শমী কায়সার কীভাবে অনুদান পেলেন!

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
শমী কায়সার
বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না সিনিয়র অভিনেত্রী শমী কায়সারের। কদিন পর পরই নতুন নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়ে তীর্যক সমালোচনার কবলে পড়ছেন এই অভিনেত্রী। সর্বশেষ সরকারি অনুদান নিয়ে জলঘোলা করার পাশাপাশি খোদ অনুদান কমিটিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, আবেদন না করেই অনুদান পেলেন শমী কায়সার! বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্র ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, বিধি ভঙ্গ করে বিশেষ ব্যবস্থায় অনুদান দেয়া হয়েছে তাকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রদেয় অনুদানের বিষয়ে শেষ সভায় কমিটির সব চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব যোগ দিয়ে চলচ্চিত্র অনুদান তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। এতে আগের আটটি চলচ্চিত্রের সঙ্গে অভিনেত্রী শমী কায়সার প্রস্তাবিত 'স্বপ্ন মৃতু্য ভালোবাসা' চলচ্চিত্রটিও অনুদান তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যদিকে ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের প্রস্তাবিত প্রামাণ্যচিত্র 'হীরালাল সেন' সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েও বাদই রইল তালিকা থেকে! সব মিলিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনুদান পাওয়া পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো মোট নয়টি। যদিও এর আগে ২৪ এপ্রিল তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের নাম। জানানো হয়, একটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র, দুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র এবং ৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রসহ মোট আটটি চলচ্চিত্রকে অনুদান দেয়া হচ্ছে এবার। তালিকাটি প্রকাশের পর থেকে একাধিক অনুদান প্রত্যাশীর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রকাশ করেন অনিয়মের নথি। অন্যদিকে অনুদান কমিটির অন্যতম চার সদস্যকে ওয়াকিবহাল না করে এই তালিকা করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেন বরেণ্য অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, খ্যাতিমান নির্মাতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম ও মতিন রহমান। ২৮ এপ্রিল তথ্যমন্ত্রী বরাবর লিখিত পদত্যাগপত্র জমা দেন তারা। এরপর দফায় দফায় বৈঠকের পর এ সমস্যার সুরাহা হয় ১৪ মে। এ দিনের বৈঠকে যোগ করা হয় শমী কায়সারের ছবিটি। এদিকে বিষয়টি নিয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে শমী কায়সারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'অনুদানের জন্য আমি অবশ্যই আবেদন করেছিলাম। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্যই আবেদন করা হয়েছিল। আবেদন না করেই অনুদান পেয়েছি এটা ভুল কথা। অনেকেই সঠিক তথ্য না জেনেই এমনটি বলছেন। তবে আমি একাধিক চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করছি। যে চিত্রনাট্যটি অনুদান পেয়েছে সেটি আমার ভালো করে দেখতে হবে। কে এর চিত্রনাট্য করেছে, কে পরিচালনা করবে বা ছবিটি কোন বিষয়ের ওপর, তা শিগগিরই জানাতে পারব। অনুদান কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এরই মধ্যে আমার কথা হয়েছে। এটা নিয়ে পরে বিস্তারিত কথা বলবো সাংবাদিকদের সঙ্গে।' অন্যদিকে অনুদান কমিটির সদস্য মোরশেদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় যায়যায়দিনের। তিনি বলেন, 'কোনো ছবি আবেদন না করলে অনুদান পায় কি করে? আবেদন করার জন্য যা যা করা দরকার তার সবই করা হয়েছে। সব ডকুমেন্টই আমরা পেয়েছি। ছবির চিত্রনাট্যটি অত্যন্ত ভালো হয়েছে। ছবির পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে রয়েছে অন্য দুজনের নাম। তবে আমরা অনুদানের আবেদনে প্রযোজক হিসেবে শমী কায়সারের নাম পেয়েছি। এবং ছবিটি এবারের অর্থ বছরেই (২০১৮-১৯) করা হয়েছে। তারপর শমী কায়সারের অনুদানের বিষয়টি নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে তিনি নাকি আবেদনই করেননি। এ নিয়ে আমি শমীর সঙ্গেও কথা বলেছি। ও নিজেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন তিনি আবেদন করেছেন।' 'স্বপ্ন মৃতু্য ভালোবাসা' ছবিটি শহীদুলস্না কায়সার ও পান্না কায়সারকে নিয়ে হতে পারে বলে জানিয়েছে অনুদান কমিটির একটি সূত্র। অনুদান হিসেবে ছবিটি পাবে ৬০ লাখ টাকা।