কেমন কাটল তারকাদের পূজা

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আজ বিজয়া দশমী। বরাবরের মতো এবারও আলোকসজ্জা, উলুধ্বনি ও ঢাকের তালে মেতে ওঠেছে পূজামন্ডপ। মহামারি করোনাতেও ছোট-বড় সবার মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। আর দশজন সাধারণ মানুষের মতো তারকারাও মেতে ওঠেছেন উলস্নাসে। পরিবারের সদস্য ও কাছের মানুষদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন তারা। তবে, এবার করোনার কারণে প্রায় সবাই বাসায় বসেই উৎসব উদ্‌যাপন করছেন। লিখেছেন মাসুদুর রহমান

প্রকাশ | ২৬ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
পীযূষ বন্দোপাধ্যায় বরাবরের মতো এবারও পরিবারের সঙ্গে ঢাকাতেই পূজা উদ্‌যাপন করছেন অভিনেতা পীযূষ বন্দোপাধ্যায়। তবে বিগত বছরগুলোর মতো এবারের পূজায় ব্যস্ত নন তিনি। বলেন, 'করোনার কারণে এবারে সারদীয় দুর্গা উৎসব পালন হচ্ছে সংকুচিতভাবে। উৎসব হচ্ছে ঠিকই কিন্তু আনন্দ, উলস্নাস-উচ্ছ্বাস, হই-হুলেস্নাড় নেই। করোনার বর্তমান পরিস্থিতি ও শারীরিক অসুস্থতা সব মিলিয়ে এবারের পূজা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। প্রতিবারই পূজায় পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটানো, নগরীর বিভিন্ন মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে বেড়ানো হতো। কিন্তু এবার সম্ভব হয়ে উঠছে না।' চঞ্চল চৌধুরী শুটিংয়ে সারা বছর ব্যস্ত থাকলেও প্রতি বছর দুর্গা পূজার এই সময়ে গ্রামের বাড়ি পাবনায় যেতে ভুলেন না অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। করোনা পরিস্থিতিতে এবার তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিনি বলেন, 'প্র্রতি বছর পূজায় গ্রামের বাড়ি পাবনা যাওয়া হয়। শুটিংয়ের ব্যস্ততায় ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমীর দিন থাকতে না পারলেও নবমী ও দশমীর দিন পাবনায় থাকার চেষ্টা করি। এবারও তাই। শনিবার রাতে ঢাকা থেকে গ্রামে এসেছি। বাবা-মা আছেন, ভাই-বোনেরা সবাই মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করছি। এখন আগের মতো মন্ডপে মন্ডপে ঘোরা হয় না। খুব মিস করি শৈশবের পূজার দিনগুলো। এবার সবাই করোনা নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। পূজার আয়োজন ও আনন্দ আগের মতো হচ্ছে না। স্বল্প পরিসরে হচ্ছে দুর্গা উৎসব।' অপু বিশ্বাস এবারের পূজা মোটেই ভালো যাচ্ছে না চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের। মাসখানেক আগে মারা গেছেন তার মা শেফালী বিশ্বাস। সেই শোকে উদযাপন করেননি নিজের ও ছেলে আব্রাহাম খান জয়ের জন্মদিন। এখনো মা হারানোর শোক সামলাচ্ছেন অপু। তিনি বলেন, 'করোনা মহামারির কারণে সারা পৃথিবী এখন থমকে আছে। শুধু জীবনের জন্য বেঁচে থাকা আমাদের। এবার পূজা করার জন্য পূজা করতে হচ্ছে। তাই পূজায় কোনো পরিকল্পনা নেই। মা কিছুদিন আগে গত হয়েছেন। মা পূজার সব পরিকল্পনা করতেন। আমি, মা এক রকম ড্রেস পরতাম। এই যে আনন্দ; এবার আর হচ্ছে না! অথচ গতবার পূজায়ও অনেক আনন্দ করেছি। মা'র কথা খুব মনে পড়ছে, বুক ফেটে কান্না আসছে।' প্রতিবারের মতো এবার পূজার কেনাকাটা হয়নি। শুধু জয়ের জন্য জামা কিনেছেন। বললেন, 'আমার আনন্দ কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। মায়ের জন্য প্রার্থনা করছি। তিনি যেন পরপারে ভালো থাকেন।' দেবলীনা সুর করোনায় সবকিছু পাল্টে গেলেও অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে আছেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী দেবলীনা সুর। স্বামী গীতিকার সুমন সাহাকে নিয়ে ঘুরেছেন দেবলীনা। বলেন, 'প্রতি বছর পূজার এই সময়ে গান নিয়ে আমাকে প্রচুর ব্যস্ত থাকতে হয়। ব্যস্ততার ফাঁকে পূজার আনন্দ উপভোগ করা হতো না। কিন্তু এবার গানে ততটা ব্যস্ততা নেই। পূজার উৎসব এবার সেভাবে না হওয়ায় গানে ব্যস্ততা কম। সেই সুযোগে এবার ঢাকার বেশকিছু মন্ডপ ঘুরেছি। বরাবরের মতো এবারও অঞ্জলী নিয়েছি। নিখাদ আনন্দই লাগছে আমার কাছে। যে সুযোগটা আমার হয় না। সর্বত্রই প্রচুর সাবধানতা চোখে পড়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি ছিল উলেস্নখ করার মতো।' অপর্ণা ঘোষ পূজার ছুটি কাটাতে বৃহস্পতিবার ঢাকা ছেড়েছেন অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ। চট্টগ্রামে নিজের বাড়িতেই আছেন। প্রতিবার পূজায় আনন্দ-উলস্নাসে থাকলেও এবার তা হচ্ছে না। পরিবারের সঙ্গে ঘরেই কাটছে পূজার আনন্দ। বলেন, 'একেবারেই অন্যরকম সময় যাচ্ছে। কোনো ধরনের কেটাকাটাও করা হয়নি এবার। বাবা-মা ও ছোট বোনের সঙ্গে সময় কাটছে। এখন পর্যন্ত কোথাও বের হইনি। ইচ্ছাও নেই। প্রতি বছর পূজার ছুটিতে বাড়ি এসে মন্ডপে মন্ডপে ঘোরা, বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা করা, প্রতিমা বিসর্জন দেখা এসব কোনোটাই এবার হচ্ছে না। আমরা খুব খারাপ একটা সময় পার করছি। তাই অন্যান্য বারের মতো এবারে পূজায় আনন্দ-উলস্নাস করা ঝুঁকিপূর্ণ। এবার না হয় একটু নিরানন্দ থাক। বেঁচে থাকলে তো জীবনে আরও অনেক পূজা আসবে।' বাঁধন সরকার পূজা পরিবারের সঙ্গে ঢাকাতেই পূজা উদ্‌যাপন করছেন কণ্ঠশিল্পী বাঁধন সরকার পূজা। তবে করোনার কারণে আগের মতো উদ্‌যাপন হচ্ছে না এবারের পূজার আনন্দ। তিনি বলেন, 'কোনো পরিকল্পনা নেই এবারে। প্রতি বছর অনুষ্ঠানের ফাঁকে মন্ডপে মন্ডপে ঘোরা হলেও এবার ঘোরা হচ্ছে না। বাসাতেই আছি। এখনো বের হইনি। আজ হয়তো আশপাশে একটু ঘোরা হবে। এর বেশি কিছু না। ঘরে বসে পরিবারের সঙ্গে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।'