অনুদানের ছবিতে স্থগিতাদেশ অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
এরই মধ্যে সিনেমা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন পূজা চেরী
অনুদান নিয়ে ফের জটিলতা। এরই মধ্যে 'হৃদিতা' শিরোনামের একটি ছবির অনুদান বাতিল ও কার্যক্রম স্থগিতের আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খবর নিতে গিয়ে জানা গেল বেশ কয়েকটি এলোমেলো তথ্য। শুরুতে মহরতের পর অনুদান পাওয়া নিয়ে রহস্যেও জাল বিস্তার করে ছবিটি। এরপর উঠে জালিয়াতির অভিযোগ। এবার যোগ হলো আইনি নোটিশ। অনিয়ম এবং অনুদানের শর্ত ও নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে 'হৃদিতা' ছবির অনুদান বাতিল ও শুটিংসহ যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিতের জন্য তথ্যসচিব এবং 'হৃদিতা'র তথাকথিত প্রযোজকসহ ৯ জনকে নোটিশ দিলেন জাদুকাঠি মিডিয়ার কর্ণধার চিত্র প্রযোজক মো. মিজানুর রহমান। তার পক্ষে আইনি নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী। ২৪ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এবং ২৭ সেপ্টেম্বর ই-মেইলে পাঠানো ওই নোটিশে একই সঙ্গে 'হৃদিতা'র জন্য ইতোমধ্যে ছাড়কৃত অনুদান ফেরত এবং অনুদানের মতো সরকারের একটি মহতী উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। নোটিশে বলা হয়, 'হৃদিতা' মূলত 'সময়' প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত লেখক আনিসুল হকের একটি উপন্যাস। তিনি ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল, ৫০ হাজার টাকা সম্মানির বিনিময়ে প্রযোজক মিজানুর রহমানকে এককভাবে 'হৃদিতা' থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের লিখিত অনুমতি দেন। ওই দিন মিজানুরের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান 'জাদুকাঠি মিডিয়া'র অফিসিয়াল প্যাডে আনিসুল হক স্বহস্তে লিখেন "যাদুকাঠি মিডিয়াকে আমার উপন্যাস সময় প্রকাশনীর 'হৃদিতা' থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি প্রদান করা হলো।" নোটিশে আরও বলা হয়, 'হৃদিতা' সম্পূর্ণরূপে নির্মাণাধীন একটি চলচ্চিত্র। কারণ লেখকের অনুমতি পাওয়ার পর মিজানুর 'ড্রিমগার্ল' নাম দিয়ে ছবিটি পরিচালনার জন্য ইস্পাহানী আরিফ জাহানকে নিয়োগ দেন। এমনকি নায়ক-নায়িকা চূড়ান্ত করে তাদের সাইনিং মানি দিয়ে ছবির মহরতও করেন। এমনকি পুরোদমে শুটিংয়ের প্রস্তুতিও সারেন। এসব কাজে প্রচুর অর্থ ব্যয়ও করেন। কিন্তু করোনার তান্ডবে সব কিছু থমকে যায়। এরই মধ্যে ২৫ জুন, ২০২০ তারিখে জারি হয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য অনুদানের ছবির প্রজ্ঞাপন। তাতে দেখা যায়, 'হৃদিতা' ছবিটি অন্য প্রযোজকের (এম, এন ইস্পাহানী) নামে অনুদান পেয়েছে। অথচ ওই প্রজ্ঞাপনের ১ বছর ২ মাস আগে এবং এমনকি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য অনুদানের ছবি আহ্বান করে সরকার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিরও ৫ মাস আগে মিজানুর এককভাবে 'হৃদিতা' নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি পান। নোটিশে আরও বলা হয়, অনুদান নীতিমালা-২০২০ অনুসারে, নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য অনুদানের জন্য বিবেচিত হয় না। তাছাড়া অনুদানের আবেদনপত্রের সঙ্গে লেখকের অনুমতিপত্র দাখিল করতে হয়। এই দুই ক্ষেত্রেই অনুদানপ্রাপ্ত 'হৃদিতা' ছবির পরিচালক বা প্রযোজক নিশ্চিতভাবে প্রতারণা ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। এসব অবৈধতার কারণে 'হৃদিতা'র অনুদান বাতিলযোগ্য। নোটিশে অন্যদের মধ্যে চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সভাপতি তথ্যমন্ত্রী, সহসভাপতি তথ্য-প্রতিমন্ত্রী, সদস্য এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অনুদানপ্রাপ্ত ছবি 'হৃদিতা'র পরিচালক প্রযোজক এম এন ইস্পাহানী ও পরিচালক আরিফ জাহানকে পক্ষভুক্ত করা হয়। এ বিষয়ে নোটিশদাতা আইনজীবী আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী বলেন, 'প্রার্থিত বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নিলে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' এদিকে বিতর্কিত কোনো চলচ্চিত্রে কাজ করব না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন 'হৃদিতা' কেন্দ্রীয় ছরিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তি হওয়ার নায়িকা পূজা চেরি। তিনি বলেন 'আমার ক্যারিয়ারে কোনো কলঙ্ক লাগাতে চাই না' অন্যদিকে নোটিশের প্রাপ্তি স্বীকার করে এন ইস্পাহানী বলেন, 'যেভাবে বিষয়টি সুন্দরভাবে মিটমাট করা যায় সে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সিনেমার সঙ্গে আছি। এসব বিষয় নিয়ে সুনাম নষ্ট হোক তা একেবারেই চাই না। কেউ যদি অপচেষ্টা করে তাতে কোনো লাভ হবেও না।' সরকার থেকে অনুদানের জন্য যে নিয়ম রয়েছে তা সঠিকভাবে মেনেই অনুদান পেয়েছে 'হৃদিতা', দাবি এই পরিচালকের।