নিজ বাড়িতে ছুরিকাঘাতের শিকার বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানকে নিয়ে নতুন শঙ্কায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। জানা গেছে, বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাইফ আলী খান। সফল অস্ত্রোপচারের পর আইসিইউ থেকে তাকে জেনারেল বেডে রাখা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছয়টি ছুরিকাঘাতের মধ্যে মেরুদন্ড ও ঘাড়ের দুটি জখম গুরুতর। তার মেরুদন্ডে বিঁধে ছিল ভাঙা ছুরির ফলা। অস্ত্রোপচার করে সেগুলো বের করা হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টায় দু'টি অস্ত্রোপচারের পর অভিনেতাকে বিপদমুক্ত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
\হএ প্রসঙ্গে লীলাবতী হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়োলজিস্ট নিশা গান্ধী বলেন, শিরদাঁড়ার আঘাত খুবই গভীর ছিল। অল্পের জন্য বেঁচেছেন সাইফ। 'সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম' (কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র) থেকে মাত্র ২ মিলিমিটার দূরে ছুরিকাঘাত করেছিল দুষ্কৃতীকারীরা। যদিও তিনি অল্প হাঁটাচলা করেছেন, তবু সাবধানে থাকতে হবে আগামী কয়েক সপ্তাহ।' চিকিৎসকদের কথায়, 'আইসিইউ থেকে বের করা হলেও এখনো বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ তার মেরুদন্ডে আঘাত লেগেছিল। সেখান থেকে বেশ খানিকটা সেরিব্রোস্পাইনাল তরল ক্ষরণ হওয়ায় ক্ষতস্থানে ঘা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে।'
তিনি আরও যোগ করেন, 'তাই এখনও তাকে অনেকটা বিশ্রাম নিতে হবে। পাশাপাশি এক সপ্তাহ তার হাঁটাচলাও বন্ধ রাখা হয়েছে। তাতে তিনি দ্রম্নত সুস্থ হয়ে উঠবেন।' কবে হাসপাতাল ছাড়তে পারবেন অভিনেতা এমন প্রশ্নে এখনো কোনো সমাধানে আসতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। সাইফের শারীরিক পরিস্থিতি আরও কিছু সময় পর্যবেক্ষণ করে তবেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমনটাই জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বাড়ির বাইরের একটি পাইপ বেয়ে ফ্ল্যাটে ঢোকে হামলাকারী। রাত আড়াইটার দিকে সাইফ ও তার স্ত্রী বলিউড অভিনেত্রী কারিনা কাপুরের দুই সন্তান তৈমুর ও জেহ-এর রুমে ঢোকে। হামলাকারীর উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির পরিচারিকা ইলিয়ামা ফিলিপ আলিয়াস লিমা চিৎকার করে ঘুমিয়ে থাকা পরিবারের সদস্যদের জাগিয়ে তোলেন।
এরপর লিমা চিৎকার করায় হামলাকারী প্রথমে তাকেই ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। ডান হাতের কবজিতে আহত হওয়ায় লিমার চিৎকার শুনে পাশের রুম থেকে বেরিয়ে আসেন সাইফ। সঠিক সময়ে দুই সন্তান ও পরিচারিকাকে বাঁচাতে সিনেমার নায়কের মতোই সাইফ ঝাঁপিয়ে পড়েন হামলাকারীর ওপর। এতে হামলাকারী ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছয়বার আঘাত করেন অভিনেতাকে।
হামলার শিকার সাইফকে দ্রম্নত ভর্তি করা হয় লীলাবতী হাসপাতালে। সেখানে সফল অস্ত্রোপচারের পর শঙ্কামুক্ত সাইফকে প্রথমে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাকে আইসিইউ থেকে জেনারেল বেডে স্থানান্তর করা হয়। তবে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও মেরুদন্ডের আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে ক্ষত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ মুহূর্তে তাই লীলাবতী হাসপাতালেই চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন অভিনেতা।