বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

সিনেমা হল এবং শুটিং বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা

মাসুদুর রহমান
  ২১ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
শুটিং করতে এসে করোনায় আক্রান্ত হন তানজিন তিশা ও জিয়াউল হক অপূর্ব

থামছে না মহামারি করোনা তান্ডব। বরং ক্রমেই বাড়ছে শনাক্ত আর মৃতু্যর সংখ্যা। এমনকি সম্প্রতি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে। প্রথম ধাপের পর শুরু হয়ে গেছে করোনার দ্বিতীয় আক্রমণ। আর এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয় পড়েছে পুরো বিশ্বে। এরইসধ্যে দ্বিতীয় ডেউ মোকাবিলায় অনেক দেশে নিয়েছে জরিুর ব্যবস্থা। ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে জারি করা হয়েছে কারফিউ। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে শোবিজাঙ্গনেও। খবর নিয়ে জানা গেছে, খুলে দেওয়ার পর অনেক দেশের সিনেসা হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুটিং-ডাবিংও বন্ধের প্রস্তুতি চলছে কোথাও কোথাও। আর শুটিং চললেও অনেকেই এ অবস্থায় মৃতু্যঝুঁকি নিয়ে শুটিংয়ে ফিরতে অনীহা দেখাচ্ছেন। আর যারা কাজ করছেন তাদের কেউ কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে হানপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বিশেষ একটি সূত্র থেকে পাওয়া গেছে, বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে যে কোনো সময় সব ধরনের শুটিং বন্ধের ঘোষণা আসতে পারে। বন্ধ হয়ে যেতে পারে দেশের সব সিনেমা হলও।

এরমধ্যে দুই বাংলার বরেণ্য অভিনেতা সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়ের মৃতু্যসহ পরপর কয়েকজন তারকার করোনা আক্রান্তের খবরে শোবিজ দুনিয়ায় আতঙ্গের মাত্রা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে সিনিয়র শিল্পীদের মধ্যে। অন্যদিকে করোনার কারণে শোবিজে বেকারত্ব বেড়ে গেছে। এখনো অনেক শিল্পী রয়েছেন কাজের বাইরে।

করোনায় দীর্ঘ ৪ মাস শুটিং বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুন মাস থেকে শুরু হয় নাটকের শুটিং। জীবনের তাগিদে কেউ কেউ অভিনয়ে ফিরলেও অধিকাংশ অভিনয়শিল্পীই ছিলেন নিজ নিজ ঘরে। সিনিয়র শিল্পীদের পাশাপাশি সময়ের চাহিদাসম্পন্ন প্রায় শিল্পীই পরিস্থিতি অনুকূলের অপেক্ষায় ছিলেন। করোনাকে মেনে নিয়ে ধীরে ধীরে অনেকেই অভিনয়ে ফিরতে শুরু করেন। আতঙ্ক নিয়েই দাঁড়ান ক্যামেরার সামনে। নিজেকে নিরাপদে রাখতে ঘরে রান্না করা খাবার ও নিজেই মেকাপ নিয়ে হাজির হন শুটিং স্পটে। সংক্রমণের ভয়ে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কাজ কমিয়ে দেন। কেউ কেউ এখনো ফিরেনি অভিনয়ে। আতঙ্ক নিয়ে যখন সবাই অভিনয়ে ফিরেছেন ঠিক সেই সময়ে করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে ফের অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার চিন্তা করছেন অনেকেই।

করোনার কারনে নতুন কোনো কাজ করছেন না অভিনেত্রী দিলারা জামান। ৫ মাস পর অভিনয়ে ফিরলেও তা পুরনো কাজ। তিনি বলেন, 'শুটিংয়ে ফিরলেও আগের মতো কাজ করছি না। এখনো তো করোনার ভয় রয়েগেছে। যে কাজগুলো করছি তা বাধ্য হয়ে করছি। আগেই এগুলোতে কাজ করার কথা ছিল। নতুন নতুন অনেক কাজের প্রস্তাব আসছে কিন্তু ফিরিয়ে দিচ্ছি। কানাডা ও আমেরিকা থেকে আমার দুই মেয়েরাও অভিনয় করতে নিষেধ করছে। এই অদৃশ্য শত্রম্ন নিয়ে কাজ করা আতঙ্কের। তা ছাড়া আমার বয়স হয়েছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে অভিনয় করা সম্ভব নয়।'

দীর্ঘদিন করোনার কারণে অভিনয় থেকে বিরত ছিলেন অভিনেতা আবুল হায়াত। অনেকেই ফিরলেও তিনি ফিরেন অনেক পরে। করোনার কারণে কাজ করছেন খুব হিসেব করে। তিনি বলেন, 'অভিনয়ে ফিরেছি বটে কিন্তু খুব কম কাজ করছি। আপাতত মাসে একটি কাজের বেশি করতে চাই না।'

নূসরাত ইমরোজ তিশা বলেন, 'স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছি। তবে ভয় কাজ করে। করোর পরিস্থিতি এখনো খারাপ। দ্বিতীয় ঢেউ আসার কথা শুনছি। এটার অবস্থা নাকি আরও ভয়াবহ। এমন পরিস্থিতিতে হয়তো আবার শুটিং বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমনটা শোনা যাচ্ছে।'

এদিকে দীর্ঘ ৬ মাস পর সিনেমা হল খুললেও দর্শকের অভাবে মুক্তিপাচ্ছে না নতুন সিনেমা। দর্শক সংকট ও করোনার বর্তমান পরিস্থিতি সামনে রেখে সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। সিনেমা হর মালিকরাও তেমনটা শঙ্কা করছেন। অপরদিকে, করোনা আতঙ্কে আটকে থাকা অনেক ছবির শুটিং এখনো শুরু হয়নি। নতুন পরিস্থিতিতে শুটিংয়ে ফিরছেন না চলচ্চিত্রের অনেক তারকারা। যারা ফিরেছেন তারাও আতঙ্ক নিয়ে কাজ করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে