ঈদে আলোচিতরাই আলোচনায়

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

মাসুদুর রহমান
দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল ঈদ উৎসব। শেষ হলো টিভি চ্যানেলের সপ্তাহব্যাপী রকমারি ঈদ অনুষ্ঠানমালা। বরাবরের মতো এবারের ঈদেও ছয়-সাতশ নাটক ও টেলিফিল্ম প্রচার হয়েছে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পাশাপাশি এসব নাটক ও টেলিফিল্ম দেখেছেন দর্শকরা। ছোটপর্দার সব অভিনয়শিল্পীকেই কমবেশি ঈদের নাটকে কাজ করতে দেখা গেছে। তবে চাহিদাসম্পন্ন তারকাদের দিকেই বেশি আগ্রহ ছিল দর্শকদের। সংখ্যার বিচারেও শীর্র্ষে ছিলেন শীর্ষ তারকারাই। তবে দর্শক ও নাটকবোদ্ধাদের মতে এবার ঈদের নাটকে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন। ঈদের নাটক মানেই যেন জাহিদ হাসান। প্রতিবারের মতো এবার ছোটপর্দার দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছিলেন জাহিদ হাসান। প্রতিবারের মতো এবারও বেশ কয়েকটি নাটক, টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। সবগুলো নাটকেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। এবার ঈদে জাহিদ হাসান অভিনীত ৭ পর্বের ধারাবাহিক নাটক 'মিয়ার বেটা' প্রচার হয় বাংলাভিশনে। এতে প্রভাবশালী মিয়াবাড়ির একমাত্র বংশধর মিয়ার বেটার চরিত্রে অভিনয় করে আবার প্রমাণ করলেও তিনি সত্যিই গুণী অভিনেতা। একই চ্যানেলে স্বল্প বিরতির সাত পর্বের ধারাবাহিক নাটক 'দে দৌড়'। বৃন্দাবন দাসের রচনা ও সাগর জাহানের পরিচালনায় ৭ পর্বের 'সৌদি গোলাপ প্রচার হয় এনটিভিতে। এ ছাড়া 'নুরু গোয়েন্দা', যুবরাজ খানের 'ভুল থেকে ফুল', অন্যটি আদিবাসী মিজানের 'গল্প নাই', ফরহাদ আলমের রচনা ও অরণ্য আনোয়ারের পরিচালনায় টেলিফিল্ম 'প্রিন্টিং মিসটেক', হানিফ পালোয়ানের পরিচালনায় 'অমি একজন ভদ্রলোক' নাটকে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। জাহিদ হাসানের পরেই ছিলেন মোশাররফ করিম। একক ধারাবাহিক সব নাটকেই তার সরব উপস্থিতি চোখে পড়ে। প্রতি ঈদেই সংখ্যাধিক্য নাটকে অভিনয় করেন। খন্ড নাটক, টেলিফিল্ম কিংবা ঈদ ধারাবাহিক- সব ফরমেটেই তার অভিনীত নাটক টিভিতে প্রচার হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও দর্শকদের ভালো লেগেছে মোশাররফ করিম অভিনীত 'যমজ' নাটকের ১১ কিস্তি। এবারের পর্বে এই অভিনেতাকে দেখা গেছে চার চরিত্রে। বাবা, দুই ছেলে ও অভিনেতা মোশাররফ করিমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এ ছাড়া ৭ পর্বের 'কোট পরা ভদ্রলোক', ৭ পর্বের 'তালমিছরি না হাওয়াই মিঠাই!', ৭ পর্বের 'থ্রি টু ওয়ান জিরো অ্যাকশন' প্রচার হয় বাংলাভিশনে। এ ছাড়া বাংলাভিশনে মাবরুর রশিদ বান্নাহর রচনা ও পরিচালনায় 'আমাদের দিন রাত্রি', ধ্রম্নব মিউজিকের চ্যানেলে ফজলুল সেলিমের রচনা ও পরিচালনায় 'গুড বয়', 'লুজারস'সহ অনেক নাটকে অভিনয় করেন মোশাররফ করিম। টিভি নাটকের আরেক বরপুত্র আফরান নিশো। এবার ঈদে সবচেয়ে বেশি নাটক ছিল তারই। ঈদের প্রায় চলিস্নশটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। এই অভিনেতার গল্প ভাবনায় কাজল আরেফিন অমি নির্মাণ করেন 'মুঠোফোন' শিরোনামের একটি নাটক। রুম্মান রশীদ খানের রচনা ও তপু খানের পরিচালনায় 'ইয়েস' নাটকটি প্রচারিত হয় দেশ টিভিতে। এশিয়ান টিভিতে 'টম অ্যান্ড জেরি-২', আরটিভিতে মহিদুল মহিমের রচনা ও পরিচালনায় 'আনোয়ার দি প্রোডাকশন বয়'। এবারের ঈদে খন্ড নাটক ছাড়াও ধারাবাহিক নাটকেও অভিনয় করেন নিশো। আরটিভিতে প্রচার হয় ৭ পর্বের ধারাবাহিক 'মিস্টার অজুহাত'। ঈদে প্রায় ২০টি নাটকে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। ঈদের ৭ পর্বের ধারাবাহিক ও খন্ড নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় এসেছেন তিনি। সাগর জাহান, মাসুদ সেজান, গোলাম সোহরাব দোদুল, সুমন আনোয়ার, অনিমেষ আইচ, দীপু হাজরা, সকাল আহমেদের মতো জনপ্রিয় নির্মাতাদের নাটকে অভিনয় করেছেন এবারের ঈদে। তার অভিনীত উলেস্নখযোগ্য নাটকগুলো হলো- আরটিভিতে ৭ পর্বের 'ধামাকা অফার', এটিএন বাংলায় প্রচারিত হানিফ সংকেতের রচনা ও পরিচালায় 'ভুল ভাঙাতে ভুল করা', সকাল আহমেদের পরিচালনায় 'বিসিএস বক্কর'। এই সময়ের টিভি নাটকের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা। গেল ঈদের দুই ডজন নাটকে অভিনয় করেছেন এ মডেল-অভিনেত্রী। টিভি নাটকের নায়িকাদের মধ্যে এবারের ঈদে সব চেয়ে বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ধারাবাহিকের পাশাপাশি খন্ড নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। তিশার উলেস্নখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- 'ক্রেজি লাভার, 'ব্রেকআপ', 'ফ্রেন্ডস ভার্সেস টিচার', 'ফিরে আসি বারবার', 'দেখা হবে আবারও', 'মাকে দেওয়া কথাটা' ও 'কটনবার'। বাংলাভিশনের 'দ্য এন্ড' নাটকটিতে তিশার অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী এবারের ঈদের নাটকেও চমক দেখিয়েছেন। অভিনয় করেছেন আরটিভিতে প্রচারিত মহিদুল মহিমের রচনা ও পরিচালনায় 'আনোয়ার দি প্রোডাকশন বয়', 'ভাইয়া', মোস্তফা কামাল রাজের নির্দেশনায় 'হোয়াইট হ্যাকার', বাংলাভিশনে শিহাব শাহীনের পরিচালনায় 'বাউন্ডুলে', চ্যানেল আইয়ে চয়নিকা চৌধুরীর 'তোমারই প্রেমে প্রতিদিন', মিজানুর রহমান আরিয়ান, মাবরুর রশীদ বান্নাহর একাধিক নাটক। সাবিলা নূর ভিন্ন ভিন্ন গল্পের নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় এসেছেন। তার উলেস্নখ্য নাটকগুলো হলো- মাবরুর রশীদ বান্নাহর 'ভালোবাসা চিনলা না', এনটিভিতে একই নির্মাতার নাটক 'ভাই পারলে মাফ করবেন', প্রীতি দত্ত পরিচালিত 'তোমার জন্য', আবু হায়াত মাহমুদ পরিচালিত 'বেয়ারা বাকের' ইত্যাদি। এবারের ঈদে বেশ সরব ছিলেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। মাসুদ সেজানের 'ঈদ ধামাকা অফার', মাবরুর রশিদ বান্নার 'আঙ্গুলে আঙ্গুল' ও 'যতন করে রেখো', সাগর জাহানের 'সৌদি গোলাপ' ও 'তালমিছরি না হাওয়া মিঠাই', রুশো চৌধুরীর পরিচালনায় 'লাভলী ওয়াইফ', ওসমান সিরাজ পরিচালিত 'বকুল কথা'। এই নাটকগুলোতে তিশা জুটি বেঁধেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান, চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, আফরান নিশো, ইরফান সাজ্জাদ ও তাহসানের সঙ্গে।