ফেরদৌসে বিব্রত আ'লীগ

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
ফেরদৌস আহমেদ
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার 'হঠাৎ বৃষ্টি' ছবির মাধ্যমেই আলোচনায় আসেন বাংলাদেশের চিত্রনায়ক ফেরদৌস। তুমুল জনপ্রিয় এ ছবি দিয়েই পরিচিতি পান তিনি। কলকাতায় ফেরদৌসের কদর বাড়ে। এরপর কলকাতার আরও বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন ফেরদৌস। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের 'দত্তা' শিরোনামের নতুন একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন ফেরদৌস। সেই ছবির শুটিং করতে কিছু দিন আগে ভারত যান তিনি। এ ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে লোকসভা প্রার্থী কানাইলাল আগরওয়ালের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে তিনি হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তার বাণিজ্য ভিসা বাতিল করেছে ভারত সরকার। ফেরদৌসের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনেছে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। এমনকি তার প্রচারণার ভিডিওচিত্র তারা জমা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে। বিজেপির অভিযোগের পর নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশন ও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যার ফলে ফেরদৌসের বাণিজ্য ভিসা বাতিলের পাশাপশি তাকে কালো তালিকাভুক্তও করা হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। এদিকে, ফেরদৌসকে নিয়ে বিব্রত হয়েছে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে পশ্চিম বঙ্গের তুমুল লড়াই হচ্ছে বিজিপির। মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল ও বিজিপি উভয়ের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদি সরকার তিস্তার পানি চুক্তি করতে চাইলেও শুধুমাত্র মমতা ব্যানার্জির জন্যই এই পানিচুক্তি আটকে ছিল। কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পানি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেনি শুধুমাত্র এই মমতা ব্যানার্জির জন্য। তবুও মমতার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় এমন কিছু বলেনি বা করেনি আওয়ামী লীগ সরকার। তারপরও মমতা ব্যানার্জির দলের পক্ষে যখন ফেরদৌস প্রচারণায় গেছেন, তখন সেটা আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য বিব্রতকর হয়েছে। অনেক নেতা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যদিও ফেরদৌস আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগ করেন না। তবে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে ফেরদৌসকে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে তিনি বিদেশেও গিয়েছিলেন। যে কারণেই বিজেপি সরকার এই ঘটনায় কিছুটা রুষ্ট হয়েছে। বিজেপি থেকে আওয়ামী লীগের দুয়েকজন মন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিতও করা হয়েছে। তবে মন্ত্রীরা বলেছেন, ফেরদৌস আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বা সদস্য নন। এ জন্য ফেরদৌসকে নিয়ে বিজেপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে তারা বিব্রত। এদিকে জানা গেছে গত মঙ্গলবার রাতেই ঢাকায় ফিরছেন ফেরদৌস। তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। ভারতীয় হাইকমিশনের কালো তালিকাভুক্তির কারণে ভারতে প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে গেল ফেরদৌসের। ফলে আটকে যাচ্ছে 'দত্তা' ছবির কাজ। এবং ভবিষ্যতে ফেরদৌস ভারতীয় কোনো ছবিতে কাজ করতে পারবেন কি না সে বিষয়েও সংশয় সৃষ্টি হলো।