যশোর রোডে শরণার্থীদের যুদ্ধচিত্রে আপস্নুত দর্শক

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

মিলন রহমান, যশোর
'সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড' গীতি-নৃত্যনাট্যের শেষ দৃশ্য
'শত শত মুখ হায় একাত্তর যশোর রোড যে কত কথা বলে,/এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কলকাতা চলে।' ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন যশোর রোডের শরণার্থীদের যুদ্ধবিভীষিকা, অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধচিত্র নিয়ে মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ রচনা করেছিলেন কবিতা 'সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড'। এটি শুধু একটি কবিতাই নয়, বাঙালির আত্মত্যাগের একটি মহামূল্যবান ইতিহাস। তার সেই কালজয়ী কবিতা অবলম্বনে গীতি নৃত্যনাট্য পরিবেশন করেছেন যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা। শুক্রবার রাতে যশোর জেলা প্রশাসন ও শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমিতে গীতি নৃত্যনাট্যটি মঞ্চায়ন হয়। 'সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড' কবিতা অবলম্বনে গীতি-নৃত্যনাট্যটি মঞ্চায়নের সময়ে পুরো শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চটি যেন 'মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত জমিনে পরিণত হয়'। শরণার্থীদের বিভীষিকা ও যুদ্ধচিত্রে জীবন্ত হয়ে ওঠে মার্কিন প্রতিবাদী কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের 'সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড' কবিতাটি। বাঙালিদের ওপর ব্রিটিশদের নির্যাতন চিত্র দিয়ে গীতি-নৃত্যনাট্যটি শুরু হয়। এরপর দেশ ভাগ, '৫২-এর ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও যুদ্ধকালীন যশোর রোডে শরণার্থীদের যুদ্ধ-বিভীষিকা ও রক্তাক্ত জীবনচিত্রের ঘটনাপ্রবাহের মঞ্চায়ন হয়। যশোর রোডে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের যে ঢল নামে তারই প্রতীকী উপস্থাপনায় শিহরিত হন হলভর্তি দর্শক। গভীর মনোযোগে সে যশোর রোড দিয়ে কলকাতা যাওয়ার দৃশ্য দেখেন হলরুমের কয়েকশ মানুষ। জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শতাধিক শিল্পীর প্রাণবন্ত এবং মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনা গীতি-নৃত্যনাট্যটি দেখে জলে ভিজে ওঠে দর্শকদের ব্যথাতুর চোখগুলো।