শোবিজে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২০, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
শুটিং ফেলে হোম কোয়ারেন্টিনে চলে গেলেন অপূর্ব-মেহজাবিন
মরণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবা এখন সব মহলেই ছড়িয়ে পড়েছে। রেহাই পাচ্ছে না দেশীয় শোবিজ অঙ্গনও। যদিও অনেক আগেই শোবিজে করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাসায়ও ফিরেছেন কেউ কেউ। যদিও সেলিব্রেটিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতু্যবরণ কেেরননি, কিন্তু যত সময় যাচ্ছে ততই নতুন নতুন তারকার আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সে সঙ্গে বাড়ছে আতঙ্কও। সম্প্রতি শর্তসাপেক্ষে শুটিং শুরু হওয়ায় এই আতঙ্ক আরও তীব্র আকার ধারণ করছে শিল্পী ও কলাকুশলীদের মনে। এরই মধ্যে অনেক তারকাই করোনার ভয়ে শুটিং ফেলে বাসায় ফিরে এসেছেন। সর্বশেষ গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শুটিং ফেলে হোম কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন সময়ের সবচেয়ে শীর্ষ চাহিদাসম্পন্ন টিভি তারকা জুটি অপূর্ব ও মেহজাবিন। এতদিন তারা করোনার কারণে শুটিং না করার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। কেবলমাত্র নির্মাতাদের একান্ত অনুরোধেই তারা শুটিং করতে রাজি হন। কিন্তু শুরুতেই বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হয় এ দুই তারকাকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুটিং ইউনিটের দুজনের কোভিড ১৯ পজিটিভ আসায় কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন অপূর্ব-মেহজাবিনসহ নাটকটির পরিচালকসহ অন্যরা। ঢাকাই শোবিজে প্রথম করোনা আক্রান্ত হন এক নাট্যনির্মাতা। দুর্যোগের প্রথম দিকে খবরটি নিশ্চিত করেন নাট্য নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহ্‌উদ্দীন লাভলু ও সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক। তবে তারা আক্রান্ত ওই নির্মাতার নাম প্রকাশ করেননি। জানা গেছে, বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন কণ্ঠশিল্পী শিল্পী সেলিম চৌধুরী। ৮ জুলাই হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তিনি এখন কিছুটা ভালো বোধ করছেন। সেলিম চৌধুরী কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর গত শনিবার করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। তারপর সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পর সেদিনই কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে রিপোর্ট পান তিনি। আক্রান্ত হওয়ার আগে তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরে ছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গেছে, তিনি হাসপাতালের কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য বিশেষায়িত অংশে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে। এর আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। তবে তিনি এখন বেশ সুস্থ রয়েছেন। তিনি বলেন, '১২ জুন আমি করোনায় আক্রান্ত হই। এরপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসায় থাকছি এবং আক্রান্তের তিন থেকে চারদিন পরই শারীরিকভাবে সুস্থতাবোধ করি। এখন আর কোনো ধরনের করোনা উপসর্গ আমার মধ্যে নেই। আমি এখন বেশ ভালো আছি। সংশয়মুক্ত, ভয়টা কেটে গেছে।' করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেতা খন্দকার লেনিন। যিনি ম্যাজিক টুথপেস্টের বিজ্ঞাপনচিত্র 'আমার নাম মফিজ ভাড়া হইল তিরিশ' সংলাপ দিয়ে আলোচনায় আসেন। গত ৭ জুলাই দুপুরে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে নিজের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর সবাইকে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন গানবাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী কৌশিক হোসেন তাপস ও টেলিভিশনটির চেয়ারপার্সন ফারজানা মুন্নী। বর্তমানে তারা দু'জনই সুস্থ আছেন। ২৮ জুন রাতে তাপস নিজের ফেসবুক পেজে করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন আর্থ্রাইটিসে। হাঁটুর ব্যথার কারণে ঘর থেকে বেরও হন না। এর মধ্যে জানা গেল, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেতা প্রবীর মিত্র। করোনা পরীক্ষার ফল হাতে পাওয়ামাত্র দ্রম্নত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৭ জুলাই সেগুনবাগিচার বাসায় ফিরেছেন তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় এই অভিনেতা মানসিকভাবে প্রচন্ড সাহসী ছিলেন। করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসায় তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান বরেণ্য এই অভিনয় শিল্পীর পুত্রবধূ সোনিয়া ইয়াসমিন। চলচ্চিত্রের প্রবীণ অভিনেতা প্রবীর মিত্র গেল মাসের শেষ সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হন। পরিবারের সদস্যরা চাইছিলেন না জানাজানি হোক। করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ জানা যাওয়ামাত্র পান্থপথের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। কয়েক দিন আগে আরেকটি পরীক্ষায় পজিটিভ ফল এলেও শেষ পাওয়া ফল ছিল নেগেটিভ। ১৪ জুলাই আরেক দফা পরীক্ষা করা হবে বলে জানালেন পুত্রবধূ। ৭৭ বছর বয়সি চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী প্রবীর মিত্র শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল থাকলেও এখন সুস্থ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক এস কে সমীর। গত ১৮ ও ২২ জুন পরপর দুইবার করোনা টেস্টে তার রেজাল্ট নেগেটিভ আসে। এর আগে গত ৩ জুন নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়। এস কে সমীর বলেন, 'আলস্নাহ আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় ও আপনাদের দোয়ায় আমি নতুন জীবন পেয়েছি। এখন ভালো আছি। ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে নিজ ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। ফলে পরিবার ও প্রতিবেশীদের জন্য ক্ষতির কারণ হইনি।'