সালমান শাহ্ ছিলেন রিয়াল সুপারস্টার

বড় পদার্র জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিব খান। দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপটে সব নায়ককে ছাড়িয়ে সুপারস্টারের তকমাটা তিনিই পেয়েছেন। এই ঈদে ‘ক্যাপ্টেন খান’ নিয়ে তিনিই ছিলেন এগিয়ে। এছাড়াও বুধবার একটি অভিজাত হোটেলে উপস্থিত হয়েছিলেন ‘শাহেনশাহ’ ছবির মহরতে। বতর্মান ও সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা বলেছেন আকাশ নিবিড়

প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বতর্মানে... গত বুধবার ‘শাহেনশাহ’ ছবির মহরত অনুষ্ঠিত হলো। শামীম আহমেদ রনীর পরিচালনায় এই ছবিতে আমার বিপরীতে অভিনয় করছে নুসরাত ফারিয়া। এই ছবির মাধ্যমে অভিষেক হতে যাচ্ছে নবাগতা নায়িকা রোদেলা জান্নাতের। আগামী সপ্তাহ থেকে ছবিটির শুটিং শুরু হবে। অন্যদিকে, ‘নোলক’ ছবির শুটিং শেষ হলেও দুটি গানের দৃশ্যায়ন বাকি আছে। খুব শিগগিরই সেটা শেষ হবে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি ছবির কাজ টাইম লাইনে আছে। সিডিউল অনুযায়ী সেগুলোর কাজ শুরু করব। নতুন ছবি ‘শাহেনশাহ’ নিয়ে.... শামীম আহমেদ রনীর প্রথম ছবি ‘বসগিরি’র শুরুটা আমাকে নিয়ে। এরপরও তার সঙ্গে আমার বেশ কিছু কাজ হয়েছে। তাকে আমি খুব স্নেহ করি। ও খুব ভালো কাজ জানে। যারা তার ছবি দেখেছেন, তারা সবাই একবাক্যে স্বীকার করবেন সত্যিই সে ভালো নিমার্তা। এই ছবিতে শুরুতেই আমার আর নুসরাত ফারিয়ার যে কেমিস্ট্রিটি দঁাড় করিয়েছে, তা সত্যিই আশ্চযের্র। এমনকি চরিত্রটি আমার ক্যারিয়ারে একেবারেই প্রথম। আমার অগণিত ভক্ত নতুন কিছু ধামাকা পাবেন। আরেকটি চমক হিসেবে থাকছে নবাগতা রোদেলা জান্নাত। সেও বুবলীর মতো নিউজ প্রেজেন্টার ছিল। আমরা আরেকজন নিউজ প্রেজেন্টার পেলাম। ইতোমধ্যে এমন আরও কয়েকজনের প্রস্তাব আমার কাছে এসেছে। ‘শাহেনশাহ’ ছবিতে আমার চরিত্রের পাশাপাশি কিছু কলকাতার সিনিয়র শিল্পীদের অভিনয় করার কথা ছিল। পরে জানতে পারলাম, তাদের না নিয়ে আমাদের দেশের সিনিয়র শিল্পী চিত্রনায়ক উজ্জ্বল ও অভিনেতা তারেক আনাম খানকে রাখা হয়েছে। এটা সত্যিই ভালোলাগার। পরবতীের্ত এ রকম সিনিয়র শিল্পীদের ছবিতে রাখা প্রয়োজন বলে মনে আমি করি। চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট নিয়ে... এই দেশ আমার। এই ইন্ড্রাস্ট্রি আমার। এর ভালোর জন্যই আমাকে কাজ করতে হবে। এই চলচ্চিত্রকে বঁাচাতে আমাকেই এগিয়ে আসতে হবে। কেউ করুক আর না করুক আমি এই ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য কাজ করে যাব। গত ঈদে আমার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘ক্যাপ্টেন খান’ প্রায় ১৫০ হলে মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে ভালো করেছে। কেননা, দেশীয় সিনেমার প্রেক্ষাপটে এত সুন্দর নিমার্ণ সত্যিই প্রশংসনীয়। অনেকেই ছবিটির জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন। এটা সত্যিই আনন্দের, এটি আমার দেশের চলচ্চিত্র। এটা আমার দেশেই নিমির্ত হয়েছে। আমরা পাশের দেশকে দেখাতে পেরেছি, আমরাও বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নিমার্ণ করতে পারি। এ রকম আরেকটা নিমার্ণ হবে ‘শাহেনশাহ’। আমরা পারি, আমরা দেখিয়েছি, সব অপশক্তি পেরিয়ে আমরা বার বার প্রমাণও দিয়েছি। মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি ‘নাকাব’ নিয়ে... কলকাতার শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্ম প্রযোজিত ‘নাকাব’ ছবিটি মুক্তির অপেক্ষায়। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসেই প্রেক্ষাগৃহে এটি মুক্তি পাবে। ছবিটি বাংলাদেশের কপিরাইট ও পরিবেশনার দায়িত্ব নিয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। যতদূর শুনেছি, ইতোমধ্যে ছবিটির বুকিং শুরু হয়েছে। দশর্কদের বলতে চাই, এই ছবিতে আপনারা নতুন এক শাকিব খানকে দেখতে পাবেন। যদিও এই ছবিতে ডবল চরিত্রে কাজ করেছি। এই ছবিতে আমার বিপরীতে রয়েছে ওপার বাংলার নায়িকা নুসরাত জাহান ও সায়ন্তিকা। প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ্... গত বুধবার ছিল দেশীয় চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ’র মৃত্যুবাষির্কী। তাকে নিয়ে এক কথায় বলতে চাই, তিনিই ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের রিয়াল সুপারস্টার। এত বছর পর এসেও কোটি ভক্ত তাকে হৃদয়ে রেখেছে। তার অকাল মৃত্যু সত্যিই বেদনাদায়ক, যেটা ভোলার নয়। আমি এই মহানায়কের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। দেশীয় চলচ্চিত্রের বতর্মান পরিস্থিতি... আমার জানা মতে এখনকার সময় প্রযোজকরা খুবই সাহসি। চলচ্চিত্রের দুঃসময় তারা পাশে রয়েছেন। শুরুতেই যে বিষয়টি বলতে চাই, শাপলা মিডিয়ার কণর্ধার সেলিম খান, তাকে ধন্যবাদ দিতে চাই একটি মাত্র কারণে, সবাই জানেন চলচ্চিত্রের বতর্মান অবস্থায় যে অস্থিরতা চলছে, আমি আমার ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে এমন ভীতিকর অবস্থা কখনো দেখিনি। আজকাল একজন প্রযোজককে একটি ভালো সিনেমা বানাতে গেলে তাকে অনেক সমস্যা পেরিয়ে আসতে হয়। এখন চলচ্চিত্র নিমার্ণ মানেই জেনে-শুনে নিজেকে বিপদে ফেলা দেয়া। ধরুন; আমি একটি সিনেমা করতে যাচ্ছি, এর মানে বিপদে পড়তে যাচ্ছি। এমন কি রাতের ঘুমও হারাম। সকালে শুনতে হয়, কোনো এক ক্ষমতাশীল ব্যক্তি ফোন করে শুটিং বন্ধ করে দিয়েছেন। এত কষ্ট করে যখন প্রযোজক ছবি শেষ করে সেন্সরে জমা দেন, সেখানেও শুরু হয় নানা রকম জটিলতা। পদে পদে ছবিটি আটকানোর জন্য প্রায় ১০০ ফোন যাবে। শত রকমের আইনের মারপ্যঁাচে ফেলানো হবে তাকে। এই পরিস্থিতিতে যারা কাজ করছেন, তারাই বুঝতে পারছেন। এ রকম ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যেও যারা চলচ্চিত্র নিমার্ণ করছেন, তাদের সত্যিই সাধুবাদ জানাই। পরিশেষে.... সবাই সবার থেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চলচ্চিত্রের সঙ্গে কাজ করি। এই চলচ্চিত্র শুধু শাকিব খানের নয়, এই চলচ্চিত্র সবার। চলচ্চিত্রের সঙ্গে সরকার, গুণীজন, সমালোচক, সাংবাদিক, প্রযোজক, পরিচালক, হল মালিক, দশর্ক, শিল্পী ও কলাকুশলী সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই আমরা আগামী সোনালী দিন ফিরে পাব। এই চলচ্চিত্রে আমার যেমন অধিকার আছে, তেমনি ওই অজোপাড়া গ্রামের সেই খেটে খাওয়া মানুষেরও সমান অধিকার আছে। এটা বাংলাদেশের সবার চলচ্চিত্র। সবাই এক সঙ্গে কাজ করবেনÑ এই শুভ কামনা করছি।