সা ক্ষা ৎ কা র

স্বপ্ন ছিল সিনেমায় অভিনয় করার

শাহানাজ খুশি- মূলত ছোট পর্দার অভিনেত্রী। ধারাবাহিক নাটকেই তাকে বেশি দেখা যায়। কাজ করেন গ্রামীণ পটভূমিকাতেই বেশি এবং এর মধ্য দিয়ে দর্শকের নজরও কাড়তে পেরেছেন বেশ। অভিনয় জীবনের সূচনা করেছিলেন নব্বইয়ের দশকের দিকে। পরবর্তী সময়ে মঞ্চ ও টেলিভিশনের প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন এ অভিনেত্রী। এ শিল্পীর কাজের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন...

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শাহানাজ খুশি
কেমন চলছে এখন নতুন নাটকের কাজ? নতুন কোনো নাটকে কাজ করছি না এখন। হাতে থাকা সিরিয়ালের কাজ নিয়েই আছি। নতুন কোনো কাজে চুক্তিবদ্ধ হইনি। সেরকম হলে পরে জানাব। একক ও খন্ড নাটকেও তো কম দেখা যায়! আসলে আমার পক্ষে এখন আর ফুলটাইম কাজ করা সম্ভব হয় না। পরিবারকেও তো সময় দিতে হয়। ধারাবাহিকের পাশাপাশি সময় সুযোগ হলে খন্ড নাটকেও কাজ করি। অনেকেই বলছেন ধারাবাহিকগুলো বেশিদিন টানতে পারছে না- এ বিষয়ে আমি কী বলব। দর্শক বলবে। দর্শক তো এসব দেখছেও। ভালো না হলে দর্শক এসব দেখত না। এখন তো অসংখ্য মাধ্যমে সিরিয়াল বা নাটক চলছে। মান যাচাইয়ে সবগুলো দেখা সম্ভব? তবে আমি বেছে বেছে ভালো কাজগুলোই করি এবং এগুলো দর্শককে ভালোই ধরে রাখতে পারছে বলে আমার মনে হয়। তবে মানুষ যেটা খারাপ সেটা নিয়েই বেশি কথা বলে। ভালোটা নিয়ে কথা কম বলে। এক্ষেত্রে নাটকে নির্মাতার ব্যক্তিগত রুচি চাপানো হয়- এটা আসলে মূল্যবোধের ব্যাপার। যিনি যা-ই করুন, দেখতে হবে তার মূল্যবোধ কোন পর্যায়ের। ব্যক্তিগতভাবে তিনি কেমন। এখন যার যেরকম মূল্যবোধ, তার কাজেও সেরকম মূল্যবোধেরই প্রচার পাবে। শুধু নাটক- সিনেমাতেই না, সব ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। তবে মানুষ নাটক-সিনেমায় অবক্ষয়টাই বেশি করে তুলে ধরে। অন্যান্য অবক্ষয় নিয়ে ততোটা সরব হতে দেখি না। তবে চাপিয়ে দিয়ে তো কিছু হয় না। এই চাপিয়ে দেওয়া অভিরুচিও একসময়ে থাকবে না। কোন চরিত্র আপনাকে মানাবে- এভাবে কেউ চরিত্র তৈরি করেন? আমি তা মনে করি না। অনেকে বলেন যে, বৃন্দাবন দাস যেসব নাটক লেখেন, তার কোনো কোনো চরিত্র আমাকে সামনে রেখেই সৃষ্টি করেন। না, তিনিও এটা করেন না। বরং আমিই আমাকে দেওয়া চরিত্রটিকে নিজের মেধায় ফুটিয়ে তুলি। আমি তো শুরুতে নায়িকাও হতে পারতাম। আমি তো তা করিনি। অনেকে বলেন আপনি গ্রামীণ প্রেক্ষাপটেই যথাযথ? কোনো ধরনের চরিত্রে আমি যথাযথ বলতে পারি না। তবে আমাকে নির্মাতারা যখন গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে বাছাই করেন এ নিয়ে আমি তো কিছু বলতে পারি না। আমি তো শহরের প্রেক্ষাপটেও কাজ করতে পারি। কিন্তু নির্মাতারা আমাকে গ্রামীণ প্রেক্ষাপটেই বাছাই করলে আমি কী করব? দীর্ঘ অভিনয় জীবনটা কেমন উপভোগ করছেন? অভিনয় তো আমার উপভোগের বিষয় না। বরং এটাই আমার পেশা, এটাই আমার জীবন-যাপনের অংশ, এই অভিনয়ের সঙ্গেই আমার বসবাস। উপভোগের হলেই কি আমি সব নাটকে অভিনয় করব? তবে আমি যা করি সততার সঙ্গেই করি। ভালোবেসেই তা করি। তা ছাড়া আমারও তো সীমাবদ্ধতা আছে। চাইলেই তো সব নাটকে কাজ করতে পারি না। বর্তমান নাটকের অবস্থা কেমন মনে করেন? নাটকের অবস্থা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। ভালো-মন্দের বিচার করবেন দর্শক। অধিকাংশ নাটকের চিত্রনাট্য থাকে না। দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ নাটকেরই চিত্রনাট্য নেই। যা আছে, তাও কপি। ঘুরেফিরে সেই একই। তার পরেও দর্শক এগুলো দেখছেন, বুঝতেও পারছেন। নিজের এই কাজ নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট? পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। কারণ, আমি কাজ কম করেছি। আমার বহু কাজ করা হয়নি। আসলে সংসারে আমিই আমার অভিভাবক। সন্তানের অভিভাবক। সংসারের অভিভাবক। জীবনটা নিয়ে এত টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে যে, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক কিছু করতে পারিনি। যেমন, আমার একটা স্বপ্ন ছিল সিনেমায় অভিনয় করার। \হকিন্তু আজও সিনেমা থেকে কোনো প্রস্তাব আসেনি। যাদের নির্দেশনায় কাজ করেছি, তারা সবাই গুণী নির্মাতা। তারপরও আরও অনেক গুণী নির্মাতা আছেন বা ছিলেন যাদের সঙ্গে কাজ করতে পারিনি, এগুলো আমারই ব্যর্থতা। এ নিয়েও অভাববোধ করি।