জমে উঠেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় বাঙলা নাট্যদলের 'মেঘ' নাটকটি
বিনোদন রিপোর্ট দুই বাংলার আয়োজনে জমে উঠেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মাঝে মৈত্রীবন্ধন আরও দৃঢ় করার প্রত্যয়ে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ১০ দিনের এই আয়োজন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৩৬টি নাট্যদল এবং ভারতের চারটি দলসহ ১২১টি সংগঠনের প্রায় চার হাজার শিল্পী অংশ নিচ্ছেন। মঞ্চনাটক ছাড়াও পরিবেশন করা হচ্ছে পথনাটক, আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য ও মূকাভিনয়। উৎসবটি অষ্টমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাজধানীর ছয়টি মঞ্চে। দুই দেশের শিল্পীরা মাতিয়ে রাখছেন এসব মঞ্চ। এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিদিনই দর্শকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজধানীর মঞ্চাঙ্গন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণির দর্শকরা আসেন উৎসবে। মঙ্গলবার চার মঞ্চে চারটি নাটক মঞ্চায়ন করা হয়। সন্ধ্যা সাতটায় নাটক মঞ্চায়নের আগে বিকাল সাড়ে চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত উৎসব প্রাঙ্গণে পরিবেশিত হয় নাচ, গান, আবৃত্তি ও পথনাটকসহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। এর মধ্যে উৎসবের নাটকগুলো একযোগে মঞ্চায়ন হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হল ও মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে। আর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় জাতীয় নাট্যশালার উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ ও সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে। গতকাল ছিল উৎসবের পঞ্চম দিন। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় বাঙলা নাট্যদলের নতুন প্রযোজনা 'মেঘ'। কিংবদন্তি নাট্যজন উৎপল দত্ত রচিত নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন হ ম সহিদুজ্জামান। প্রযোজনার নেপথ্য-শিল্পীদের মধ্যে মঞ্চ নির্মাণে রয়েছেন আবিদ আহমেদ এবং শব্দ ও আলোক পরিকল্পনায় রয়েছেন নাসির আহমেদ দুর্জয়। পাশাপাশি আলোক প্রক্ষেপণে রয়েছেন মিজান রহমান। 'মেঘ' বাঙলা নাট্যদলের ১৫তম প্রযোজনা। সন্ধ্যা ৭টায় মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় নাট্য সংগঠন 'থিয়েটার ফ্যাক্টরি'র নতুন নাটক 'আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে'। মোহন রাকেশ রচিত ও অংশুমান ভৌমিক অনূদিত এ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন অলোক বসু। দর্শকপ্রিয় এই নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন সঞ্জিতা শারমিন, শামসুন নাহার বিউটি, রামিজ রাজু, শারমিন মাসরুরা খানম, সুরভী রায়, হাসানুজ্জামান খান, আর কে এম মোহ্‌েসন, সুমন ম-ল বানি, মিশাল সমাপ্ত, অলোক বসু প্রমুখ। প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এবং মঞ্চনাটক সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয়। উৎসব চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর ও ভারতের নাট্যজন মেঘনাদ ভট্টাচার্য। প্রথমদিন শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় নাটকটি প্রদর্শিত হয় প্রাঙ্গণেমোর'র আলোচিত প্রযোজনা 'হাছনজানের রাজা'। শাকুর মজিদের রচনায় নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন অনন্ত হীরা। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় 'গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব-২০১৯' অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদের সদস্যসচিব আখতারুজ্জামান বলেন, 'শুরু থেকেই এই উৎসব জমে উঠেছে। প্রতিদিনই একাধিক মঞ্চনাটকের পাশাপাশি আবৃত্তি, নৃত্য, সংগীত ও পথনাটক প্রদর্শন হচ্ছে। দর্শকদের ভিড় নজরে পড়ার মতো। ৪০টির বেশি দলকে নাটক প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া কঠিন। গত বছর এই উৎসবে যে নাটক দেখানো হয়েছে, তার বেশিরভাগই বাদ দেওয়া হয়েছে। মহিলা সমিতিতে যে নাটকগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে, কয়েকটা বাদে তার প্রায় সবগুলো দলের নাটকই নতুন। অনেকেই এখানে নিজেদের নাটক প্রদর্শন করতে চায়, এটি ইতিবাচক। পরবর্তী সময়ে আমরা চেষ্টা করব যেন নতুন নতুন দলকে এখানে জায়গা করে দেওয়া যায়। উৎসব নিয়ে সমালোচনাগুলোকে আমরা সাদরে গ্রহণ করছি। এগুলো আমাদের সামনে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে।'