বিরামহীন তিশা

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
নুসরাত ইমরোজ তিশা
ছোট ও বড় দুই পর্দাতেই সমানতালে চলছেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। অভিনয় করছেন একের পর এক নাটক ও চলচ্চিত্রে। পাচ্ছেন দর্শকপ্রিয়তা। প্রশংসিত হচ্ছেন সর্বমহলে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সফলতার সঙ্গেই এগিয়ে চলেছেন তিনি। তিশার আগে-পিছে অনেকেই এই সময়ে এসেছেন। তারকাখ্যাতি অর্জন করে আবার হারিয়েও গেছেন। কিন্তু তিশা অভিনয় করে চলেছেন বিরামহীন। শুরু হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট। এই আয়োজন উপলক্ষে সাতজন নারী নির্মাতা নির্মাণ করেছেন 'এগিয়ে যাওয়ার নেই মানা' শিরোনামে সাতটি নাটক। এই সাতটি নাটকের 'কুসুমের গল্প'তে অভিনয় করেছেন তিশা। আর এখানেই দুর্দান্ত ফুটবলার চরিত্রে আবির্ভূত হয়েছেন এ অভিনেত্রী। তিশা বলেন, 'আগেও ফুটবল নিয়ে নাটক করেছি। কিন্তু ফুটবল খেলতে হয়নি। এই নাটকের স্ক্রিপ্ট হাতে পাওয়ার পর লোভ সামলাতে পারিনি। এই কাজটি করে আমি সত্যি তৃপ্ত। আমাদের এমন আরও কাজ হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।' এদিকে তিশা এই প্রথম প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন। এখন ছবি প্রযোজনা আর্থিকভাবে যতটা ঝুঁকিপূর্ণ, ততটাই চ্যালেঞ্জিং। এটা জেনেও কোন ভাবনা থেকে 'নো ম্যানস ল্যান্ড' ছবির মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন? এ প্রসঙ্গে তিশার ভাষ্য, ''নজরুলের একটা কবিতার লাইন আছে, 'আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে'। অনেকটা এ উক্তির ওপর ভিত্তি করেই প্রযোজনায় এসেছি। এটা সত্যি যে, বেশ কয়েক বছর ধরেই আমাদের দেশের চলচ্চিত্র খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখন শিল্পীরা যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসেন, তবেই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির উন্নতি সম্ভব। নিজেদেরই যদি ইন্ডাস্ট্রির প্রতি ভালোবাসা না থাকে, তাহলে সাধারণ দর্শক কেন চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহী হবে? এই ভাবনা থেকেই প্রযোজনায় আসা। এ ছাড়া 'নো ম্যানস ল্যান্ড' ছবির নির্মাণ পরিকল্পনার শুরু থেকে ফারুকীর সঙ্গে আছি। এজন্যই ক্যামেরার সামনে হোক বা পেছনে- এ ছবির কাজের শেষ পর্যন্ত থাকার ইচ্ছা আছে।'' তিশা প্রযোজিত ও ফারুকী পরিচালিত 'নো ম্যানস ল্যান্ড' সিনেমায় অভিনয় ও প্রযোজনা করবেন বলিউডের নামকরা অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। এ ছাড়া স্কয়ার গ্রম্নপের অঞ্জন চৌধুরী ও পরিচালক ফারুকী নিজেও থাকবেন সিনেমাটির প্রযোজনায়। এই সিনেমা নিয়ে তিশা আরও বলেন, 'পৃথিবীতে চলমান অভিবাসন এবং এই ইসু্য ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক যে ঘটনা ঘটছে, তার অনুপ্রেরণায় ছবিটি নির্মিত হবে। ছবির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দুজন অভিনেতা। ইংরেজির পাশাপাশি উর্দু, হিন্দি ও বাংলায় সংলাপ থাকবে সিনেমায়। চলতি বছরের শেষ দিকে এর শুটিং শুরু হবে। বেশির ভাগ শুটিং হবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এবং বাকি অংশের শুটিং হবে ভারত, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ায়।' নাটকের পাশাপাশি বেশকিছু ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন তিশা। নতুন এই পস্ন্যাটফর্ম নিজের ভাবনা সম্পর্কে তিশা বলেন, 'ওয়েব সিরিজ দর্শকের জন্য নতুন এক উদ্ভাবন। যেখানে নতুন চিন্তাধারা নিয়ে দারুণ কিছু কাজ হয়েছে এবং হচ্ছে। অভিনয়ের এই মাধ্যমকেও স্বাগত জানিয়েছি। কারণ আমি চাই, মাধ্যম যেটাই হোক, ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে। এখন যেহেতু প্রযোজনায় এসেছি, তাই ক্যামেরার সামনে ও পেছনে থেকে এমন কিছু কাজ করতে চাই, যা বিশ্বের নানা প্রান্তে এ দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে।' এদিকে এই অভিনেত্রী বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঈদের নাটকে। সম্প্রতি তিনি শেষ করেছেন ঈদের জন্য মাসুদ সেজানের 'ধামাকা অফার' ও সাগর জাহানের 'তালমিছরি না হাওয়াই মিঠাই'সহ কয়েকটি নাটক। চলচ্চিত্রেও আছে সমান ব্যস্ততা। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত 'হলুদ বনি' নামের একটি ছবির শুটিং এরই মধ্যে শেষ করেছেন তিনি। এ ছাড়া তার হাতে আছে 'বোবা রহস্য' শিরোনামের আরও একটি ছবি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার 'শনিবার বিকেল' চলচ্চিত্রটি। দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অনুমোদন না পেলেও রাশিয়ায় ৪১তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে ছবিটি। মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়েছেন তিশা। এখন তিনি মস্কোতেই আছেন। সঙ্গে আছেন ফারুকী ও জাহিদ হাসানও। ওখানে গিয়ে মস্কো বিমানবন্দর থেকে ফেসবুকে জাহিদ হাসান ও তিশার ছবি পোস্ট করেছেন ফারুকী। তিশা অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ ছবি 'ফাগুন হাওয়ায়'। তৌকীর আহমেদ পরিচালিত এ ছবিতে তিশার বিপরীতে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ। ছবিটি মুক্তির পর নতুন করে আলোচনায় আসেন তিশা।