স্মৃতির পাতায় হুমায়ূন আহমেদ

প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নিমার্তা হুমায়ূন আহমেদের জন্মবাষির্কী আজ। এ দিনে শিল্প-সাহিত্যের সবখানে আলোচনার বিষয় তিনি। শ্রদ্ধাভরে আজ তাকে স্মরণ করছেন সবাই। তারকাদের অনেকেই বিভিন্ন সময় হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। খুব কাছে থেকে দেখেছেন তাকে। প্রিয় সেই মানুষটির জন্ম দিবসে স্মৃতির কথা জানালেন তারকাদের কয়েকজন

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রিয়াজ, চিত্রনায়ক স্যার আমাদের মাঝে বেঁচে নেই এটা আমি বিশ্বাস করি না। তিনি সবখানেই আছেন। আমরা তাকে অনুভব করি সবসময়। হয়তো ধরতে পারি না। তার সঙ্গে কাটানো সময়গুলো খুব মিস করি। তার ডিরেকশন মিস করি, তার অ্যাকশন বলা, কাট বলা, তার সঙ্গে আড্ডা দেয়া মিস করি। আমি মনে করি, বাংলা ভাষার সাহিত্যপ্রেমী, সংস্কৃতিপ্রেমীরা সবাই একজন মহান শিল্পী ও শিল্পের স্রষ্টাকে মিস করেন। তিনি মরে গিয়েও বেঁচে আছেন তার সৃষ্টিকমের্। অদেখা ভুবনে ভালো থাকুন আমাদের সবার প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ। ডা. এজাজ, অভিনেতা স্যারের মতো মানুষ আমি আর পাব না। কোথায় ছিলাম, আর স্যার আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন। তার সোনার কাঠির স্পশের্ই তো বদলে গেল সব। একজন চিকিৎসক হয়ে উঠলাম অভিনেতা। স্যারের সঙ্গে একেকটা কাজ ছিল আমার জীবনে একেকটা উৎসবের মতো। তার সঙ্গে কাটানো সময়ের অনেক সুখস্মৃতি রয়েছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি। আজ স্যার আমাদের মাঝে বেঁচে নেই, কিন্তু তার স্মৃতিগুলো জলজল করে ভাসছে আমার চোখে। আল্লাহর কাছে তার আত্মার শান্তি কামনা করি। কুদ্দুস বয়াতি, কণ্ঠশিল্পী হুমায়ূন স্যার আমার ওস্তাদ। আজ আমার যা কিছু পরিচিতি সব উনার জন্য। আমার মতো একজন অসহায়-অবহেলিত মানুষকে রাস্তা থেকে তুলে এনে তিনি তারকা বানিয়েছেন। আমার জীবন ও ভাগ্য বদলে গেছে তার উসিলয়। আমার কাছে তার ঋণ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। স্যার আমার জন্য যা করেছেন, সেটা আমার গায়ের চামড়া কেটে তার জুতা বানিয়ে দিলেও শোধ হবে না। আমার স্যার ছিলেন খুব ভালো মানুষ। আজকাল এমন ভালো মানুষ দেখি না। তার মতো সত্যবাদীও নেই। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন। আমিন। মিম, চিত্রনায়িকা আমার বড়পদার্য় অভিষেক হুমায়ূন স্যারের হাত ধরে। এটা যে কত বড় পাওয়া আমার মতো ক্ষুদ্র একজন শিল্পীর জন্য সেটা কাউকে বোঝাতে পারব না। তিনি আমাকে অভিনয়ের সাহসটা দিয়েছিলেন। আমার মনে হয় তিনি ঈশ্বরের বিশেষ আশীবার্দ নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন। নইলে একজন মানুষ কী করে এমনভাবে সফল হতে পারেন। আমরা শিল্প-সাহিত্যে অনেক সব্যসাচী কিংবদন্তির কথা শুনি। কিন্তু হুমায়ূন স্যারের মতো কেউ নন। কী আশ্চযর্ রকমের রহস্যময় একটা মানুষ। যাকে কেবল ভালোই বাসা যায়! তিনি ঈশ্বরের কাছে গেছেন, নিশ্চয়ই ঈশ্বর তাকে ভালো রেখেছেন। মাহফুজ আহমেদ, অভিনেতা স্যারের হাত ধরে আমি অভিনয়ে এসেছিলাম। এরপর বহুবার তার সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। এখন আমি নিমাের্ণ এসেছি। সেখানেও তাকে ফলো করি। আমার সব কিছু জুড়ে কারিগর হুমায়ূন মিশে আছেন। তিনি নেই চোখের দেখাতে। কিন্তু তিনি আমার এবং তার সকল ভক্তের অন্তরে অমর। প্রাণ রায়, অভিনেতা আমি নিজেকে ধন্য মনে করি যে হুমায়ূন আহমেদের মতো এমন একজন কিংবদন্তি মানুষের সংস্পশের্ গিয়ে কাজ করেছি। এমন ভাগ্য অনেক অভিনয় শিল্পীরই নেই। তিনি ছিলেন একাধারে অলরাউন্ডার এক ব্যক্তি। ম্যাজিক দেখাতে জানতেন, ডিরেকশন দিতে জানতেন, গান লিখতে জানতেন, হাত দেখতেন, ভালোবাসতে পারতেন। আর যা তিনি করতেন সেটা দুদার্ন্তভাবেই করতেন। সেই প্রমাণ সবাই পেয়েছে অনেক আগেই। চৌধুরী খালেকুজ্জামান নামের একটি চরিত্র তিনি আমার জন্য সৃষ্টি করেছিলেন, যেটা ছিল আমার ক্যারিয়ারের টানির্ং পয়েন্ট। আমি স্যারের এই ভালোবাসা আজীবন বুকে আগলে রেখে অভিনয়টা করে যাব। তাছাড়া ঘেটুপুত্র কমলা ছবিতে তিনি শুধু আমার জন্য নতুন একটি ক্যারেকটার তৈরি করেন যেটা ছিল আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। স্যারের শূন্যতা কোনোদিনই পূরণ হবে না।