সা ক্ষা ৎ কা র

নাট্যাঙ্গনের বেহাল দশার প্রতিবাদ করার কেউ নেই

দুই পদার্র দশর্কপ্রিয় অভিনেত্রী ডলি জহুর। অসংখ্য ছবিতে মায়ের অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ সুদীঘর্ ক্যারিয়ারে দু’বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। অভিনয় ও সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গে কথা হলো তার সঙ্গে-

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮, ২০:৩৪

অনলাইন ডেস্ক
ডলি জহুর
বতর্মান ব্যস্ততা... আমি এখন চলচ্চিত্রে অভিনয় করছি না। এক কথায় বলতে, রুপালি জগতটা ছেড়েই দিয়েছি। কারণ নিয়ত ছিল হজ করার পর আর অভিনয় করব না। ২০১২ সালে আল্লাহ আমাকে হজ করার তৌফিক দিয়েছেন। এরপর থেকে আর কোনো ছবিতে অভিনয় করিনি। তবে নাটক এবং ধারাবাহিকে কাজ করছি। বতর্মানে আমার অভিনীত একাধিক ধারাবাহিক প্রচার হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে- ‘ক্যাট হাউজ’, ‘মেঘে ঢাকা শহর’ ও ‘নোয়াশাল’। মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র... স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি না- কোনো ক্ষেত্রেই এমনটি কখনো মনে হয়নি। যখন যেটা করি, মন দিয়েই করার চেষ্টা করি। মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র সব জায়গাতেই দীঘির্দন আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করেছি। সবার ক্ষেত্রেই আত্মবিশ্বাসটা জরুরি। অভিনয়ে বাধা... এখনকার মতো ওই সময়ে মিডিয়ায় কাজ করার খুব একটা সহজ ছিল না। মা খুব করে বাধা দিতেন। কিন্তু, বাবার মৌন সম্মতি পেতাম। হয়তো এজন্যই আজকের ডলি জহুর হতে পেরেছি। গালর্স গাইডের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতেও মা বাগড়া দিতেন, বাবার সঙ্গে ঘ্যান ঘ্যান করতেন। কিন্তু বাবা আমাকে চোখ ইশারা দিয়ে বলতেন, তুমি যাও, আমি দেখছি। মা আমাকে সংসারের কাজ শিখতে বলতেন। অভিনয়ের টানির্ং পয়েন্ট... অরণ্যক নাট্য সংগঠনের ‘মানুষ’ নাটকটি একাধিকবার মঞ্চস্থ করেছি। সেখানে সব চরিত্রেই নিজেকে যথাযথভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে আমি একমাত্র নারী চরিত্র। এটা আমাকে অভিনয় জগতে নিঃসন্দেহে শক্ত অবস্থান দিয়েছে। বতর্মানে নাটক ও চলচ্চিত্র... সব সময় চ্যালেঞ্জিং চরিত্র করতে ভালোবাসি। আর তাছাড়া আমি সব সময় ভালো কাজকে অনুপ্রাণিত করি। কেউ কাজের জন্য বললে, সেখানে সত্যিকার অথের্ই আমার জন্য কিছু আছে কিনা তা দেখি। স্ক্রিপ্ট না দেখে কোনো সিনেমা বা নাটকে আমি অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেই না। অভিনয় জীবনে স্মরণীয় ঘটনা... প্রথমে তো চার দিন কাজ করে মাত্র ৫০০ টাকা পেতাম। ওটাই অনেক বিরাট কিছু মনে হতো। আর এখন সিঙ্গেল নাটকে ৫০ হাজার, এক লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন নায়ক-নায়িকারা। আড়াই লাখ ও তিন লাখ টাকার বাজেটের নাটকে তারা একাই যদি এত বেশি নেন, তবে বাকিরা কি পাবে? নাট্যাঙ্গনের এই বেহাল দশার প্রতিবাদ করার কেউ নেই। এত টাকা নেয়ার পরও তারা এমন অভিনয় করে যা দেখলে মাথা খারাপের অবস্থা হয়। দুঃখের বিষয় দিনের দিন এই অবস্থা বেড়েই চলেছে। প্রথম অভিনয়ে গল্প... মহান স্বাধীনতার পরে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। ওই সময় নাট্যচক্রের কাজ শুরু করি। ম. হামিদ আমার গুরু। এরপর তার ‘কথক’ নাট্যগোষ্ঠীতে কাজ শুরু করলাম। আমার স্বামী জহুরুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয়। জীবনের অতৃপ্তি... অভিনয় আমার ভালোবাসার জগৎ। এটি করতে গিয়ে পরিবারকে তেমন সময় দিতে পারিনি। এখন মাঝেমাঝে অনুভব করি, কাজের জন্য স্বামী-সন্তানকে সময় দিতে পারিনি। এটা আমার দেয়া উচিত ছিল। এসব ভাবলে এটাই জীবনের অতৃপ্তি মনে হয়। তবে যতদিন বঁাচব, ততদিন অভিনয়ের সঙ্গেই থাকব।