শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

ভাষাগত দুর্বলতা গানের আবেদন নষ্ট করে দিচ্ছে

কুমার বিশ্বজিৎ- বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তার হাত ধরে দেশে প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্মের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এবার এই শিল্পীর হাত ধরে সংগীতাঙ্গনে নতুন ধারা সংযোজিত হলো। প্রথমবারের মতো মিনিয়েচার প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মিত হলো তার মিউজিক ভিডিও। তার সঙ্গে কথা বলেছেন রায়হান রহমান
নতুনধারা
  ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
কুমার বিশ্বজিৎ

টানা চার দিন শুটিং করতে হয়েছে...

করোনার কারণে আমার অনেক কাজই আটকে ছিল। ঘর থেকে বের হব কী হব না, এই নিয়েও বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এসবের মধ্যেও সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওর কাজ শেষ করেছি। এর শিরোনাম 'মেঘলা দিন'। গানটির জন্য টানা চার দিন শুটিং করতে হয়েছে। এরমধ্যে দিয়ে দেশের কোনো মিউজিক ভিডিওতে প্রথমবারের মতো মিনিয়েচার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই ধরনের প্রযুক্তি সাধারণত হলিউড-বলিউডের সিনেমায় ব্যবহার করা হয়। গানটি লিখেছেন তাজু কামরুল এবং সুর সংগীত করেছেন আহম্মেদ হুমায়ূন। গানটির মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন চন্দন রায় চৌধুরী। গানটি আগামী মাসে 'গান ছবি এন্টারটেইনম্যান্ট'র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাবে।

আমি বেশ আশাবাদী...

'মেঘলা দিন' গানটির মিউজিক ভিডিওর জন্য পাহাড়ি নির্জন রাস্তায় একটি কফি শপের দরকার ছিল। এই প্রেক্ষাপটটি মাথায় রেখেই আমাদের আগাতে হয়েছে। আর পুরো ভিডিওটি আমরা যেভাবে দেখাতে চেয়েছিলাম, তাতে মিনিয়েচার ভিডিওর বিকল্প ছিল না। যদিও কাজটি শেষ করতে চন্দনের উপর বেশ পরিশ্রম গেছে। তবুও নতুন ধারার চ্যালেঞ্জিং কাজটি করে বেশ মজা পেয়েছি। তাছাড়া তাজু কামরুল অসাধারণ লিখেছেন আর আহম্মেদ হুমায়ূনও চমৎকার কাজ করেছেন। আমি গানটি নিয়ে বেশ আশাবাদী।

সিংহভাগই থাকে গানকেন্দ্রিক...

কাজের কিন্তু শেষ নেই। বিভিন্ন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হয়। যদিও কাজের সিংহভাগই থাকে গান কেন্দ্রিক। কদিন আগেই মানাম আহম্মেদের 'রি অ্যারেঞ্জম্যান্ট'র জন্য বেশ কয়েকটি পুরনো গান নতুন করে তুলেছি। এরমধ্যে 'বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে', 'তুমি ভুল করে এসেছিলে কী না জানি না', 'তুমি পাগল বলো', 'এখন অনেক রাত' অন্যতম। গানগুলো নতুনভাবে শিগগিরই প্রকাশ পাবে। দর্শককে ভালো কিছু দেওয়ার একটা চেষ্টা আমার মধ্যে সবসময়ই ছিল এবং আছে। সে জায়গা থেকে কাজগুলো করা।

শো বাতিল করেছি...

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এখনো স্টেজ শোতে ফিরিনি। একটা স্টেজ শো মানে আমি গেলাম, গান গাইলাম আর চলে আসলাম; বিষয়টি এমন নয়। সেখানে বেশ কিছু মানুষ জটলা পাকাবে। তারা গান শোনে হইহুলেস্নাড় করবে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়বে সাধারণ দর্শক। সেই চিন্তা করেই বেশ কয়েকটি শো বাতিল করেছি। এরমধ্যে কক্সবাজার ও ঢাকারই বাতিল করছি চারটি শো।

আর বেশি কিছু বলতে চাই না...

সত্যি বলতে যতদিন বাংলা সংস্কৃতি থাকবে ততদিন বাংলা গানের কদর কমবে না। তবে বর্তমানে অনেকেই বাংলা গানের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। গান নাকি গানের মতো হয় না। আমাদের এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। আর বেশি কিছু বলতে চাই না।

এভাবে সৃজনশীলতা আসে না...

বর্তমান সময়ের বড় সমস্যা হচ্ছে গানের ভাষা। ভাষাগত দুর্বলতা গানের আবেদন নষ্ট করে দিচ্ছে। বাংলা গানে যা সৃষ্টি হওয়ার তা আগেই হয়ে গেছে। আমরা এখন পুরনো বাংলা গানকে আশ্রয় করে টিকে আছি। বিভিন্ন কারণেই গানে নতুনত্ব নিয়ে হাজির হতে পারছি না। এরমধ্যে রয়েছে, গানের অতীত ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা না করা, ভাষা জ্ঞানের অভাব, গীতি কবিদের অভাব, সিনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে নতুন শিল্পীদের যোগাযোগ রক্ষা না করাসহ অনেক কিছু। বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায়, একজন শিল্পী নিজেই গান লিখছে, নিজেই সুর দিচ্ছে। আবার সেই গান নিজেই পরিবেশন করছে। এভাবে সৃজনশীলতা আসে না। গান বিষয়টি সম্মিলিতভাবে চর্চা করতে হবে। গান নিয়ে সাধনা করতে হবে। গানের কথায় মমতা থাকতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে