সা ক্ষা ৎ কা র

'নির্মাতার কোনো জেন্ডার হয় না'

ছোটপর্দার আলোচিত নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করছেন। লেখালেখিতেও তার হাত রয়েছে। নির্মাণের ব্যস্ততা ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন

প্রকাশ | ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

মাতিয়ার রাফায়েল
চয়নিকা চৌধুরী
সব মিলিয়ে কেমন আছেন? নতুন কাজকর্ম? আমি সব সময়েই ভালো ছিলাম। এখনো ভালো আছি। কাজ শুরু করব। ওটিটি পস্ন্যাটফর্মে পান্থ শাহরিয়ারের চিত্রনাট্যে তারিক আনাম খান, পরীমনিকে নিয়ে 'অন্তরালে' নামে যে একটা ওয়েবফিল্ম করার কথা ছিল সেটার প্রস্তুতি চলছে। জানুয়ারি থেকে শুরু হবে। এরমধ্যে দুটি নাটক করেছি। মৌ, তারিক আনাম, শবনম ফারিয়া অভিনীত 'স্বাধীনযাত্রা'। আরেকটি তারিন, শহিদুজ্জামান সেলিম অভিনীত 'অভ্রবিলাস'। নির্মাতা হিসেবে নারীদের প্রযোজক পেতে সমস্যা হয়? নির্মাতা হিসেবে নারীকে কেন প্রযোজক পেতে সমস্যা হবে, যদি তিনি ভালো কাজ জানেন? আর নাটক-চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে 'নারী' এই ধারণাটিই আমি মানতে রাজি নই। নির্মাতার কোনো জেন্ডার হয়। একজন নির্মাতা, নির্মাতাই। 'নারী নির্মাতা'- এ রকমভাবে বললে সেটা নারীবিদ্বেষ প্রসূত কথা হয়। কথাটি 'নারী দিবস' হলে আসতে পারে। কিন্তু অন্য সাধারণ সময়ে নয়। একজন নারী যতটা যত্ন, পরিশ্রম করে, ভালোবাসা দিয়ে কাজটা করবে সেটা কিন্তু একজন ছেলে করবে না। কারণ, তাকে বাইরের কাজ সেরে ঘরের কাজও করতে হয়। এখানে তো আপনি একটা পৃথকীকরণ টানলেন! আসলে কথাটা এভাবে বললাম এ কারণে, যারা পুরুষ, নারী বিদ্বেষী তারা এটা বিশ্বাসই করতে চান না যে, নারীরা এগিয়ে আসছে- এগিয়ে আসবে। এটা বিশ্বাস করতে না পারাটা তাদেরই অক্ষমতা। কারণ, তারা একজন নারী নেতৃত্ব দেবে একটা টিমের মধ্যে- এটা কিছুতেই মানতে চান না। নারী নির্মাতা, নারী পরিচালক- একজন নির্মাতার আগে-পড়ে এসব লাগানোটা মূলত তাদেরই বানানো জিনিস। \হ যেসব স্ক্রিপ্ট নেন এর কোনোটি অ্যাসাইনমেন্ট থেকে হয়? আমি বাইরের স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করি। বড় বড় রাইটারদের লেখা থেকে তৈরি করা স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজগুলো করি। আমি অন্য রাইটারদের স্ক্রিপ্টকে ডিরেকশন দিই। আমি আমার পছন্দ অনুযায়ী হায়ার স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করি। কোনো অ্যাসাইনমেন্ট অনুযায়ী স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করি না। যারা চয়নিকার কাজ সম্পর্কে জানেন, তারা সবাই এটা স্বীকার করেন। ২০১৫ সালের পর থেকে আমি নিজের স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করি না। এখনকার নাটকে চরিত্র কমে গেছে- এর কি নির্মাতার অক্ষমতা? আমার নাটকে সবই থাকে। পারিবারিক, জীবনের সম্পর্কের গল্প, ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প- সবই থাকে। আমি বিশ বছর ধরেই চরিত্র কম নিয়ে কাজ করছি। তবে সেখানে মা-বাবা থাকে। এ পর্যন্ত ৪২০টি নাটক করেছি। সবগুলোতেই চরিত্র কম নিয়ে কাজ করেছি। এটা খুবই ভালো জিনিস। এটা ঠিকই আছে। কারণ একটি নাটক ৪০ মিনিটে শেষ করতে হয়। স্ক্রিপ্ট যেরকম সেরকম চরিত্র নিয়েই কাজই করি। এই স্ক্রিপ্টের কাজ নিয়ে ভাবাভাবির কিছু থাকে না। ওরা জানে যে, সেই স্ক্রিপ্টটা কেমন হবে। ওরা পরীক্ষিত। ওরা যেরকম স্ক্রিপ্ট দেন আমি সেভাবেই কাজ করি। পরিচালনায় নারীদের অনেকে অল্প কয়টি কাজ করেই সরে যান। কারণ কি? এর কারণ, এক. তারা ফ্যামিলির সাপোর্ট পায় না, দুই. তারা ভালো করে জানেই না বিষয়টা। তিন. তাদের ধৈর্য কম। অনেকে আছেন যারা খুব মেধাবী কিন্তু পরিবার থেকে সাপোর্ট পায় না। অনেকে আছে কিছুই পারে না। জানতে হবে বিষয়টা। সব বিষয়ে তাকে জানতে হবে। সবকিছু তার নখদর্পণে থাকবে। ধৈর্য লাগবে। আমি পরিশ্রমী, আমি লেগে থাকি। এটাকে আমি ভালোবাসি। এটাকে লালন-পালন করি। এই ধৈর্যটা আমার আছে। এগুলো যাদের থাকবে না, তারাই সরে যাবে।