চলে গেলেন ক্যামেরার জাদুকর

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাহফুজুর রহমান খান
বিনোদন রিপোর্ট চলেই গেলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক এবং বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমাটোগ্রাফার মাহফুজুর রহমান খান। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২.২৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শুক্রবার বাদ জুম্মা রাজধানীর চকবাজারের শাহী মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে বিকাল আড়াইটার দিকে বিএফডিসিতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার মৃতু্যতে শোকে স্তব্ধ চিত্রপুরী। মরহুম মাহফুজুর রহমানকে শেষবার দেখার জন্য তারায় তারায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এফডিসি চত্বর। অনেক খ্যাতিমান ও সিনিয়র নির্মাতারাও উপস্থিত ছিলেন তার জানাজা নামাজে। গত ২৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর গ্রিনলাইফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অনেকদিন ধরে ডায়াবেটিস ও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন মাহফুজুর রহমান খান। মাহফুজুর রহমান খান একাধারে একজন সিনেমাটোগ্রাফার, অভিনেতা ও প্রযোজকও ছিলেন। তার জন্ম ১৯৫০ সালে ঢাকাতেই। ১৯৬৬ সালে ক্যামেরা শিক্ষানবিস হিসেবে চলচ্চিত্রে তার আগমন। পরে হন অভিনেতা ও চিত্রগ্রাহক। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা 'আমার জন্মভূমি'। পরবর্তীতে তিনি একালের নায়ক, আলোছায়া'সহ আরো বেশকিছু সিনেমাতেও অভিনয় করেন। ১৯৭২ সালে আবুল বাশার চুন্নু পরিচালিত 'কাঁচের স্বর্গ' সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফির মধ্য দিয়ে প্রধান সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে মেহেরবানু, হারানো মানিক, সখি তুমি কার, জোকার, আপন ভাই, গাঁয়ের ছেলে, ভাই ভাই, জীবন মৃতু্য, দোস্তী, ঝুমকা, সুখে থাকো, বদনাম, কালো গোলাপ, তালাক, অভিযান, নির্দোষ, সৎভাই, তিনকন্যা, তওবা, চাপা ডাঙ্গার বউ', আনন্দ অশ্রম্ন, হাজার বছর ধরে, স্বপ্নডানায়, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেটুপুত্র কমলা, আগুনের পরশমণি'সহ অসংখ্য সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেন। ' নায়ক রাজ রাজ্জাকের 'অভিযান' সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। তার জাতীয় এই প্রাপ্তিতে সেই সময় গত প্রায় আঠারো বছর আগে চলে যাওয়া তার স্ত্রী নীরাফাত আনাম ও তাঁর মা রওশন আরা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন। মাহফুজুর রহমান সব সময়ই ভীষণ শ্রদ্ধা প্রকাশ করতেন তার গুরু আব্দুল লতিফ বাচ্চু, সাধন রায়, রফিকুল বারী চৌধুরী ও কিউ জামানের প্রতি। অভিযানের পর মাহফুজুর রহমান খান 'সহযাত্রী', 'পোকা মাকড়ের ঘর বসতি', 'শ্রাবণ মেঘের দিন', 'দুই দুয়ারী', 'হাজার বছর ধরে', 'আমার আছে জল', 'বৃত্তের বাইরে', 'ঘেটুপুত্র কমলা', সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। মাহফুজুর রহমান খান সর্বশেষ অপূর্ব রানা পরিচালিত 'উন্মাদ' সিনেমার কাজ করছিলেন। গেল ৩ নভেম্বর তিনি এই সিনেমার সর্বশেষ শুটিং করেন।