শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখছে 'নোলক'

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
সব জটিলতা আর অশ্চিয়তা কাটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখছে অন্ধকারে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা বহুল আলোচিত শাকিব খান ও ববি অভিনীত 'নোলক' সিনেমাটি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে সিনেমাটি 'আনকাট' ছাড়পত্র পেয়েছে মঙ্গলবার দুপুরে। খবরটি নিশ্চিত করেন 'নোলক' সিনেমার প্রযোজক কাম- নির্মাতা সাকিব ইরতিজা চৌধুরী সনেট। তিনি বলেন, 'সিনেমাটির বিরুদ্ধে সেন্সর বোর্ডে যেসব অভিযোগ দেয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে কথা বলার জন্য তাকে সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ডেকেছিলেন। তিনি গিয়ে তার সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে সরাসরি কথা বলেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার কাছে যেসব প্রমাণ ও যুক্তি ছিল, তিনি তার সামনে উপস্থাপন করেন। তারপরই ছবিটি সেন্সর শো-এর জন্য অনুমতি পায়। সিনেমাটির কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য করেছেন ফেরারি ফরহাদ। 'নোলক' প্রযোজনা করছে বি হ্যাপি এন্টারটেইনমেন্ট। ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর ভারতের হায়দরাবাদে 'নোলক'র শুটিং শুরু হয়। টানা ২৮ দিন শুটিং শেষে ইউনিট নিয়ে দেশে ফেরার পর ছবির পরিচালক রাশেদ রাহার সঙ্গে প্রযোজক সনেটের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ কারণেই সিনেসাটির নির্মাণকাজ কয়েকবার পিছিয়ে যায়। পরে রাশেদ রাহাকে সরিয়ে দিয়ে পরিচালকের ভূমিকায় আসেন প্রযোজক নিজেই। এ নিয়ে জটিলতা আরও প্রকট হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২২ জুলাই ফের কলকাতায় ছবির শুটিং শুরু হয়। নোলকের মুক্তির বিষয়ে সনেট বলেন, 'আমার তো ইচ্ছে রয়েছে, এই ঈদেই ছবিটি মুক্তি দেব। তারপরও আমার যে সিনেমার টিম রয়েছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত দিবো। কারণ ছবিটি তো বিগ বাজেটের। তার থেকেও বড় কথা হলো আমার যে কনটেন্ট, এটা ঈদের। কাজটি করতে গিয়ে বহু জটিলতার সম্মুখীন আমি হয়েছি।' এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল মালেকের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি। মেসেজ পাঠিয়েও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর কথা হয় প্রযোজক সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম খসরুর সঙ্গে, যিনি বর্তমানে সেন্সর বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, 'গতকাল সিনেমাটির সেন্সর শো হয়েছে। এর নির্মাতা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব, সেটা সেন্সর বোর্ডের দেখার বিষয় না। এগুলো দেখার বিষয় ছিল বাইরে। সে বিষয়ে কী সমাধান হয়েছে, আমি তা জানি না। আর সেন্সর ছাড়পত্রের যে সার্টিফিকেট, সেটা দু-এক দিনের মধ্যেই প্রযোজককে দেয়া হবে।' বোর্ডের এ সদস্য বলেন, 'সেন্সর শো-এর জন্য প্রযোজক সেন্সর বোর্ডের নির্ধারিত একটি ফর্মে আবেদন করেন। সেখানে প্রযোজক, পরিচালক, গীতিকারসহ আরও অনেক বিভাগ আছে, সেগুলা পূরণ করে দেন। সব তথ্য ঠিক আছে কি না, তা যাচাই-বাচাই করা হয়। সব তথ্য ঠিক থাকলেই সেন্সর শো-এর জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এর বাইরে সেন্সর বোর্ডের আর কিছুই দেখার নাই।' এত জটিলতার পর ছাড়পত্রের মধ্য দিয়ে বিষয়গুলোর সমাধান হয়েছে বলে মনে করেন সাকিব ইরতিজা চৌধুরী সনেট। তার ভাষ্য, 'আমি মনে করি বাংলা চলচ্চিত্রের এই দুঃসময়ে চলচ্চিত্রের স্বার্থে যারা যারা ছবিটি নিয়ে একের পর এক মিথ্যাচার করেছিলেন, তাদের এখন ছবিটির পাশে দাঁড়ানো উচিত। কারণ এখনকার দর্শক যে ধরনের ছবি দেখতে চান, নোলক ঠিক তেমনই একটি ছবি।' এর আগে ২ এপ্রিল সনেট বলেছিলেন, 'আমার সিনেমাটির মুক্তি আটকে দেয়ার জন্য অনেক ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা প্রতিটা পদে পদেই। আমাকে এখন পর্যন্ত যতগুলো পদে আটকে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সব জায়গা থেকেই আমি ছবিটির ছাড়পত্র নিয়ে এসেছি। আমার যে ক্ষতিটা হয়েছে, আমার ছবিটি মুক্তির তারিখ বার বার পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি চাই না, এখন আর কোনো বাধা আসুক।' শাকিব খান ও ববি হক ছাড়াও 'নোলক' সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন মৌসুমী, ওমর সানী, তারিক আনাম খান, ভারতের রজতাভ দত্ত, সুপ্রিয় দত্তসহ অনেকেই।