ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ইলিয়াস কাঞ্চন
বিনোদন রিপোর্ট নিরাপদ সড়কের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক আন্দোলন করে আসছেন প্রখ্যাত অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। এ আন্দোলনকে জোরদার করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। তারই স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক। তবে এই আন্দোলন নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিভিন্ন সময় পরিবহণ শ্রমিকদের রোষানলে পড়তে হয়েছে। নতুন 'সড়ক পরিবহণ আইন' সংশোধনের দাবিতে গত কয়েকদিন বাংলাদেশের বাস-ট্রাক শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরিবহণ শ্রমিকরা ইলিয়াস কাঞ্চনের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে জুতার মালা পরিয়ে সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করছেন। এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইলিয়াস কাঞ্চনের অগণিত ভক্ত ও সুশীলসমাজ। প্রথম দিকে বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি চুপ থাকলেও সোমবার মুখ খুলেছেন তারা। সমিতির পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, 'আমরা কাঞ্চন ভাইয়ের পাশে আছি। যারা নোংরামি করছেন তারা দেশের ও সমাজের শত্রম্ন। শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। কাঞ্চন ভাই র্দীঘদিন ধরে মানুষকে সচেতন করে আসছেন, এটা আমাদের গর্বের বিষয়। তার এই সুন্দর কাজের সঙ্গে শিল্পীরা থাকবেন এবং শিল্পী সমিতি আছে। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে না বুঝে অনেকেই অনেক কিছু লিখছে- তাদের বলতে চাই শিল্পীর দুর্দিনে শিল্পীরা পাশে থাকবে।' জায়েদ খানের পাশাপাশি ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে দাঁড়িয়েছেন আরও কয়েকজন চলচ্চিত্র শিল্পী। চিত্রনায়ক রুবেল বলেন, 'নিরাপদ সড়ক সবার দাবি। নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তার এই কাজ দেশব্যাপী প্রশংসা পেয়েছে। তার সঙ্গে দেশের মানুষ রয়েছেন। তাকে নিয়ে যেসব মানুষ এই ধরনের পোস্টার তৈরি করেছেন তারা নোংরা মনের পরিচয় দিয়েছেন। আমি এই ঘটনার প্রতিবাদের পাশাপাশি তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।' এ বিষয় চিত্রনায়ক ইমন বলেন, 'কাঞ্চন ভাইকে নিয়ে যারা কটূক্তি করছেন তাদের ধিক্কার জানাই। তিনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ভূমিকা রেখে আসছেন। আমাদের দেশে বড় গাড়িগুলো রাস্তায় নামলে প্রাইভেটকার, রিকশা- এগুলোকে কিছুই মনে করে না। আমি ফেসবুকে দেখেছি কাঞ্চন ভাইকে নিয়ে বাজে ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। আমি মনে করি কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে আমাদেরও একাত্মতা প্রকাশ করা উচিত।' চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক বলেন, 'নিরাপদ সড়কের আইন সংশোধন করার কথা বলছেন। কেন আইন সংশোধন করতে হবে। আমরা নিজেরা সংশোধন হলেই তো হয়। আমরা আইন অমান্য করব না। তা হলে তো সংশোধন করার দরকার নেই বলে মনে করছি। সারাদেশের মানুষ তাকে সমর্থন দিচ্ছেন, দেবেন। কারণ আমরা সবাই নিরাপদ সড়ক চাই। এটার বিরোধ করার কোনো কারণ নেই। শ্রমিকদের ফিরে আশা উচিত। যারা ভুল বুঝাচ্ছেন তাদের শনাক্ত করা উচিত।' এদিকে নিজের ছবি সংবলিত ব্যানার ঝুলিয়ে তাতে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, 'মানুষকে সচেতন করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি; কোনো কিছু পাওয়ার আশায় নয়। আমার ক্যারিয়ারে সময় না দিয়ে নিরাপদ সড়কে সময় দিয়েছি। যখন দেখি এই বিষয়টি নিয়ে বাজে মন্তব্য হচ্ছে তখন খারাপ লাগে, কষ্ট লাগে। এছাড়া আর কিছু বলার নেই।' প্রসঙ্গত, গত ১ নভেম্বর থেকে নতুন সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ বাস্তবায়ন করা হয়। এর পরেই নতুন সড়ক পরিবহণ আইন সংশোধনের দাবিতে গত কয়েক দিন বাংলাদেশের বাস-ট্রাক শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন।