আড়াই মাস পর সরব হচ্ছে টেলিপাড়া

প্রকাশ | ৩০ মে ২০২০, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
নির্মাণাধীন একটি নাটকের দৃশ্যে অপূর্ব ও মেহজাবিন
অনেক নাটকীয়তা এবং কাদা ছোড়াছুড়ির পর অবশেষে আবার শুটিং শুরু হচ্ছে টিভি নাটকের। স্বাস্থ্য বিধি মেনে আড়াই মাস পর ১ জুন থেকে আন্তঃসংগঠনের বেঁধে দেওয়া চার শর্তে শুটিং করতে পারবেন নির্মাতা-অভিনয়শিল্পীরা। বৃহস্পতিবার নাটকের আন্তঃসংগঠনগুলো শর্ত সাপেক্ষে শুটিং করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিনের কর্মবিরতি ভাঙছে ছোট পর্দা সংশ্লিষ্টদের। প্রাণ ফিরে আসছে টেলিপাড়ায়। এর আগেও ১৭ মে ৬ শর্তে নিজ দায়িত্বে টিভি নাটকের শুটিং শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টিভি নাটকের শীর্ষ সংগঠনগুলো। যদিও শুটিং শুরুর একদিন পরই নিজেদের মধ্যে মতের মিল না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা। এর জের ধরে টিভি মিডিয়ার অন্যতম সংগঠন 'টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ' সভাপতি অভিনেতা ইরেশ জাকের ও সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা সাজু মুনতাসির পদত্যাগ করেন। জাহিদ হাসান ও শহিদুজ্জামান সেলিমের মতো অভিনেতাদের নিয়ম ভেঙে শুটিং করা, তাদের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্তে না পৌঁছাতে পারা এবং নাটকের শুটিং শিথিলতা মেনে নিতে না পেরে সংগঠনের প্রধান দুই নেতা পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এখানেই শেষ নয়। ঈদের আগ মুহূর্তে হঠকারী এমন সিদ্ধান্তে বেঁকে বসেন এ সময়ের চাহিদাসম্পন্ন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী। মেহজাবীন চৌধুরী, আফরান নিশো, জিয়াউল হক অপূর্ব, সাফা কবির, জোভান আহমেদ, মৌসুমি হামিদ ও জাকিয়া বারী মমর অভিনয় শিল্পীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের রোষের মুখে পরতে হয় সংগঠনগুলোকে। বাধ্য হয়ে একদিন পরই সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলে আন্তঃগঠনগুলো। তবে সরকারের সীমিত আকারে সব কিছু চালু করার সিদ্ধান্তের পর বৃহস্পতিবার টিভি নাটকের শীর্ষ সংগঠনের প্রতিনিধিরা জরুরি সভায় বসেন। এতে আবারও শুটিং করার বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তারা। সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় চারটি শর্ত। এগুলো হলো- ১. করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ অবস্থা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আন্তঃসংগঠন ও শুটিং করার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করছেন। তবে যাদের কাজ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে তারা সাময়িকভাবে জীবন-জীবিকা চলমান রাখার স্বার্থে আন্তঃসংগঠনের দেওয়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে যদি কেউ শুটিং কার্যক্রমে নিজ দায়িত্বে অংশ নিতে চান তাহলে তিনি তা করতে পারবেন। ২. সংশ্লিষ্ট ইউনিট শুটিং শুরু করার আগেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শুটিং কার্যক্রম শুরু করবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট শুটিং ইউনিটকে তার সম্পূর্ণ দায় বহন করতে হবে। ৩. প্রতিটি শুটিং ইউনিটের শিল্পী-কলাকুশলী প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখবেন। সমস্যা দেখা দিলে প্রযোজনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সহায়তা নিয়ে তারা তা নিজ উদ্যোগে সমাধান করবেন। ৪. এই ঘোষণা সরকারের ছুটি ও লকডাউন বিষয়ক ঘোষণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পরিস্থিতি বিবেচনায় শুটিং কার্যক্রম যে কোনো সময় স্থগিত অথবা সম্পূর্ণভাবে বাতিল হতে পারে। উলেস্ন্যখ, করোনাভাইরাসের কারণে ১৮ মার্চ রাতে সব ধরনের শুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় নাটক সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল শুটিং। তবে ঈদের আগ মুহূর্তে বেশ কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও একটি ওয়েব সিরিজ নির্মাণ হয়েছে বিকল্প উপায়ে। নিজ নিজ বাসা থেকে নিজের অংশটুকু অভিনয় করে সুপারহিট সিনেমা 'আয়নাবাজি'র আদলে নির্মিত হয়েছে একটি ওয়েব সিরিজ। এতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাবিলা ও পার্থ বড়ুয়া। একই পদ্ধতিতে 'ওয়েটিং' নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী ও আফরান নিশো। এগুলো প্রচারিত হওয়ার পর দর্শকের কাছে বেশ সাড়াও ফেলেছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিনিয়র দুই অভিনেতা জাহিদ হাসান ও শহিদুজ্জামান সেলিমের ইউনিটসহ অভিনয় করা নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছিল শিল্পী সংঘ।