মান্নাকে নিয়ে সিনেমা বানাবেন তার স্ত্রী

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মান্নার ১৭তম মৃতু্যবার্ষিকীতে ঘোষণা এলো তাকে নিয়ে সিনেমা তৈরির। জনপ্রিয় এই নায়কের জীবনী নিয়ে তৈরি হতে পারে সিনেমা। সেই ভাবনা থেকেই মান্নার জীবনকাহিনি নিয়ে সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করেছেন তার স্ত্রী শেলী মান্না। নায়কের মৃতু্যর রহস্য নিয়ে চলমান মামলার কার্যক্রম শেষ হলেই সিনেমার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি। শেলী মান্নার কথায়, 'অনেকদিন ধরেই মান্নার জীবন নিয়ে সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করছি। ইতিমধ্যে একটা রাফ চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা অপেক্ষা করছি আদালতের রায়ের জন্য। যেহেতু তার মৃতু্যর ঘটনায় মামলা হয়েছে, তাই শেষটা জানার অপেক্ষায় আছি। শেষটা জানা গেলেই সম্পূর্ণ হবে চিত্রনাট্য, তৈরি করতে পারব একটা কমপিস্নট সিনেমা। প্রতিবছরের মতো এবারও নায়কের মৃতু্যবার্ষিকীতে পরিবার আর ভক্তদের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। শেলী মান্না বলেন, 'মৃতু্যবার্ষিকী তো বেদনাদায়ক ব্যাপার। এখানে উৎসবের কোনো বিষয় নেই। প্রতিবছরের মতো এবারও পারিবারিকভাবে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া, সারাদেশে তার ভক্তরাও মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে থাকে।' ১৯৮৪ সালে তিনি এফডিসির নতুন মুখের সন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে আসেন। নায়করাজ রাজ্জাক মান্নাকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ করে দেন। 'তওবা'র মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা 'তওবা' হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নাম 'পাগলী'। তবে দর্শক নজরে পড়েন ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত 'কাসেম মালার প্রেম' সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর কাজী হায়াৎ পরিচালিত 'দাঙ্গা' ও 'ত্রাস' সিনেমার কারণে তার একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। মোস্তফা আনোয়ারের 'অন্ধ প্রেম', মনতাজুর রহমান আকবরের 'প্রেম দিওয়ানা', 'ডিস্কো ড্যান্সার', কাজী হায়াতের 'দেশদ্রোহী', আকবরের 'বাবার আদেশ' সিনেমাগুলো মান্নার অবস্থান শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায় 'শান্ত কেন মাস্তান' ও ১৯৯৯ সালে আকবরের 'কে আমার বাবা', কাজী হায়াতের 'আম্মাজান', রায়হান মুজিব ও আজিজ আহমেদ বাবুলের 'খবর আছে', মালেক আফসারী পরিচালিত এবং তার প্রযোজিত দ্বিতীয় সিনেমা 'লাল বাদশা'র মতো সুপারহিট সিনেমা উপহার দেন মান্না। তার সিনেমা মানেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রেক্ষাগৃহ ভর্তি দর্শক এবং প্রযোজকের পকেটে লাভের টাকা। তার সিনেমায় বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের কথা উঠে এসেছে বারবার। বঞ্চিত মানুষের কথা সিনেমার পর্দায় সুনিপুণভাবে তুলে ধরে তিনি সবার মন জয় করেন। তাই তিনি ছিলেন আপামর জনসাধারণের প্রিয় নায়ক। মান্না শুধু চলচ্চিত্র অভিনেতাই ছিলেন না, তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে যতগুলো সিনেমা প্রযোজনা করেছেন, প্রতিটি সিনেমা ব্যবসাসফল হয়েছিল। সিনেমাগুলো হচ্ছে 'লুটতরাজ', 'লাল বাদশা', 'আমি জেল থেকে বলছি', 'স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ', 'দুই বধূ এক স্বামী', 'মনের সাথে যুদ্ধ', 'মান্না ভাই' ও 'পিতা মাতার আমানত'। মান্না তার জীবদ্দশায় অনেক সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। তার অভিনীত উলেস্নখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে 'সিপাহী', 'যন্ত্রণা', 'অমর', 'পাগলী', 'ত্রাস', 'লাল বাদশা', 'আম্মাজান', 'আব্বাজান', 'রুটি', 'অন্ধ আইন', 'স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ', 'অবুঝ শিশু', 'মায়ের মর্যাদা', 'মা-বাবার স্বপ্ন', 'হৃদয় থেকে পাওয়া' প্রমুখ। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রম্নয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান চিত্রনায়ক মান্না। উলেস্নখ্য, মান্নার আসল নাম সৈয়দ মোহাম্মদ আসলাম তালুকদার। ১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন ঢাকা কলেজ থেকে।