শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কে কোথায় কী করছেন

আজ চাঁদ দেখা গেলেই আগামীকাল ঈদ। না হলে পরশু শুক্রবার। কিন্তু এমন এক সময়ে ঈদ আমাদের দ্বারপ্রান্তে, যখন সারা বিশ্ব প্রাণঘাতী করোনায় বিপর্যস্ত। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। লকডাউন, সরকারের কঠোর বিধি-নিষেধ, ঘরে থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর। এত কিছুর পরও লাখ লাখ মানুষ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে ফিরছেন বাড়িতে। নাড়ির টান আছে শোবিজের তারকাদের মধ্যেও। গতবারের মতো এবারও তাদের ঈদ হচ্ছে সীমিত পরিসরে। তারপরও সবারই একটা বিশেষ পরিকল্পনা নিশ্চয়ই আছে। তারকাদের সেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির খবর জানাচ্ছেন
মাতিয়ার রাফায়েল
  ১২ মে ২০২১, ০০:০০

শাকিব খান

ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান ২০০৪ সালের পর থেকেই ঢাকায় ঈদ করে আসছেন। এবারও ঢাকায়ই বাবা-মাকে নিয়ে ঈদ করবেন বলে জানালেন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশেষ কোনো আয়োজনের ব্যবস্থা নেই। এক সময় তো নিজ গ্রামেই ঈদ করতেন। কিন্তু ঢাকাই সিনেমায় ব্যস্ত হওয়ার পর থেকে নিজ জন্মস্থান গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে ঈদ করা হয় না। এ নিয়ে তার একটা আক্ষেপও আছে বলে জানালেন তিনি। কারণ গ্রামে ঈদ কাটানো ছেলেবেলার যে স্মৃতি রয়েছে সেই স্মৃতি এখনো তাকে টেনে নিয়ে যেতে চায় গ্রামে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও সেই শৈশবের গ্রামে ঈদ করা হয়ে ওঠে না।

জাহিদ হাসান

ঢাকাতেই ঈদ করছেন দর্শকপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, গতবারের মতো এবারও ঘরবন্দি হয়েই দিন পার করে দিতে হবে। করোনার যেরকম অবস্থা বিরাজ করছে তাতে ঈদ উদ্‌যাপনের সময় নয় এটা। বাংলাদেশসহ গোটা পৃথিবীতে যেভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে এ নিয়ে আতঙ্কিত আমি। বিশেষ করে ভারতের ডাবল ভ্যারিয়েন্ট করোনা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ, ঘনবসতির দেশ বাংলাদেশেও যদি হানা দেয় তাহলে খুবই দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে বাংলাদেশকে। এ অবস্থায় সবাইকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদ্‌যাপন করতে হবে। টুকটাক আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে থেকেই ঈদ উদ্‌যাপন করতে হবে। তাই এবারের ঈদে বিশেষ কোনো আয়োজনে নেই।

শবনম বুবলী

২০১৬ সালে রুপালি পর্দায় পা রাখার পর থেকেই ঢাকায় নিয়মিত ঈদ করে থাকেন হাল সময়ের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন নায়িকা শবনম বুবলী। তবে এবারের করোনাক্রান্তির কারণে ঈদে কোনো জাঁকজমক থাকছে না। শোবিজের তারকা হওয়ায় এমনিতেই তার কাছে ঈদ মানে একটা বাড়তি আনন্দ। নতুন সিনেমা মুক্তি পাওয়া, তারকাদের সঙ্গে মহা আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করা এসবের কিছুই থাকছে না এবার। ফলে এবারের ঈদটা তার জন্য একটা নিরানন্দেরই হয়ে থাকবে বলে জানালেন তিনি। তারপরও ভক্তদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। ভক্ত, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী সবার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই এবারের ঈদ বিনিময় করবেন বলে জানালেন তিনি। সেই সঙ্গে ভক্তদের জন্য নতুন সাজের ছবি আপলোড করা তো থাকছেই।

নুসরাত ইমরোজ তিশা

ঢাকাতেই ঈদ কাটাবেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। তিনি জানালেন, এক সময় তো নিজ এলাকায় বাবা-মাসহ সবাইকে নিয়ে আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতেন। কিন্তু এখন তো আর সেইসব দিন আর নেই। বাবা-মা বেঁচে থাকলে তো সেরকম ঈদ উদ্‌যাপন হবে। আসলে বাবা-মার সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপনের আনন্দটাই আলাদা। বাবা-মার সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করার মতো আনন্দ আর কোনো কিছুতেই হতে পারে না। কিন্তু তারপরও যে ঈদ উদ্‌যাপন করবেন সেই পরিবেশটাই তো নেই। গত বছরের মতো এবারও যে ঈদের সেই পরিবেশটা লন্ডভন্ড করে দিল। এভাবে ঈদ করাটা তো জন্য কল্পনারও বাইরে। এমনিতেই শোবিজের তারকাদের জন্য ঈদ একটা বাড়তি আনন্দ বয়ে আনে। সেটা গতবারের মতো এবারও হচ্ছে না দেখে খুবই খারাপ লাগছে। তারপরও সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে স্বাস্থবিধি মেনে ঈদ উদ্‌যাপন করতে হবে। আগে তো নিজেদের সুরক্ষা দিতে হবে। তারপরই না ঈদ। বেঁচে থাকলে আরও অনেক ঈদ করা যাবে।

নুসরাত ফারিয়া

শৈশবে তো ঈদ মানেই ছিল একটা বিশেষ কিছু। নতুন জামাটা পাওয়া মানেই যেন সব পেয়ে গেলাম। তারপর সে জামা পরে সেলামির জন্য আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করাসহ আরও কতো কী। এখন কি আর সেইসব দিন আছে। এখন উল্টো নিজেকেই সেলামি দিতে হয়। ছোটোদের নতুন জামা কিনে দিতে হয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ কাজের সহযোগীদের নতুন পোশাক কিনে দিই। আর এতেও যে আরও ভীষণ আনন্দ পাওয়া যায় এটা তখন থেকেই বুঝলাম যখন থেকে ঈদ উপহার আনন্দ কী জিনিস সেটা তাদের চোখের তারায় দেখতে পারছি। প্রতিবারের মতো এবারও সবাইকে নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়েছি। সিনেমায় যোগ দেওয়ার পর থেকে এমনিতেই একের পর এক নতুন সাজ সাজতে হয়, নতুন পোশাক পরতে হয় সেক্ষেত্রে ঈদে নিজের জন্য নতুন পোশাক কী আর কিনব। নতুন পোশাক কেনার জন্য এখন আর সেই শৈশবের মতো উৎসাহ নেই। ভাবছি, সুতি সালোয়ার-কামিজ পরেই ঈদের দিনটি কাটিয়ে দিতে হবে। ইচ্ছে হলে বড়জোর ভক্তদের জন্য ঈদের সাজের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করতে পারি- বললেন নুসরাত ফারিয়া।

আঁখি আলমগীর

ঈদ উপলক্ষে বিশেষ কোনো প্রস্তুতি বা আয়োজনে নেই কণ্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীর। কারণ হিসেবে করোনার ওপর দোষ চাপিয়েছেন তিনি। ঈদের কোনো স্মরণীয় সময় মনে আছে কি না- জানতে চাইলে এ গায়িকা বলেন, 'সব আনন্দই তো আসলে একই রকম। আলাদাভাবে দেখানোরও তো কিছু নেই আসলে। তবে ঈদ উৎসবের আনন্দ আলাদা এই দিক থেকে, এ দিনের আনন্দে অংশগ্রহণ থাকে বড় পরিসরে। আর সেভাবে বড় পরিসরের স্মৃতি তো থাকেও না খুব একটা। ছোটো ছোটো পরিসরের স্মৃতিই বরং মানুষের মনে থাকে। আর ছোটোবেলার স্মৃতি বলতে আমার তেমন কিছু মনেও নেই। তবে এবারের ঈদস্মৃতিটা হয়তো মনে থাকবে এই কারণে, এবার কোথাও যাওয়া হবে না। ঘরে বসেই বিষণ্ন মনে সারাদিন কাটিয়ে দিতে হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে