মিউজিক ভিডিওতে বিরক্ত সিনিয়র শিল্পীরা

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সৈয়দ আব্দুল হাদী
বিনোদন রিপোর্ট এক সময় অডিওতে প্রকাশ পেত শিল্পীদের গান। প্রিয় শিল্পীর গান শোনে নেচে উঠত শ্রোতাদের মন। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে অনেক কিছু। হয়েছে নতুনের সংযোজন। এখন গান শোনার পাশাপাশি দেখার বিষয়ও হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাচে-গানে ভরপুর মিউজিক ভিডিও প্রকাশ পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কয়েক বছর ধরে এ দেশের সংগীতাঙ্গনে এমনটা দেখা যাচ্ছে। এই জোয়ারে মানহীন গানের মিউজিক ভিডিও করে নিজেদের প্রচারের চেষ্টা করছে অনেকেই। সময়ের দাবিকে অস্বীকার না করলেও সস্তা গানের এসব মিউজিক ভিডিও নিয়ে বিরক্ত সিনিয়র শিল্পীরা। বাংলা গানের বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী এ সময়ের মিউজিক ভিডিও নিয়ে বলেন, এখন গান মানেই মিউজিক ভিডিও। গানের চেয়ে দেখাটাই যেন মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে গানের চেয়ে ভিডিওর প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। দৃষ্টিকটু হলেও এতে, যায় আসে না। খারাপ জিনিসও ভাইরাল হয়ে যায়। এখনতো ভিউয়ার্সের বিষয়টি অনেক গুরুত্ব পায়। মানের বিষয়টি ভাবা হয় না। মানহীন গানের মিউজিক ভিডিও গানের সৌন্দর্য নষ্ট করে। আবিদা সুলতানা বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন মিউজিক ভিডিও হচ্ছে। সত্যি বলতে কি, এই বয়সে এসে নিজের টাকা খরচ করে মিউজিক ভিডিও করার ইচ্ছা নেই। আমরা যে সময়টা থেকে উঠে এসেছি তখন এসব ছিল না। সে সময় কেবল ভালো গানকে গুরুত্ব দেয়া হতো। এখন ভালো আর মন্দ নেই, সব গানেই মিউজিক ভিডিও করা হয়। নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য আমিও দুই-একটি মিউজিক ভিডিও করেছি। তবে আর নয়। মনির খান বলেন, যুগের পরিবর্তনে এখন ইউটিউবের সময় শুরু হয়েছে। এটা টেকনোলজির একটা পার্ট। ডিজিটাল সংযোজন। এটা খারাপ কিছু না। গানের বাজারে যখন অডিও বিলুপ্তির পথে তখন এই মাধ্যমে প্রচুর গান প্রকাশ হচ্ছে। তবে এর ব্যবহারটা পরিশুদ্ধ হতে হবে। অনেকেই মানহীন গানের মিউজিক ভিডিও করে নিজেদের প্রচারের চেষ্টা করছে। গান আসলে দেখার নয়, শোনার জিনিস। গানের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে মিউজিক ভিডিওর প্রতি গুরুত্ব দেয়াটা বেমানান। এটা হওয়া উচিত নয়। রবি চৌধুরী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে অডিও ক্যাসেট কিংবা সিডির সময়টাকে মিস করি। কারণ, সে সময় রমরমা অবস্থা ছিল। উৎসবগুলোতে বিভিন্ন শিল্পীর ক্যাসেট কিংবা সিডি বের হতো। সেই সময়টা এখন নেই। পরিবর্তন হয়েছে। সময়ের সঙ্গে প্রতিটি বিষয়ে পরিবর্তন আসবে- এটাই স্বাভাবিক। ভালো গান মিউজিক ভিডিও ছাড়াও মানুষ শোনেন, এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। তবে, ভালো গানের মিউজিক ভিডিও করা যেতে পারে। কিন্তু সেই কাজটিও হতে হবে সুন্দরভাবে। যাতে তার প্রতি মানুষের আর্কষণ বাড়ে। যত্রতত্র গানের ভিড়ে ভালো গানের সংখ্যা খুবই কম। এখন শ্রোতারা আরও সহজে গান শুনতে পারছে, এটা ভালো। তবে প্রযুক্তির অপব্যবহার না হয়, সেটিই আমি চাইব। নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি বললেন, যুগের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে সবাই মিউজিক ভিডিও করছে ঠিক আছে, কিন্তু গানের সঙ্গে কোনো যোগসূত্র নেই- এমন দৃশ্যের মিউজিক ভিডিওতে আমার আপত্তি রয়েছে। তাই আমার কণ্ঠ থাকলেও অনেক মিউজিক ভিডিওতে আমি থাকতে চাই না।' তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দেশের মডেলরা যদি আন্তর্জাতিকমানের মডেলদের মতো ফিটনেস মেনটেইন করে ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতে পারে, এতে তো কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু একটি পোশাক তারা ক্যারি করতে পারছে না, কিন্তু তা পরেই অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছে- এটাতেও আমার আপত্তি। এ জন্য খুব হিসাব করে আমি মিউজিক ভিডিওতে থাকি। এ কারণে অনেকেই ভাবেন, আমি কাজ করছি না বা আমার ডিমান্ড নেই। শুধু টিভি বা ভিডিওতে মুখ দেখালেই যদি ব্যস্ত থাকা বোঝায়, তাহলে সে রকম ব্যস্ত আমি থাকতে চাই না।'