সাক্ষাৎকার
বাদ পড়িনি, সরে এসেছি
চলচ্চিত্রের গস্নামারকন্যা সাদিকা পারভীন পপি। বহু ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রের নায়িকা তিনি। কম হলেও এখনো অভিনয় করছেন নায়িকা চরিত্রেই। সম্প্রতি নতুন একটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর বাদ পড়েছেন খবর প্রকাশ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যাযাদির মুখোমুখি হয়েছেন পপি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- মাসুদুর রহমান
প্রকাশ | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি : খবর রটেছে 'ইয়েস ম্যাডাম' নামে নতুন একটি চলচ্চিত্র থেকে বাদ পড়েছেন?
পপি : আমাদের দেশে এমন কিছু সাংবাদিক বা গণমাধ্যম আছে যারা সত্য-মিথ্যা না জেনে মুখরোচক খবর প্রকাশ করেন। জাতির বিবেক হিসেবে যাদের আখ্যায়িত করা হয়। তাদের থেকে এমনটা আশা করা সত্যিই দুঃখজনক। 'বাদ পড়েছেন পপি' বা 'পপির জায়গায় অমুক... লিখে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। অমুকের জায়গায় অমুক কিংবা বাদ দেয়া কথাটি একজন শিল্পীর জন্য খুবই দুঃখজনক ও অসম্মানজনক। বিশ্বের কোথাও এমটি হয় না।
যাযাদি : ছবির পরিচালক জানিয়েছেন বাদ দেওয়া হয়নি। গল্প আপনার পছন্দ হয়নি বলেই...
পপি : তা হলে তো সত্যটা নিজেই জানতে পেরেছেন। ওনার সঙ্গে ছবিটি নিয়ে প্রাথমিকভাবে আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। গল্প ও চরিত্রটি আমার মনের মতো হয়নি। এ ছাড়া এতে একাধিক নায়িকা থাকার কারণে ছবিতে অভিনয় করা হয়নি। ক্যারিয়ারের এ পর্যন্ত যেসব ছবিতে অভিনয় করেছি তাতে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রেই অভিনয় করেছি। অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দর্শকদের ভালোবাসাও পেয়েছি প্রচুর। তাই এ সময়ে এসে মানহীন কাজ করতে চাই না।
যাযাদি : দর্শক চাহিদার পরেও কম অভিনয় করছেন? অভিনয় থেকে কি নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাইছেন?
পপি : না তা নয়। অভিনয়ই আমার নেশা ও পেশা। আসলে আপনারা সবাই জানেন চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। দিন দিন ছবি নির্মাণ কমছে। যা হচ্ছে তাও দর্শক টানতে পারছে না। নামেমাত্র ছবি নির্মাণ হচ্ছে। প্রপার কোনো ছবি হচ্ছে না। আমি টাকার জন্য অভিনয় করি না। যদি তাই করতাম তাহলে এখনও অনেক ছবি নিয়ে আগের মতো ব্যস্ত থাকত। আজকের এই পপি হতে আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমি চাইলে ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হতে পারি। মানহীন কাজ করে ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চাই না বলেই অনেক প্রস্তাব আসার পরেও ফিরিয়ে দিই। ভালো-মন্দ বুঝে অভিনয় করতে চাই।
যাযাদি : চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট নানা সংগঠন তৎপর। তারপরও কেন চলচ্চিত্রের এমন অবস্থা?
পপি : শুধু সংগঠন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেই তো হবে না। চলচ্চিত্র উন্নয়নের জন্য কাজও করতে হবে। অনেকেই আছেন যারা সংগঠন করে শুধু নিজেদের সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেন। আবার অনেকে কাজ খোঁজে বেরায়। চলচ্চিত্রে কাজ হওয়া দরকার। কারণ এ শিল্পের সঙ্গে অনেকের রিজিক জড়িত। চলচ্চিত্র নির্মাণ না হলে কাজ তৈরি হবে কিভাবে। তাই চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সংগঠনের উচিত হবে প্রপার কিছু করা। বহুদিন পর প্রযোজক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সংগঠনের উচিত হবে চলচ্চিত্র নিয়ে প্রপার কিছু করা। কখনো কখনো দেখা যায় প্রযোজক নিজেই নায়ক হন সিনেমার পর্দায়। হুট করে যেমন যে কেউ নায়ক-নায়িকা হচ্ছেন। আবার না জেনে শুনে হঠাৎ করে নির্মাণে হাত দিচ্ছেন। এতে করে চলচ্চিত্রে ভালো কিছু আসছে না। ভালো কিছু করতে গেলে ভালো শিল্পীদের দিয়ে কাজ করাতে হবে। ভালো কিছু না হলে প্রযোজক সমিতির অনুমতি দেয়া উচিত নয়। দর্শকও চান না মানহীন ছবি। মানহীন ছবির কারণেই ছবি মুক্তির পরেও দর্শক খরায় ভোগে সিনেমা হলগুলো। নানা অনিয়মের কারণে চলচ্চিত্র আজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।
যাযাদি : চলছে বিজয়ের মাস। মুক্তি পাচ্ছে না মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা হচ্ছে না কেন?
পপি : মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্বের বিষয়। এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করা কঠিন। এটি করতে গেলে বাড়তি সাহসও লাগে। সবাই এই সাহস করতে পারেন না। এমনিতেই আমাদের ছবি কম তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা কাজ করছেন তারা প্রপার শিল্পী দিয়ে কাজ করছেন না। তাই এ সময়ের মুক্তিযুদ্ধের ছবিগুলোও সাড়া পাচ্ছে না। অথচ এর আগে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের প্রায় সব ছবিই ভালো করেছে।
যাযাদি : নতুন বছর নিয়ে পরিকল্পনা জানতে চাই?
পপি : নতুন বছর নিয়ে ভালো কিছু পরিকল্পনা আছে। সবাইকে নতুন বছরে ভালো খবর দিতে চাই। বছরটি সবার জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসুক এটা চাই।
যাযাদি : নতুন বছরে বিয়ের সম্ভাবনা আছে নাকি?
পপি : জানি না। আলস্নাহ যেদিন কবুল করবেন সেদিন। ভালো পাত্রের অপেক্ষায় আছি। চারিদিকে যে অবস্থা, প্রেম, পরকীয়া, বিয়ে আবার দুদিন পর বিচ্ছেদ। এসব ভালো লাগে না। কারো সঙ্গে আমার প্রেম-পরকীয়া নেই। যোগ্য ছেলে পেলেই বিয়ে করে ফেলব।