ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামছে আজ

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
অঞ্জন দত্ত পরিচালিত 'ফাইনালি ভালোবাসা' ছবির একটি দৃশ্য
রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত ৯ দিনব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামছে আজ। 'নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ'- স্স্নোগান নিয়ে অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২০ শুরু হয়েছিল গত ১১ জানুয়ারি। ব্যানার, ফেস্টুন ও আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছিল রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার, শিল্পকলা একাডেমি, অঁলিয়াস ফ্রঁসেজ মিলনায়তন, মধুমিতা সিনেমা হল, বসুন্ধারা সিটি স্টার সিনেপেস্নক্স ও সীমান্ত স্কোয়ার। এসব প্রতিষ্ঠানের মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় ৭৪টি দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র। দেশি-বিদেশি শিল্পী, নির্মাতা, চলচ্চিত্র সমালোচক, সাংবাদিক, প্রযোজক ও দর্শকদের অংশগ্রহণে জমে উঠে উৎসবটি। এ আয়োজনের পর্দা উঠেছিল স্পেন ও গ্রিসের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র 'উইন্ডো টু দ্য সি' দিয়ে। পরিচালনা করেন মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল জিমেনেজ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছবির সঙ্গে 'বাংলাদেশ প্যানারোমা' বিভাগে প্রথমদিন দেখানো হয় অরুণ চৌধুরীর 'মায়াবতী'। এরপর একে একে প্রদর্শিত হয় দুই শতাধিক ছবি। গতকাল শনিবার উৎসবের অষ্টম দিনে পদর্শিত হয় অঞ্জন দত্ত পরিচালিত 'ফাইনালি ভালোবাসা'। এর আগে সংগীতশিল্পী হয়ে কয়েকবার ঢাকায় এলেও পরিচালক হিসেবে গত শুক্রবার বাংলাদেশে পৌঁছেন তিনি। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে গতকাল বিকাল ৫টায় দর্শকদের সঙ্গে নিজের চলচ্চিত্রটি দেখেন তিনি। প্রদর্শনী শেষে চলচ্চিত্রটি নিয়ে দর্শকদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। এই আয়োজনের অংশ হিসেবে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে দুই দিনব্যাপী 'চলচ্চিত্রে নারী' বিষয়ক ৬ষ্ঠ ঢাকা আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলন উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্রবিষয়ক প্রশিক্ষক ও লেখক এবং উৎসব পরামর্শক সিডনি লেভাইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পোল্যান্ডের চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার জোয়ানা কোস-ক্রাউজ এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারপারসন ও প্রফেসর কিশোর কামাল। আলোচনায় অংশ নেন অস্ট্রেলিয়ার অভিনেত্রী-শিক্ষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা রবিন হিউগেন, সাংবাদিক ও পুরস্কারজয়ী চলচ্চিত্র সমালোচক এবং বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবের কোয়ার্ডিনেটর মীনাক্ষী সিন্ধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গীতিয়ারা নাসরিন, ইরানি প্রযোজক ও পরিবেশক ইলাহি নবাকথসহ অনেকে। কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অভিনেত্রী ও সংগঠক বন্যা মির্জা এবং চৈতালী সামাদ্দার। সম্মেলনে উপস্থিত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নারীদের চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তারা বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এবারের উৎসবে ছিল এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেন ফিল্মস, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগ। ২২০টি চলচ্চিত্রের মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য (৭০ মিনিটের বেশি) চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১১৭টি, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১০৩টি। বাংলাদেশের ২৬টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১৮টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন এবং ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। বাংলাদেশ প্যানোরমা বিভাগে বাংলাদেশের আটটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রচার-প্রসার ও আন্তর্জাতিক বাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে উৎসব কমিটি এই বিভাগ পুনরায় সংযোজন করে। এই বিভাগে বাংলাদেশের নির্মাতাদের নির্মিত বাছাইকৃত ১০টি চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার সুযোগ পায়। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক ফেডারেশন-ফিপ্রেসি বাংলাদেশ প্যানোরমা বিভাগে সমালোচক পুরস্কার দেবে। ফিপ্রেসির তিন সদস্য বিশিষ্ট জুরিবোর্ড নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো থেকে 'শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র' জন্য একটি পুরস্কার প্রদান করবে। পুরস্কার হিসেবে থাকছে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট। এছাড়া চিলড্রেনস বিভাগে ১৫টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস বিভাগে ৩৮টি ছবি, উইমেন ফিল্ম মেকারস সেশনে দেশ ও বিদেশের নারী নির্মাতাদের ২৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্মস বিভাগে ৫৮টি ছবি প্রদর্শিত হয়। বিকাল ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে পুরস্কার প্রদান ও সমাপনীর মাধ্যমে উৎসবের পর্দা নামবে আজ। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির।