প্রশ্নের মুখে জায়েদ খান

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
জায়েদ খান
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক ও প্রযোজক জায়েদ খানকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা থামছেই না। সাম্প্রতিক বেশ কিছু কর্মকান্ডে তাকে নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি সংগঠনের স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শনোর নোটিশ পর্যন্ত দিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি। তাছাড়া শিল্পীদের সঙ্গে জায়েদ খানের প্রকাশ্য বাকবিতন্ডার খবরে বিব্রত চলচ্চিত্র সংগঠনগুলো। ফলে করোনা মহামারিতে দুস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর মতো প্রশংসনীয় কাজও ফিকে হয়ে যাচ্ছে তার- এসব কর্মকান্ডে। এদিকে সোমবার জায়েদ খানকে কারণ দর্শনোর নোটিশ পাঠিয়েছে প্রযোজক সমিতি। প্রযোজক সমিতির দাবি, সংগঠনের স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডের সঙ্গে তার জড়িত থাকার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেন, 'সংগঠনের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায়' সমিতির সংঘবিধি মোতাবেক গত ৭ মার্চ কার্যনির্বাহী পরিষদের ৭ম সভায় তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয়েছে। একই কথা জানিয়েছেন প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম। তিনি বলেন, 'চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা আনতে ও নির্মাণ ব্যয় কমিয়ে কাজের গতি বাড়াতে গত বছরের অক্টোবরে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের সমন্বয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এটি বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাণে নূ্যনতম ১৫ লাখ টাকা ব্যয় কমে আসবে। বিষয়টি গণমাধ্যমেও প্রকাশ হয় এবং বেশ প্রশংসিত হয় এ উদ্যোগ।' তিনি আরও বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ এই উদ্যোগটি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন জায়েদ খান। তার বিরুদ্ধে এ নীতিমালা না মানতে শিল্পীদের ক্ষুদেবার্তা পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রযোজক সমিতির সদস্য হয়েও তার এমন কর্মকান্ড প্রযোজক সমিতির স্বার্থের পরিপন্থি। ঘটনার ব্যাখ্যা তার কাছে চাওয়া হয়েছে। আশা করছি তিনি সঠিক ব্যাখ্যা দিয়ে সমিতিকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন।' এরমধ্যেই গুঞ্জন উঠেছে প্রযোজক সমিতি থেকে জায়েদ খানের সদস্য পদ বাতিল হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শামসুল আলম। প্রযোজক সমিতির এই নেতা বলেন, 'জায়েদ খানের ব্যাখ্যা পেয়ে সে অনুযায়ী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।' এর আগে অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সঙ্গে প্রকাশ্য বাকবিতন্ডায় জড়ান জায়েদ খান। এমনকি তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশও পাঠিয়ে ছিলেন তিনি। তারা ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে আলোচনায় উঠে আসা হিরো আলমের সঙ্গেও তার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অবশ্য হিরো আলম ও জায়েদ খানের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দিয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের আরেক নায়ক অনন্ত জলিল। তাছাড়া শাকিব খানের সঙ্গে জায়েদ খানের দ্বন্দ্ব নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কম চর্চা হয়নি। দ্বন্দ্বের জেরে শাকিব খান তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। এছাড়া সমিতির হিসাব-নিকাশ নিয়েও তার বিরুদ্ধে নানা সময়ে বিভিন্ন জন অভিযোগ তুলেছেন। যদিও সেসবের কার্যত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ বিষয় জায়েদ খানের সঙ্গে কথা বলতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। ২০০৮ সালে মোহাম্মদ হান্নানের 'ভালোবাসা ভালোবাসা' চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে ঢালিউডে পা রাখেন পিরোজপুরে জন্ম নেয়া জায়েদ খান। এরপর বেশকিছু ছবিতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করলেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হন তিনি। অবশেষে ২০১৭ সালে নিজেই প্রযোজনায় আসেন। জেড. কে মুভিজ নাম দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে প্রথম চলচ্চিত্র নির্মিত হয় 'অন্তর জ্বালা'। প্রযোজনার পাশাপাশি এতে চিত্রনায়িকা পরীমনির বিপরীতে অভিনয়ও করেন জায়েদ। এরপর 'টেনশন' শিরোনামে আরেকটি চলচ্চিত্র প্রযোজনার ঘোষণা দিলেও সেই ছবির কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। সিনেমায় অনিয়মিত হলেও টানা দুই মেয়াদে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০১৯ সালের নির্বাচনে জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক পদে ২৮৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন।