নিয়ম মানছে না মাল্টিপ্লেক্সগুলো

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

আকাশ নিবির
প্রতীকী ছবি
বতর্মানে দেশে মাত্র ৩২০টির মতো প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে। তার মধ্যে আবার বেশির ভাগ হলের অবস্থা খুবই নাজুক। তাই বিশেষ উৎসব ছাড়া প্রেক্ষাগৃহে আগের মতো সিনেমাপ্রেমী দশের্কর ভিড় জমে না। তবে সিঙ্গেল স্ক্রিনের হলে দশর্ক না থাকলেও দেশীয় মাল্টিপ্লেক্সগুলোর চিত্র একদমই ভিন্ন। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে মাল্টিপ্লেক্সে দশের্কর ভিড় চোখে পড়ার মতো। তবে মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে দেশীয় চলচ্চিত্র বরাবরই অবহেলিত। অথচ মাল্টিপ্লেক্স নিমাের্ণর জন্য সরকারি চুক্তিপত্রে ৭০ ভাগ দেশীয় ছবি চালানো বাধ্যতামূলক। সে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই মাল্টিপ্লেক্সে চলছে বিদেশি ছবির রমরমা ব্যবসা। এ প্রসঙ্গে মধুমিতা সিনেমা হলেও মালিক, চলচ্চিত্র প্রদশর্ক সমিতির সভাপতি ও চলচ্চিত্র সেন্সর বোডের্র সদস্য ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘ইদানীং দেখছি মাল্টিপ্লেক্সে ইংলিশ ছবি প্রদশর্ন ক্রমেই বাড়ছে। এ কারণে বাংলা ছবি হুমকির মুখে পড়েছে। তাই বাংলা ছবিকে রক্ষা করার জন্য নতুন উদ্যোগ সরকারকেই গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বতর্মান চলচ্চিত্রশিল্পের যে অবস্থা, তা নিয়ে প্রেক্ষাগৃহের মালিকরাও হতাশায় ভুগছেন। কয়েকদিন আগে একজন প্রযোজক সুপ্রিম কোটের্ আপিল করেছেনÑদেশীয় কোনো উৎসবে বিদেশি ছবি বন্ধের।’ আমরাও কিছু দিনের মধ্যে পাল্টা আপিল করব। এভাবে রেষারেষি করলে এ ব্যবসা দিনদিন হারিয়ে যাবে। যুদ্ধের আগে আমাদের মধুমতি সিনেমা হলটিও মাল্টিপ্লেক্স করার অনুমতি ছিল। তবুও দেশীয় ছবির প্রতি ভালোবাসা রেখেই এখন পযর্ন্ত দেশীয় ছবিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। অবস্থা অপরিবতির্ত থাকলে আমিও মাল্টিপ্লেক্স করে ফেলব।’ চলচ্চিত্র পরিচালক সফিক হাসান বলেন, ‘আমাদের ছবিগুলো সারা বাংলাদেশে কয়েক শ হলে মুক্তি পেলেও মাল্টিপ্লেক্সে আমাদের ছবি দিতে গেলে শুরু করে নানা রকম তালবাহানা। তাদের মাল্টিপ্লেক্সে প্রতি মাসে যে পরিমাণ ইনকাম হয় তা দিয়ে আমাদের দেশে মাসে ৩০টি ছবি নিমার্ণ করা যেতে পারে। গত বছর আমার পরিচালনায় ‘ধূমকেতু’ ছবিটি মাল্টিপ্লেক্সে চালানোর চেষ্টা করেছিলাম। শাকিব খান হিরো থাকা সত্তে¡ও মাল্টিপ্লেক্সে ছবিটি চালাতে পারিনি। কেননা তাদের ওখানে চালাতে হলে আলাদাভাবে ৫০ হাজার টাকায় ডিসিপি সিস্টেমে চালাতে হবে বলে তারা জানান। তারা তো জানেই আমাদের ছবির বাজার তেমন একটা ভালো নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি ছবিগুলো প্রায় ৪০০ কোটি টাকায় উপরে নিমির্ত ছবি। তাই তুলনা না করে আমাদের ছবি আলাদাভাবে প্রদশের্নর ব্যবস্থা করা উচিত। কয়েকদিন আগে নিউজে দেখলাম ওপার বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাল্টিপ্লেক্সে বাংলা ছবি চালানো বাধ্যতামূলক করেছেন। সরকারকেই এ রকম মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’ অন্যদিকে মাল্টিপ্লেক্সে দেশীয় ছবি চালানো প্রসঙ্গে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের জনপ্রসাশন কমর্কতার্ মেজবাহ উদ্দিন জানান, ‘আমাদের এখানে দেশীয় ছবির দশর্কই বেশি। বতর্মানে হলিউড ছবির পাশাপাশি দেশি ছবি ‘পোড়ামন-২’ মাসব্যাপী প্রদশর্ন করছি। এর আগেও ‘আয়নাবাজি’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’সহ একাধিক ছবি চালিয়েছি। তা ছাড়া আগামী মাসে মুক্তির অপেক্ষায় ‘দেবী’ ছবিটিও প্রদশের্নর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। মোটকথা আমরা এখানে ছবির কোয়ালিটিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। যারা এখানে এত বেশি মূল্যের টিকেট কেটে ছবি দেখতে আসে, তারা বুঝে শুনেই আসে। কেউ যদি দেশীয় ছবির সেন্সরের পর আমাদের ডিসিপি করে দেন, তাহলে আমরা সেটির কোয়ালিটি যাচাই-বাছাই করেই প্রদশের্নর ব্যবস্থা করব। তবে দেশীয় ছবি চালাতে কোনো রকম আপত্তি নেই।’