বিজ্ঞানের যত কথা কম্পিউটার

প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
কম্পিউটার হলো এমন একটি যন্ত্র যা সুনির্দিষ্ট নির্দেশ অনুসরণ করে গাণিতিক গণনাসংক্রান্ত কাজ খুব দ্রম্নত করতে পারে। কম্পিউটার (পড়সঢ়ঁঃবৎ) শব্দটি গ্রিক 'কম্পিউট' (পড়সঢ়ঁঃব) শব্দ থেকে এসেছে। পড়সঢ়ঁঃব শব্দের অর্থ হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার (পড়সঢ়ঁঃবৎ) শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। কিন্তু এখন আর কম্পিউটারকে শুধু গণনাকারী যন্ত্র বলা যায় না। কম্পিউটার এমন এক যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করে। সভ্যতার বিকাশ এবং বর্তমানে তার দ্রম্নত অগ্রগতির মূলে রয়েছে গণিত ও কম্পিউটারের প্রভাব। বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার আসে ১৯৬৪ সালে। কম্পিউটার সিস্টেমের উপাদানগুলো হলো- হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, হিউম্যানওয়্যার বা ব্যবহারকারী, ডেটা বা ইনফরমেশন। ইতিহাস: প্রাচীনকালে মানুষ সংখ্যা বোঝানোর জন্য ঝিনুক, নুড়ি, দড়ির গিট ইত্যাদি ব্যবহার করত। পরে গণনার কাজে বিভিন্ন কৌশল ও যন্ত্র ব্যবহার করে থাকলেও অ্যাবাকাস (অনধপঁং) নামক একটি প্রাচীন গণনা যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। এটি আবিষ্কৃত হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২৪০০ সালে ব্যাবিলনে। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০-৫০০ অব্দে মিশরে বা চীনে গণনা যন্ত্র হিসেবে অ্যাবাকাস তৈরি হয়। ঊনিশ শতকের শুরুর দিকে আধুনিক একটি যন্ত্রের নির্মাণ ও ব্যবহারের ধারণা প্রথম সোচ্চারভাবে প্রচার করেন চার্লস ব্যাবেজ। তিনি এটির নাম দেন ডিফারেন্স ইঞ্জিন (উরভভবৎবহপব ঊহমরহব)। এই ডিফারেন্স ইঞ্জিন নিয়ে কাজ করার সময় (১৮৩৩ সালে) তিনি অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে আরও উন্নত ও সর্বজনীন একটি যন্ত্রের ধারণা লাভ করেন। কম্পিউটার বিজ্ঞানের সত্যিকার সূচনা হয় অ্যালান টুরিং এর প্রথমে তাত্ত্বিক ও পরে ব্যবহারিক গবেষণার মাধ্যমে। বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবনের ফলে মাইক্রো কম্পিউটারের দ্রম্নত বিকাশ ঘটতে থাকে। বাজারে প্রচলিত হয় বিভিন্ন প্রকৃতি ও আকারের কম মূল্যের অনেক রকম পার্সোনাল কম্পিউটার (চবৎংড়হধষ ঈড়সঢ়ঁঃবৎ) বা পিসি (চঈ)। সে সঙ্গে উদ্ভাবিত হয়েছে অনেক রকম অপারেটিং সিস্টেম, প্রোগ্রামের ভাষা, অগণিত ব্যবহারিক প্যাকেজ প্রোগ্রাম। এর সঙ্গে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের এবং সংশ্লিষ্ট সেবা ও পরিসেবার। কম্পিউটার শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ও সম্প্রসারিত হয়েছে অসংখ্য প্রাতিষ্ঠানিকও অপ্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটার শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিককালে কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি (ওহভড়ৎসধঃরড়হ ঞবপযহড়ষড়মু) বা আইটি (ওঞ) ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরাট অংশ দখল করেছে এবং কর্মসংস্থান হয়ে পড়েছে অনেকাংশেই কম্পিউটারনির্ভর। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেল করপোরেশন ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবন করার পর থেকে বাজারে আসতে শুরু করে মাইক্রোপ্রসেসরভিত্তিক কম্পিউটার। ১৯৮১ সালে বাজারে আসে আইবিএম কোম্পানির পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি। এরপর একের পর এক উদ্ভাবিত হতে থাকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর এবং তৈরি হতে থাকে শক্তিশালী পিসি। কম্পিউটারের প্রকার : কম্পিউটারের গঠন ও প্রচলন নীতির ভিত্তিতে একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- অ্যানালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার, হাইব্রিড কম্পিউটার। আকার, সামর্থ্য, দাম ও ব্যবহারের গুরুত্বের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটারকে আবার চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- মাইক্রোকম্পিউটার, মিনি কম্পিউটার, মেইনফ্রেম কম্পিউটার, সুপার কম্পিউটার মাইক্রো কম্পিউটারগুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ। ব্যবহার: ঘরের কাজ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক, বৈজ্ঞানিক ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে এর অপরিসীম ব্যবহার রয়েছে। সর্বোপরি যোগাযোগ ক্ষেত্রে এটি এনেছে অনন্য বিপস্নব। চিকিৎসা ও মানবকল্যাণেও এটি এক অনন্য সঙ্গী। এক কথায় কম্পিউটার এমন এক যন্ত্র যা প্রায় সব কাজ করতে সক্ষম। জিআইএস কম্পিউটার : এওঝ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। এ প্রযুক্তিতে কম্পিউটারের সাহায্যে মানচিত্রে বিভিন্ন তথ্য যুক্ত করা হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার: মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে শ্রেণিতে পাঠদানের ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার রয়েছে, এ ছাড়া ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে মাইক্রোসফট এক্সেল ব্যবহৃত হয়।