : ঢাকা গিয়ে বাড়ি যাব। ৩. 'ইতে'>'তে' বিভক্তিযুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার ক) ইচ্ছা প্রকাশে : এখন আমি যেতে চাই। খ) উদ্দেশ্য বা নিমিত্ত অর্থে : মেলা দেখতে ঢাকা যাব। গ) সামর্থ্য বোঝাতে: খোকা এখন হাঁটতে পারে। ঘ) বিধি বোঝাতে : বাল্যকালে বিদ্যাভ্যাস করতে হয়। ঙ) দেখা বা জানা অর্থে: রমলা গাইতে জানে। চ) আবশ্যকতা বোঝাতে: এখন ট্রেন ধরতে হবে। ছ) সূচনা বোঝাতে: রানি এখন ইংরেজি পড়তে শিখেছে। জ) বিশেষণবাচকতায়: লোকটাকে দৌড়াতে দেখলাম। ঝ) ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য গঠনে : তোমাকে তো এ গ্রামে থাকতে দেখিনি। ঞ) অনুসর্গরূপে: কোন দেশেতে তরুলতা সকল দেশের চাইতে শ্যামল। ট) বিশেষ্যের সঙ্গে অন্বয় সাধনে: দেখিতে বাসনা মাগো তোমার চরণ। ঠ) বিশেষণের সঙ্গে অন্বয় সাধনে: পদ্মফুল দেখতে সুন্দর। ৪. 'ইতে'>'তে' বিভক্তিযুক্ত ক্রিয়ার দ্বিত্ব প্রয়োগ ক) নিরন্তরতা প্রকাশে : কাটিতে কাটিতে ধান এলো বরষা। খ) সমকাল বোঝাতে : সেঁউতিতে পদ দেবী রাখিতে রাখিতে। সেঁউতি হইল সোনা দেখিতে দেখিতে। টীকা : রীতিসিদ্ধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে সমাপিকা ক্রিয়া অনুপস্থিত থেকে অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহারে বাক্য গঠিত হতে পারে। যেমন : গরু মেরে জুতা দান। আঙুল ফুলে কলা গাছ। সকর্মক ক্রিয়া যে ক্রিয়ার কর্মপদ আছে তাই সকর্মক ক্রিয়া। ক্রিয়ার সঙ্গে কী বা কাকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই ক্রিয়ার কর্মপদ। কর্মপদযুক্ত ক্রিয়াই সকর্মক ক্রিয়া। যেমন : বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন। প্রশ্ন : কী দিয়েছেন? উত্তর : কলম (কর্মপদ) প্রশ্ন : কাকে দিয়েছেন? উত্তর : আমাকে (কর্মপদ) 'দিয়েছেন' ক্রিয়াপদটির কর্মপদ থাকায় এটি সকর্মক ক্রিয়া। অকর্মক ক্রিয়া যে ক্রিয়ার কর্ম নাই, তা অকর্মক ক্রিয়া। যেমন : মেয়েটি হাসে। 'কী হাসে' বা 'কাকে হাসে' প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর হয় না। কাজেই 'হাসে' ক্রিয়াটি অকর্মক ক্রিয়া। দ্বিকর্মক ক্রিয়া যে ক্রিয়ার দুটি কর্মপদ থাকে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। দ্বিকর্মক ক্রিয়ার বস্তুবাচক কর্মপদটিকে মুখ্য বা প্রধান কর্ম এবং ব্যক্তিবাচক কর্মপদটিকে গৌণকর্ম বলে। বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন বাক্যে 'কলম' (বস্তু) মুখ্যকর্ম এবং 'আমাকে' (ব্যক্তি) গৌণকর্ম। সমধাতুজ কর্ম বাক্যের ক্রিয়া ও কর্মপদ একই ধাতু থেকে গঠিত হলে ওই কর্মপদকে সমধাতুজ কর্ম বা ধাত্বর্থক কর্মপদ বলে। যেমন : আর কত খেলা খেলবে। মূল 'খেলা' ধাতু থেকে ক্রিয়াপদ 'খেলবে' এবং কর্মপদ 'খেলা' উভয়ই গঠিত হয়েছে। তাই 'খেলা' পদটি সমধাতুজ বা ধাত্বর্থক কর্ম। সমধাতুজ কর্মপদ অকর্মক ক্রিয়াকে সকর্মক করে। যেমন : এমন সুখের মরণ কে মরতে পারে? বেশ এক ঘুম ঘুমিয়েছি। আর মায়াকান্না কেঁদো না গো বাপু। সকর্মক ক্রিয়ার অকর্মক রূপ প্রয়োগবৈশিষ্ট্যে সকর্মক ক্রিয়াও অকর্মক হতে পারে। যেমন : \হঅকর্মক সকর্মক আমি চোখে দেখি না। আকাশে চাঁদ দেখি না। ছেলেটা কানে শোনে না। ছেলেটা কথা শোনে। আমি রাতে খাব না। আমি রাতে ভাত খাব না। অন্ধকারে আমার খুব ভয় করে। বাবাকে আমার খুব ভয় করে। প্রযোজক ক্রিয়া যে ক্রিয়া একজনের প্রযোজনা বা চালনায় অন্যজন কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয় সেই ক্রিয়াকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। সংস্কৃত ব্যাকরণে একে ণিজন্ত ক্রিয়া বলা হয়। প্রযোজক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া প্রযোজনা করে তাকে প্রযোজক কর্তা বলে।