এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি বাংলা দ্বিতীয় পত্র
প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
মো. ইমরান হোসেন, সহকারী শিক্ষক ইস্টার্ন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দনিয়া, ঢাকা
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো
৮. উঠ্-ধাতু
ক) ক্রমান্বয়তা বোঝাতে : ঋণের বোঝা ভারী হয়ে উঠছে।
খ) অভ্যাস অর্থে : শুধু শুধু তিনি রেগে ওঠেন।
গ) আকস্মিকতা অর্থে : সে হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল।
ঘ) সম্ভাবনা অর্থে : আমার আর থাকা হয়ে উঠল না।
ঙ. সামর্থ্য অর্থে : এসব কথা আমার সহ্য হয়ে ওঠে না।
৯. লাগ্-ধাতু
ক) অবিরাম অর্থে : খোকা কাঁদতে লাগল।
খ) সূচনা নির্দেশে : এখন কাজে লাগ তো দেখি।
১০. থাক্-ধাতু
ক) নিরন্তরতা অর্থে : এবার ভাবতে থাক।
খ) সম্ভাবনায় : তিনি হয়তো বলে থাকবেন।
গ) সন্দেহ প্রকাশে : সে-ই কাজটা করে থাকবে।
ঘ) নির্দেশে : আর দরকার নাই, এবার বসে থাক।
মিশ্র ক্রিয়া
বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে র্ক, হ্, দে, পা, যা, কা্, গা, ছাড়, র্ধ, র্মা, প্রভৃতি ধাতুযোগে গঠিত ক্রিয়াপদ বিশেষ বিশেষ অর্থে মিশ্র ক্রিয়া গঠন করে। যেমন :
ক) বিশেষ্যের উত্তর (পরে) : আমরা তাজমহল দর্শন করলাম। এখন গোলস্নায় যাও।
খ) বিশেষণের উত্তর (পরে) : তোমাকে দেখে বিশেষ প্রীত হলাম।
গ) ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের উত্তর (পরে) : মাথা ঝিমঝিম করছে। ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে।
ক্রিয়ার ভাব/গড়ড়ফ ও ক্রিয়ার প্রকরণ
১. সূর্য অস্ত যাচ্ছে।
২. এখন বাড়ি যাও।
৩. সে পড়লে পাস করত।
৪. তোমার কল্যাণ হোক।
ওপরের বাক্যগুলোতে ক্রিয়া সংঘটিত হওয়ার বিভিন্ন রীতি প্রকাশ পেয়েছে। ক্রিয়ার যে অবস্থার দ্বারা তা ঘটার ধরন বা রীতি প্রকাশ পায় তাকে ক্রিয়ার ভাব বলে।
ক্রিয়ার ভাব চার প্রকার। যেমন :
১. নির্দেশক ভাব/ওহফরপধঃরাব গড়ড়ফ
২. অনুজ্ঞা ভাব/ওসঢ়বৎধঃরাব গড়ড়ফ
৩. সাপেক্ষ ভাব/ঝঁনলঁহপঃরাব গড়ড়ফ
৪. আকাঙ্ক্ষা প্রকাশক ভাব/ঙঢ়ঃধঃরাব গড়ড়ফ
নির্দেশক ভাব
সাধারণ ঘটনা নির্দেশ করলে বা কিছু জিজ্ঞাসা করলে ক্রিয়াপদের নির্দেশক ভাব হয়। যেমন :
ক) সাধারণ নির্দেশক : আমরা বই পড়ি। তারা বাড়ি যাবে।
খ) প্রশ্ন জিজ্ঞাসায়: আপনি কি আসবেন? সে কি গিয়েছিল?
অনুজ্ঞা ভাব
আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, অনুরোধ, আশীর্বাদ ইত্যাদি সূচিত হলে ক্রিয়াপদের অনুজ্ঞা ভাব হয়। যেমন :
ক) আদেশাত্মক
বর্তমান কালে - চুপ কর।
ভবিষ্যৎ কালে - তুমি কাল যেও।
খ) নিষেধাত্মক
বর্তমান কালে - অন্যায় কাজ করো না।
ভবিষ্যৎ কালে - মিথ্যা বলবে না।
গ) অনুরোধসূচক
বর্তমান কালে - ছাতাটা দিন তো ভাই।
ভবিষ্যৎ কালে - আপনারা আসবেন।
ঘ) উপদেশাত্মক
বর্তমান কালে - মন দিয়ে পড়।
ভবিষ্যৎ কালে - স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি রেখো।
সাপেক্ষ ভাব
একটি ক্রিয়ার সংঘটন অন্য একটি ক্রিয়ার ওপর নির্ভর করলে, নির্ভরশীল ক্রিয়াকে সাপেক্ষ ভাব ক্রিয়া বলা হয়। যেমন :
ক) সম্ভাবনায় : তিনি ফিরে এলে সবকিছুর মীমাংসা হবে। যদি সে পড়ত তবে পাস করত।
খ) উদ্দেশ্য বোঝাতে : ভালো করে পড়লে সফল হবে।
গ) ইচ্ছা বা কামনায়: আজ বাবা বেঁচে থাকলে আমার এত কষ্ট হতো না।
আকাঙ্ক্ষা প্রকাশক ভাব
যে ক্রিয়াপদে বক্তা সোজাসুঝি কোনো ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে তাকে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশক ভাবের ক্রিয়া বলা হয়। যেমন : সে যাক। যা হয় হোক। সে একটু হাসুক। বৃষ্টি আসে আসুক। তার মঙ্গল হোক।
কাল
ক্রিয়া সংঘটনের সময়কে কাল বলে।
১. আমরা বই পড়ি। 'পড়া' ক্রিয়াটি এখন অর্থাৎ বর্তমানে সংঘটিত হচ্ছে।
২. কাল তুমি শহরে গিয়েছিলে। 'যাওয়া' ক্রিয়াটি আগে অর্থাৎ অতীতে সম্পন্ন হয়েছে।
৩. আগামীকাল স্কুল বন্ধ থাকবে। 'বন্ধ থাকা' কাজটি পরে বা ভবিষ্যতে সম্পন্ন হবে।
সুতরাং বলা যায়, ক্রিয়া বর্তমান, অতীত বা ভবিষ্যতে সম্পন্ন হওয়ার সময় নির্দেশই ক্রিয়ার কাল।
কালের প্রকরণ
এ হিসেবে ক্রিয়ার কাল প্রধানত তিন প্রকার : বর্তমান কাল, অতীত কাল ও ভবিষ্যৎ কাল
ক্রিয়াপদ : ক্রিয়ামূল অর্থাৎ ধাতুর সঙ্গে কাল সময় ও পুরুষ জ্ঞাপক (ক্রিয়া) বিভক্তিযোগে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়।
ক) পুরুষভেদে ক্রিয়ার রূপের পার্থক্য দেখা যায়। যেমন : আমি যাই। তুমি যাও। আপনি যান। সে যায়। তিনি যান।
(সাধারণ ভবিষ্যৎ কালে নাম পুরুষ ও মধ্যম পুরুষের ক্রিয়ার রূপ অভিন্ন)
খ) বচনভেদে ক্রিয়ার রূপের কোনো পার্থক্য হয় না। যেমন : আমি (বা আমরা) যাই। তুমি (বা তোমরা) যাও।
আপনি (বা আপনারা) যান। সে (বা তারা) যায়। তিনি (বা তারা) যান।
গ) সাধারণ, সম্ভ্রমাত্মক, তুচ্ছার্থকভেদে মধ্যম ও নাম পুরুষের ক্রিয়ার রূপের পার্থক্য হয়ে থাকে। (উত্তম পুরুষে হয় না)
ক্রিয়া সংঘটনের প্রধান কাল বর্তমান, অতীত ও ভবিষ্যৎকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় :
১. বর্তমান কাল : ক) সাধারণ/নিত্যবৃত্ত বর্তমান খ) ঘটমান বর্তমান : গ) পুরাঘটিত বর্তমান
২. অতীত কাল : ক) সাধারণ অতীত
খ) নিত্যবৃত্ত অতীত : গ) ঘটমান অতীত
৩. ভবিষ্যৎ কাল : ক) সাধারণ ভবিষ্যৎ
খ) নিত্যবৃত্ত ভবিষ্যৎ : গ) ঘটমান ভবিষ্যৎ
ঘ) পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ