এভাবে ফেরা হবে ভাবিনি

কুসুম শিকদার- ২০০২ সালে 'লাক্স আনন্দধারা মিস ফটোজনিক' প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শোবিজে পা রাখেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই তারকা একাধারে মডেল, অভিনেত্রী, গায়িকা ও লেখিকা। মাঝখানে হঠাৎ করেই অভিনয় থেকে দূরে সরে যান তিনি। ৫ বছর বিরতির পর এবার আরও এক নতুন পরিচয় নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি। নতুন পরিচয় ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হলো তার সঙ্গে-

প্রকাশ | ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রথমবার সিনেমা নির্মাণে... সত্যি বলতে, এর আগে আমি নিজেই বলেছিলাম পরিচালনায় আসার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। এটা আমার চিন্তাতেও ছিল না। তবে সিনেমায় প্রযোজনার ইচ্ছার কথা বলে আসছে অনেকদিন ধরেই। সেই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটল এবার। আমার লেখা 'অজাগতিক ছায়া' গল্পগ্রন্থের একটি গল্পের নাম ছিল শরতের জবা। সেই গল্প নিয়েই সিনেমা নির্মাণের কথা মাথায় আসে হঠাৎ করেই। আর সেই চিন্তা থেকেই প্রথমবার চলচ্চিত্র প্রযোজনায় এলাম। সিনেমার নামও দিয়েছি শরতের জবা। একই সঙ্গে এই সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার পাশাপাশি পরিচালনার সঙ্গেও যুক্ত আছি। কাউকে না জানিয়েই ছবিটির শুটিং ডাবিং শেষ করেছি। এখন মুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী বছরের শুরুতেই মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছি। পরিচালনার অভিজ্ঞতা.. অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গেলে অনেক টেনশনে ছিলাম সব সময়। নিজে না ঘুমিয়ে, ঠিকমতো না খেয়ে অন্যদের ভালো রাখতে হয়েছে। আমাদের টিমে ২০০ কলাকুশলী। কে কী খাবে, কোথায় থাকবে, এসব দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হয়েছে। পাশাপাশি অভিনয়ও করতে হয়েছে। অভিনয় করিয়েও নিতে হয়েছে। এসব ভেবেই ছবিটির শুটিং করি আমার দাদার বাড়ি নড়াইলের পহরডাঙ্গা গ্রামে। সেখানে কোনো কোনো হোটেল কিংবা রিসোর্ট-এক কথায় থাকা-খাওয়ার কোনো ভালো ব্যবস্থা ছিল না। কেউ আমাদের বাড়িতে ছিলেন, কেউ ছিলেন চাচা, ফুপু ও অন্য আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। এমনকি অনেককে স্কুলেও থাকতে হয়েছে। প্রযোজক হওয়ার কারণে এবার খুব কাছ থেকে বুঝতে পারলাম দায়িত্বটা অনেক কঠিন। সব মিলিয়ে নতুন এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। সহযোগিতা... পুরো গ্রামই আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। আমার সঙ্গে চলচ্চিত্রটির সহ-পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন সুমন ধর। ছবির নায়ক ইয়াশ রোহান থেকে শুরু করে অন্যান্য অভিনয়শিল্পীরাও ভীষণ সহযোগিতা করেছেন। এই সিনেমার অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিতু আহসান, শহিদুল আলম সাচ্চু, নরেশ ভূঁইয়া, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, অশোক ব্যাপারীসহ অনেকে। ছবিতে একটি গান আছে। আলেয়া বেগমের গাওয়া গানটির কথা ও সুর করেছেন ইমন চৌধুরী এবং সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন সন্ধি। প্রতিবন্ধকতা... নানা প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে শুটিং করতে হয়েছে। ছবির নির্মাতা হিসেবে কলাকুশলীদের শিডিউল, কাজের তালিকা- সবকিছু নিজেকেই সামলাতে হয়েছে। লোকেশনে যাওয়ার আগে হঠাৎ শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। চিন্তা করলাম, এ অবস্থায় শুটিং বাতিল করলে নতুন করে সবার শিডিউল মেলাতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে। সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে। আবার শুটিং করলেও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এসব ঝুঁকি আর দুশ্চিন্তাকে সঙ্গী করেই বিশাল টিম নিয়ে রওনা হই নড়াইলে। এরকম অনেক প্রতিবন্ধকার মধ্যে কাজ শেষ করি। অভিনয়ে ফেরা... অভিনয়ে আর ফেরা হবে কিনা- এ নিয়ে অনেক টেনশনে ছিলাম। কিন্তু আমার প্রথম পরিচালিত সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়েও প্রত্যাবর্তন ঘটছে। এতে আমি অভিনয় করছি গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে। আমার বিপরীতে রয়েছেন চিত্রনায়ক ইয়াশ রোহান। অভিনয়ের পাশাপাশি আমি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত অনেকদিন ধরেই। ২০২১ সালে বইমেলায় প্রকাশ পায় আমার গল্পগ্রন্থ 'অজাগতিক ছায়া'। সেখানকার শরতের জবা গল্পটি আমার অনেক প্রিয় একটি গল্প। মূলত ওই গল্পটি থেকে সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করি। এই ছবির ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে অভিনয়ে আমার নিয়মিত হওয়ার বিষয়টি। আমার বিশ্বাস সিনেমা-প্রেমীদের কাছেও ছবিটি ভালো লাগবে। যদিও চলচ্চিত্রের এই মন্দা বাজারে কোনো কিছুই জোর দিয়ে বলা যায় না।