নাট্য সংগঠন বটতলা এবং যাত্রিকের যৌথ প্রযোজনা 'মার্ক্স ইন সোহো'। এবার নাটকটি পর পর দুই দিন প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির 'এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে'।
প্রখ্যাত আমেরিকান ইতিহাসবিদ ও তাত্ত্বিক হাওয়ার্ড জিন রচিত, জাভেদ হুসেন অনূদিত এবং নায়লা আজাদ নির্দেশিত এ নাটকটি প্রথম মঞ্চে আসে ২০২১ সালের অক্টোবরে। করোনা-উত্তর সময়ে ঢাকার নাট্যাঙ্গনে দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল প্রযোজনাটি। দ্বিতীয় পর্বেও দর্শকদের দারুণ আগ্রহ লক্ষণীয়। বিগত বছরের শেষ দিকে টানা পাঁচ প্রদর্শনীর ধারাবাহিকতায় এবার পর পর দুই দিনে দুটি প্রদশর্নী মঞ্চস্থ হবে আগামী ২০ ও ২১ জানুয়ারিতে। মৃতু্যর প্রায় ১০০ বছর পরে কার্ল মার্ক্স কি সত্যি সোহোতে বা পৃথিবীতে ফিরেছেন? ফেরার প্রয়োজনীয়তাও কি আছে? এমন অস্থির সময়ে মানুষের মুক্তি কোথায়? গোটা বিশ্ব যেখানে পুঁজিবাদের দাস, সেখানে কার্ল মার্ক্স কি ফিরছেন এসব থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে নাকি তার নামে চালু বদনামগুলো পরিষ্কার করতে? এসবই জানা যাবে নাটকের নানা স্তরে, বোঝা যাবে শুধু একজন দার্শনিক নন, এক ব্যক্তি কার্ল মার্ক্সকেও।
এ প্রসঙ্গে নাটকটির অনুবাদক জাভেদ হুসেন বলেন, 'মার্ক্সের ভাবনা আর সংগ্রাম মানুষের প্রতি আকুল ভালোবাসার ফল। তার রুখে দাঁড়ানোর ডাক দেখায় কেন এ সংকটের কালে তাকে যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। কার্ল মার্ক্স মানুষের সম্ভাবনা সত্য করার যে প্রয়োজনের কথা বলেছেন তা বাংলাভাষী পাঠকদের কাছে হাজির করার জন্য এর অনুবাদ করা হয়েছে। অনূদিত বইটি এবার স্বরূপে আসছে, মানে নাটক হয়ে মঞ্চস্থ হচ্ছে। নাটকটি বাংলাভাষীদের নতুন করে এ জগৎকে নিয়ে ভাবতে, বুঝতে আর একে বদলের কাজে নামতে কাজে লাগুক।' দুনিয়ার অন্যতম জরুরি দার্শনিক কার্ল মার্ক্স, যিনি উনবিংশ শতাব্দী থেকে আজও মানুষের সমাজের ইতিহাস ও রাজনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে চলেছেন; তাকে নিয়ে নাটক মার্ক্স ইন সোহো বা সোহোতে মার্ক্স! হাওয়ার্ড জিন তার সোহোতে মার্ক্স নাটকে দুনিয়া কাঁপানো চিন্তক মানুষটির দৈনন্দিন প্রেম বা খেদের ভেতর দিয়ে সত্যিকারের একজন মানবিক স্বাপ্নিক দ্রষ্টার ছবি এঁকেছেন।
এর পেছনে জিনের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মার্ক্স নন, বরং মার্ক্সের চিন্তা বা বিশ্লেষণ। দেড়শ বছর পেরিয়ে এসেও কী অসামান্য প্রাসঙ্গিক এবং জরুরি সেসব চিন্তা সেটা দেখানোই জিনের উদ্দেশ্য। নাটকটি নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বটতলার সঙ্গে যুক্ত হয় যাত্রিক। বাংলা ভাষায় নাটকটি মঞ্চায়নের জন্য বটতলা ও যাত্রিককে আনুষ্ঠানিভাবে অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। বটতলা এবং যাত্রিকের এই যৌথতা জিনের দেখা মানবিক মার্ক্সকে এবং তার অসামান্য বিস্ফোরক বিপস্নবী চিন্তাকে আরো বেশি দর্শকের কাছে নিয়ে যাবে, এটুকুই প্রত্যাশা।