শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি

দুই পর্দার শিল্পীদের ভোট আজ

মাসুদুর রহমান
  ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

আজ দেশীয় বিনোদন জগতের প্রধান দু'টি শাখা চলচ্চিত্র ও নাটকের শিল্পীদের নির্বাচন। একটি চলচ্চিত্রের 'বাংলাদেশ চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতি'র নির্বাচন, অপরটি টেলিভিশন নাটকের 'অভিনয়শিল্পী সংঘ'র নির্বাচন। বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন ঘিরে বেশ কয়েকদির আগে থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে শিল্পীদের মনে। সিনিয়র-জুনিয়র প্রার্থী ও ভোটারদের উপস্থিতিতে অন্যরকম এক মিলনমেলায় পরিণত হচ্ছে এফসিডি ও শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। দুই সংগঠনের শতাধিক প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এ বছর চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতিতে ভোটার রয়েছেন ৪২৮ জন। বাদ পড়েছেন ১৮৪ জন ভোটার। আর 'অভিনয়শিল্পী সংঘ'র নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ৭৫১ জন।

দুই সংগঠনের নির্বাচনের আমেজে বেশি আলোচিত হচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নিয়ে। এবারের চলচ্চিত্র শিল্পী সিমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে শক্তিশালী দু'টি প্যানেল। দুই প্যানেলেই তারকা প্রার্থীদের ছড়াছড়ি। সিনেমার পর্দার মতোই এ নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়াই হচ্ছে নায়ক-খল নায়কের। একটি প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী এক সময়ের সাড়া জাগানো চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, অন্যটিতে চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত খল তারকা মিশা সওদাগর। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। মিশা সওদাগরের সঙ্গে ফের অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী চিত্রনায়ক জায়েদ খান। এর আগে তারা দুইবার সমিতি পরিচালনা করেছেন। হ্যাটট্রিকের আশায় তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। দুই প্যানেলই বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। দুই সভাপতি প্রার্থীই বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

মিশা সওদাগর বলেন, 'বরাবরের মতোই আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। কারণ, আমি শিল্পীদের সেবা করতে এসেছি, সেবা করে যাব। সবাই আমাদের পাশে থাকবেন এটা প্রত্যাশা করি। আর হারজিত থাকবেই। আমি পরাজয় বরণ করে নিতেও প্রস্তুত।'

অন্যদিকে ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, গত কয়েকদিন ধরে ভোটারদের কাছে গিয়ে, কথা বলে বুঝেছেন, তিনি বড় ব্যবধানে প্যানেলসহ জিতবেন। যদি তাই হয়, তবে এটি হবে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণের প্রথম জয়। এর আগে তারা কখনো একসঙ্গে নির্বাচন করেননি।

১৯৮৯ সালে ইলিয়াস কাঞ্চন সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। ৩২ বছর পর ফের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চন। অপরদিকে, চিত্রনায়িকা নিপুণ এবার প্রথম বড় কোনো পদে লড়ছেন। তাই তাদের প্রথম জয় হবে নাকি মিশা-জায়েদদের হ্যাটট্রিক, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ভোটগ্রহণ শেষে আজকের রাত পর্যন্ত।

ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণের প্যানেলে সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ আহমেদ ও ডি এ তায়েব, সহ-সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক অভিনেত্রী শাহনুর, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক চিত্রনায়ক নিরব হোসেন, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক অভিনেতা আরমান, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন ও কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচন করবেন অভিনেতা আজাদ খান।

কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে অমিত হাসান, ফেরদৌস, শাকিল খান, নানা শাহ, আফজাল শরীফ, সাংকো পাঞ্জা, জেসমীন, কেয়া, পরীমনি, খল-অভিনেতা গাঙ্গুয়া ও সীমান্ত। মিশা-জায়েদের প্যানেলে রয়েছেন সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও রুবেল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত, সাংগঠনিক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জেকে আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক জাকির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ফরহাদ। সদস্য পদে রোজিনা, অঞ্জনা, সুচরিতা, অরুণা বিশ্বাস, মৌসুমী, আসিফ ইকবাল, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, নাদের খান ও হাসান জাহাঙ্গীর। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন পীরজাদা হারুন। দু'জন সদস্য হলেন বি এইচ নিশান ও বজলুর রাশীদ চৌধুরী। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সোহানুর রহমান সোহানকে। মোহাম্মদ হোসেন জেমী ও মোহাম্মদ হোসেনকে আপিল বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে।

এদিকে টেলিভিশন নাটকের অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনের নিয়ম একটু ভিন্ন রকম। এখানে কোনো প্যানেল নেই। প্যানেলের বাইরে ২১টি পদে মোট ৪৮ জন প্রাথী এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আলোচনায় না থাকলেও নাটকের এ সংগঠনের নির্বাচনী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ সরব ছিল। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী দুইজন-আহসান হাবিব নাসিম ও শাহাদাৎ হোসেন নিপু। সাধারণ সম্পাদক পদে রওনক হাসান ও কবীর টুটুল। সহ-সভাপতি তিনটি পদে তানিয়া আহমেদ, আনিসুর রহমান মিলন, দিলু মজুমদার, সেলিম মাহবুব ও ইকবাল বাবু।

দু'টি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নাজনীন হাসান চুমকি, শামীমা তুষ্টি ও জামিল হোসেন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাজু খাদেম, তুষার মাহমুদ ও জুলফিকার চঞ্চল। অর্থ সম্পাদক পদে সায়েম সামাদ ও নূর এ আলম নয়ন। দপ্তর সম্পাদক পদে শেখ মিরাজুল ইসলাম ও কবি মামুন। অনুষ্ঠান সম্পাদক পদে নিথর মাহবুব ও রাশেদ মামুন অপু। আইন ও কল্যাণ সম্পাদক পদে ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর ও রওনক বিশাকা শ্যামলী। প্রচার ও প্রকাশনা পদে প্রাণ রায় ও মুকুল সিরাজ। তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে আবুল কালাম আজাদ, মাহাদী হাসান পিয়াল ও সুজাত শিমুল।

কার্যনির্বাহী সদস্য ৭টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন আইনুন নাহার পুতুল, আবুল কালাম আজাদ মিয়া, আশরাফ কবির, আশরাফুল আশীষ, গোলাম কিবরিয়া তানভীর, রাজীব সালেহীন, নূরুন নাহার বেগম, মিষ্টি মারিয়া, তানভীর মাসুদ, মাজনুন মিজান, মো. আবদুল হান্নান আখন্দ, মো. আমিনুল বারী, মৌসুমী হামিদ, রেজাউল রাজু, শামস সুমন, শ্যামল জাকারিয়া, স্মরণ কুমার সাহা, সংগীতা চৌধুরী, সূচনা সিকদার ও হিমে হাফিজ।

এ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খাইরুল আলম সবুজ। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন নরেশ ভূঁইয়া ও মাসুম আজিজ। এছাড়া নির্বাচনে আপিল বোর্ডে দায়িত্ব পালন করছেন অভিনেতা মামুনুর রশীদ ও আইনজীবী জুয়েল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে