বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

সিনেমার ভবিষ্যৎ ভালো দেখছি না

মুনমুন- নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে আসা একজন আলোচিত চিত্রনায়িকা। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। দু'একটি নাটকেও অভিনয় করেছেন। এছাড়া স্টেজ শো'তেও নিয়মিত পারফর্ম করছেন। সর্বশেষ মুক্তি পায় তার 'রাগী' সিনেমা। এ অভিনেত্রীর বর্তমান ব্যস্ততাসহ অভিনয় জীবনের নানা প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাতিয়ার রাফায়েল
মাতিয়ার রাফায়েল
  ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
মুনমুন

'রাগী' সিনেমার পর অনেক প্রস্তাব আসার কথা। নতুন কী করছেন এখন?

প্রস্তাব অনেকই এসেছে। তবে প্রস্তাবগুলোর গল্প, প্রোডাকশন, পেমেন্ট প্রসেসিং কোনোটাই পছন্দ না হওয়ায় ফিরিয়ে দিয়েছি। এই ক'দিন আগেও 'বলবো কথা বাসর ঘরে' নামে একটি সিনেমার জন্য প্রস্তাব এসেছিল। এটার গল্প এতটাই বাজে মনে হয়েছে যে ইচ্ছেই হয়নি তাতে কাজ করি। ডিরেক্টর অনেক রিকোয়েস্ট করেছেন। তারপরেও কাজটি ফিরিয়ে দিয়েছি। তবে সিনেমায় কাজ না করলেও স্টেজ শো নিয়ে আমার ভালোই ব্যস্ততা গেছে রোজার আগ পর্যন্ত।

কিন্তু কিছু না করার চেয়ে কিছুতে থাকা ভালো নয়?

ঐ থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো ভাইয়া। কারণ সিনেমাগুলোর কোয়ালিটিই নেই। এইসব নাটকমার্কা সিনেমায় অভিনয় করে খামোখা বদনামের শিকার হব। দুদিন পরে দেখা যাবে সিনেমাটি ফ্লপ হয়েছে। তখন সবাই বলবে, যে ছবিতে মুনমুন থাকে সে ছবিই ফ্লপ যায়। এই ইন্ডাস্ট্রির মানুষের ভাষাটা তো আমি জানি। আমার সিনেমা করার এতই যদি শখ থাকত তাহলে ২০০৩ সালের পর থেকে হিট নায়িকা থাকা অবস্থায় এই ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে আসতাম না। আমি ওই সময়ও মার্কেটে সুপারহিট নায়িকা। আমার সিনেমা আমার নিজের কোয়ালিটিতেই হিট হতো। কোনো নায়কের ওপর নির্ভর করতে হতো না। এমন সুবর্ণ সময়েও কিন্তু আমি সিনেমা ছেড়ে চলে এসেছি।

এখন তো ভালো ভালো সিনেমা বানানো হচ্ছে

তারপরেও এই সিনেমার ভবিষ্যৎ তো ভালো দেখছি না। বেশিরভাগই সুপার ফ্লপ। কিন্তু তারপরেও কারা ভালো বলছে জানেন? ফেসবুকনির্ভর কিছু লোক আছে যারা টাকা দিয়ে রিভিউ লিখিয়ে নিজের ছবির প্রচার চালাচ্ছে, ভিউ বাড়াচ্ছে তারাই এগুলোকে ভালো বলছে। তারা এমনই, পয়সা পেলে সুপার ফ্লপ ছবিকেও হিট সিনেমা বানিয়ে দিতে পারে। তবে পরাণ, হাওয়া, দিন দ্য ডে ভালো চলেছে। কিন্তু এমন কোয়ালিটির সিনেমা তো আমার হাতে আসেনি।

নাটকেও তো অভিনয় করেছিলেন। তাতেও তো ফিরতে পারেন?

না, না, না- নাটকে তো আমি কখনো অভিনয় করিনি! অবশ্য দুটি নাটকে অভিনয় করেছিলাম। একটি হাসান জাহাঙ্গীর ভাইয়ের নাটকে। কমেডি চরিত্রে। তার অনুরোধেই করেছিলাম। তবে নাটকের পরিবেশ সিনেমার পরিবেশের চেয়ে অনেক ভালো। অবশ্য এখানেও সিন্ডিকেট কায়েম আছে। বাইরের কাউকে ঢুকতে দেয় না। কোয়ালিটিফুল কাজগুলোই সবচেয়ে বেশি সিন্ডিকেট কেন্দ্রিক হয়। আমরা সিনেমার কেউ যদি যোগ দিইও ওই সিন্ডিকেটই বলবে, ঐ যে সিনেমা থেকে এসেছে বলেই আজেবাজে কথা বলতে থাকবে।

ওটিটিতেও তো কাজ করতে পারেন?

এখানে তো টিভি নাটকের চেয়েও আরও বেশি সিন্ডিকেটের রাজত্ব কায়েম আছে। দেখবেন যে শিল্পীরা কাজ করছে ঘুরেফিরে সেই তারাই আসছে। তাদের সব কন্টেন্টেই ঘুরেফিরে একই পারফর্মারদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। তাদের বাইরে কাউকে নিয়ে তারা কাজ করছেন না।

তাহলে কি এখন আপনার স্টেজ শো'ই একমাত্র ভরসা?

আসলে আমাদের দেশের মানুষের মেন্টালিটি এতটাই নিচু যে স্টেজ শো নিয়েও সাধারণ-অসাধারণ করে। আমরা যারা সাধারণ মানুষের সামনে নাচি সেটাকে তাচ্ছিল্য করা হয়। অথচ যেসব নামধারী নায়িকা আছে তারা যখন পুলিশের স্টেজ শো, আর্মির স্টেজ শো বা মন্ত্রীদের স্টেজ শো'তে নাচে তখন সেটা তাদের জন্য সম্মানের। আর সাধারণ মানুষের সামনে নাচাটা আত্মসম্মানে লাগে। কিন্তু সবই তো স্টেজ শো। তাহলে আমাদের নিয়ে কেন এমন একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে?

আপনাকে দিয়ে তো কোনো অজপাড়াগাঁয়ও নাচানো হয়েছে শুনেছি।

ওটার পেছনেও একটা ভাইরাল চক্র জড়িত ছিল। অথচ সেখানে আমি মোটেও যেতে চাইনি। অনেক পীড়াপীড়ি করেই আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা ছিল মূলত একটা ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে ভাইরাল হতে। পরে যখন আমি বুঝতে পারি তখন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাই। কারণ আমি তো মুসলমান। একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এটা তো অন্য ধর্মাবলম্বী আর্টিস্টও করবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে