সিনেমা হল খুলে দেওয়ার খবরে চলচ্চিত্রাঙ্গনে উচ্ছ্বাস

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

মাসুদুর রহমান
মুক্তির অপেক্ষায় অপু বিশ্বাস ও বাপ্পী চৌধুরী অভিনীত 'শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-২' ছবির একটি দৃশ্য
অবশেষে মিলল স্বস্তির নিঃশ্বাস। আশা-নিরাশা আর অনিশ্চয়তার ঘোর কাটিয়ে মিলল সিনেমা হল খুলে দেওয়ারও আভাস। আর এ আভাসেই উচ্ছ্বসিত চলচ্চিত্র তথা সিনেমাপাড়া। করোনাকালীন ধকল কাটিয়ে দীর্ঘ ৬ মাস পর খুলতে যাচ্ছে দেশের প্রেক্ষাগৃহ। আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে দেশের সব সিনেমা হলে প্রদর্শিত হবে চলচ্চিত্র। সোমবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা এক বৈঠকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতাদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্র পরিবারের বেশিরভাগ প্রযোজক, পরিবেশক প্রদর্শক, পরিচালকসহ শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এর মাধ্যমে আটকে থাকা ছবিগুলো আবার আলোর মুখ দেখবে। মুক্তির তারিখ ঘোষণার পরও করোনার কারণে অন্ধকারে পড়েছিল দেবাশীষ বিশ্বাসের 'শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২', নাদের চৌধুরীর 'জ্বীন', মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের 'ঊনপঞ্চাশ বাতাস', চয়নিকা চৌধুরীর 'বিশ্বসুন্দরী', সানি সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদের 'মিশন এক্সট্রিম', শামীম আহমেদের 'বিক্ষোভ', এম এ রহিমের 'শান', রবিন খানের 'মন দেব মন নেব', শাহিন সুমনের 'বিদ্রোহী'সহ প্রায় ৩০টি ছবি। মুক্তির তালিকায় থাকা এসব ছবির কলাকুশলীরা সিনেমা হল খোলার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সাথে হলের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য হল মালিকদের অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, 'সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে এলেও সিনেমা হল বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। সিনেমা হল খোলার দাবি ছিল আমাদের। অবশেষে দীর্ঘদিন পরে সিনেমা হল খুলতে যাচ্ছে। এতে চলচ্চিত্রের শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালকসহ চলচ্চিত্র পরিবার স্বস্তি প্রকাশ করছে। সিনেমা হল বন্ধ থাকায় এই অঙ্গনের অনেক কিছু স্থবির হয়েছিল এখন এসব সচল হবে। তবে একটা বিষয় খুব জরুরি তা হলো হল মালিকদের সিনেমা হলের পরিবেশ ভালো রাখতে হবে। হলের পরিবেশ ভালো না হলে দর্শক হলে আসবে না।' প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু সরকারও তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস পর সিনেমা হল খুলছে এটা অত্যন্ত ভালো খবর। দীর্ঘদিন ধরে সিনেমা ব্যবসা স্থবির হয়ে আছে। অনেকেই সিনেমা হল খোলার অপেক্ষায় ছিলেন। সেই অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। শুরুতে হয়তো দর্শক ততটা হবে না তবে ধীরে ধীরে দর্শক হলে আসতে শুরু করবে। তবে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিনেমা প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। আমার মনে হয় এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দেওয়া দরকার। কীভাবে সিনেমা প্রদর্শন হবে, দর্শক কতটুকু দূরত্বে বসবে, হলের পরিবেশটা কেমন হবে এসব নিয়ে হয়তো আমাদের বসতে হবে।' সিনেমা মুক্তির বিষয় নিয়ে খসরু বলেন, 'মুক্তির তালিকায় বেশকিছু সিনেমা আছে। যেগুলো করোনার আগে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কিন্তু মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। সিনেমা হল খোলার সিদ্ধান্তের পর প্রযোজকরা এখনো যোগাযোগ করেনি। সবে তো সিদ্ধান্ত হলো এখন দেখা যাক কি করা যায়। আশা করছি দু/একদিনের মধ্যেই তালিকাভুক্ত সিনেমার প্রযোজকরা সাড়া দেবেন। শুরুতে নতুন সিনেমা মুক্তির সাহস কোনো প্রযোজক না করলে আমরা ভেবে সিদ্ধান্ত নেব।' পরিবেশক সমিতির সাবেক উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দীন বলেন, 'চলচ্চিত্রের জন্য এটা ভালো খবর। সিনেমা হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে দেশের হল মালিকরা খুব খুশি হয়েছেন। সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একেতো সিনেমার মন্দাবস্থা, তার মধ্যে হল বন্ধ থাকা হল মালিকদের জন্য বিশাল ক্ষতি। কিন্তু করোনার কারণে এই পরিস্থিতি মেনে নিতে হয়েছে। হল খোলায় সিনেমা হলের মালিকরা আশার আলো দেখছেন।'