ঈদ কে কোথায় কীভাবে করবেন?

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২০, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
দেখতে দেখতে ঈদ আমাদের একদম দ্বারপ্রান্তে। আজ চাঁদ উঠলেই কাল ঈদ। কিন্তু ঈদ যেন এবার হাজির হচ্ছে নতুন এক রূপে। আনন্দের পরিবর্তে যেন আতঙ্কের বারতা নিয়ে আসছে ঈদ। এ কারণে ঈদ নিয়ে কোনো আয়োজন নেই সাধারণ মানুষের মধ্যে। আহামরি কোনো পরিকল্পনা নেই শোবিজ জগতের তারকাদের মধ্যেও। চলুন জেনে নেওয়া যাক, করোনাকালীন এ ঈদে কে, কী করবেন- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সাদিকা পারভীন পপি। দীর্ঘ ২৫ বছর পর এবার তার গ্রামের বাড়ি খুলনায় ঈদ করছেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে গ্রামের বাড়িতে গেলেও লকডাউনের জেরে ঢাকা ফিরতে পারেননি পপি। তিনি বলেন, দেখতে দেখতে ২৫ বছর হয়ে গেল, টের পেলাম না। ক্যারিয়ারের জন্য সেই যে ঢাকা গিয়েছি, এরপর গ্রামের বাড়িতে রোজা ও ঈদ করা হয়নি। এবার করছি। বাবা-মা, ভাই-বোন, চাচা-চাচি ও ফুফা-ফুফুদের সঙ্গে এবারের ঈদটা আমার অন্যরকম কাটবে। এটাও জানি, এবারের ঈদ অনেকের জন্যই কষ্টের হবে। তারপরও কষ্টের মধ্যেই আমাদের ঈদ উদযাপন করতে হবে। সামর্থ্য অনুযায়ী যার যার পাশের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। এবারের ঈদ যাপন নিয়ে বড় পর্দার এই গস্নামারাস গার্ল যায়যায়দিনকে বলেন, 'এমনিতেও ঈদের দিন ঘরেই থাকা হয়। সব সময় চাই, এ দিনটিকে চাই স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে একান্তভাবে কাটাতে। কখনো কখনো বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও এবার সেসব নেই। পরিস্থিতি যা, তাতে ঘরে থাকাটাই উত্তম। তাই ঘরোয়া আয়োজনের মধ্যে এবারের ঈদটা কাটাতে চাই।' ঈদে একটি চলচ্চিত্রও মুক্তি না পাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন পূর্ণিমা। তিনি বলেন, 'আগে তো জীবন, তারপর বিনোদন। জীবন যেখানে প্রায় অস্বাভাবিক হয়ে গেছে, সেখানে মানুষ কীভাবে বিনোদন খুঁজবে। যদিও ঘরবন্দিতে মানুষ বাধ্য হয়ে সময় কাটাতে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে বিনোদন নিচ্ছেন। পুরানো নাটক-সিনেমা দেখছেন। আমিও আমার অভিনীত বেশকিছু পুরানো নাটক দেখেছি। তাই এবারের ঈদে কোনো চলচ্চিত্র মুক্তি না পাওয়ায় আমার খারাপ লাগছে না।' অন্যসব বারের মতো এবারও ঈদের সকালে ঘুম থেকে উঠে মাকে রান্নায় সহায়তা করবেন ছোট পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। তবে এবারের ঈদ উৎযাপনের তালিকায় নেই বাইরে যাওয়ার শিডিউল। মৌসুমী হামিদ বলেন, 'অন্যান্য ঈদে সকালটা বাড়িতে থাকলেও বিকালে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হই। এবারের ঈদে সেসবের বালাইও নেই। আয়োজন যা হওয়ার ঘরেই হবে। এছাড়া বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলব।' করোনা শুধু যাপিত জীবনেই পরিবর্তন আনেনি, পাল্টে দিয়েছে টেলিভিশনের প্রচারসূচিও। এ বিষয়েও কথা বলেন মৌসুমী হামিদ। তিনি বলেন, 'গত বছর অনেক ঈদ নাটকে আমাকে দেখা গিয়েছিল। এবারও দেখা যাবে, তবে সংখ্যাটা কম। তাছাড়া এবার বেশিরভাগ নাটকই পুরানো। শুটিং না হওয়ার কারণে নতুন নাটকের সংকটে বাধ্য হয়ে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' ছোটপর্দার প্রতিশ্রম্নতিশীল আরেক অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান। দুই মাসের বেশি সময় ধরে আছেন ঘরবন্দি অবস্থায়। জোভান অভিনীত বেশ কয়েকটি নাটক এবার ঈদে প্রচারিত হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন চ্যানেলে নাটকের প্রমো চলছে। যদিও এর বেশিরভাগ কাজই বছরের শুরুর দিকে করা। মাঝের পুরোটা সময়ই ছিলেন ঘরবন্দি। বললেন, এবারের ঈদ নিয়ে তার একদমই পরিকল্পনা নেই। অন্যবার তো চাঁদরাত থেকেই একটা পার্টি মুডে থাকা হয় তার। এবার সেসব কিছু হবে না বলেও জানান এ অভিনেতা।' অভিনেত্রী সাফা কবিরের একই দশা। ঈদ নিয়ে আহামরি কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে ঈদের দিন পছন্দের কয়েক পদ রান্না করবেন বলে ভেবে রেখেছেন তিনি। বাবা থাকেন জামার্নি। তার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হবে। এছাড়া একই বিল্ডিংয়ে থাকে সব কাজিন। ফলে আড্ডা তো হবেই। এরপরও আক্ষেপ, ঈদের দিন বাইরে যাওয়া হবে না। সাফা বলেন, 'এবার না হয় ঈদ ঘরে বসেই করলাম। সমস্যা নেই। আগে পরিস্থিতি ঠিক হোক। হইচই করে ঈদ উদযাপন তো সামনের বারও করা যাবে।' গিটারে টুংটাং আর হালকা গলায় গুনগুনে গান গেয়েই লকডাউনের সময় পার করছেন ছোট পর্দার অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ। অন্যসময় ঈদের এক-দুদিন আগেই বাড়ি ছুটে যান মায়ের কাছে, চট্টগ্রামে। কয়েকটা দিন কাটান আপন পরিবেশে। কিন্তু এবার সেসব হচ্ছে না। ইরফান সাজ্জাদ বলেন, 'পরিস্থিতি এমন যে ঈদের দিনটিকেও আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই। কয়েকদিন ধরে যা করছি তাই করব, বিশেষ কিছু না। হয়তো ফোনে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাব। এই আরকি।' অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু অন্যবারের মতো এবারও ঈদ কাটাবেন ঢাকায়। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্ণীপুর হলেও সেখানে কখনোই ঈদ করা হয় না এ তারকার। সাধারণত ঈদের দিন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ও আত্মীয়দের বাসায় যান এ অভিনেত্রী। তবে এবার ঘরেই থাকছেন তিনি। বলেন, 'এবার ঘরবন্দি ঈদ উৎযাপন করব। সবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলা ছাড়া উপায় নেই। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাদের সচেতন না হলেই বিপদ।' বিয়ের পর প্রথম ঈদ মুমতাহিনা টয়া ও শাওনের। লকডাউনের আগে দেশীয় হানিমুন কাটালেও অপেক্ষায় ছিলেন ঈদের ছুটিতে বিদেশ যাবেন একান্ত কিছু সময় কাটাতে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সেসব আর হলো কই। টানা কয়েক মাস ধরে ঘরবন্দি নয়া তারকা দম্পতি। তবে বিয়ের পর প্রথম ঈদ নিয়ে অনেক পরিকল্পনা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে আপতত সব স্থগিত বলেই জানিয়েছেন টয়া। জানিয়েছেন, এবারের ঈদ ঘরেই কাটছে তাদের।