৮ মাস পর সাফল্যের আভাস

সিনেমাপাড়ায় স্বস্তির নিশ্বাস

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
'বীর' ছবির দৃশ্যে শাকিব খান ও শবনম বুবলী
এ যেন খরার মাঝে এক পশলা বৃষ্টির দেখা, অন্ধকারে আলোর রেখা। দীর্ঘদিনের দর্শক খরা, ছবি সংকট আর হতাশার মাঝে দু'দন্ড স্বস্তি এনে দিল চলতি সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া 'বীর' ছবিটি। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে মুক্তি পাওয়া শাকিব খান ও শবনম বুবলী অভিনীত এ ছবিটি মুক্তির চতুর্থ দিনে এসেও হাউজফুল শো পাচ্ছে। বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই দেখছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। সে সঙ্গে ছবিটি সুপারহিট ব্যবসা করবে বলেও মন্তব্য করছেন খ্যাতিমান নির্মাতারা। আর এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস পর সাফল্যের দেখা মিলতে যাচ্ছে ঢাকাই সিনমায়। বছরের দ্বিতীয় মাসে এসেই হল ভর্তি দর্শকের দৃশ্য, গোটা চলচ্চিত্রাঙ্গনের মানুষকে নতুন করে আশা দেখাচ্ছে। এক কথায় 'বীর' নিয়ে দর্শকের এমন মাতামাতি দেখে, এরই মধ্যে দর কষাকষি শুরু হয়েছে ঈদের ছবি মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে। রোজার ঈদে বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তির বিষয়ে ঘোষণাও হয়েছে। তার মধ্যে 'মিশন এক্সট্রিম' অন্যতম। এদিকে সব ধরনের সমালোচনাকে উপড়ে ফেলে শাকিব খানের 'বীর' নিয়ে মাতামাতি শেষই হচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে তারকারাও বীরের প্রশংসা করছেন। এমনকি ট্রেলার দেখার পর স্বয়ং তথ্য প্রতিমন্ত্রীও ছবিটি সিনেমা হলে গিয়ে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয় 'বীর' ছবির নির্মাতা কাজী হায়াত বলেন, 'একেবারে দেশীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক নানা ঘটনা তুলে ধরেছি এ ছবিতে। পত্রিকা ও টিভিতে যেসব রোমহর্ষক, হৃদয়বিদারক, দুর্নীতি, ধর্ষণ, সাংবাদিক লাঞ্ছনা, সংখ্যালঘুদের ভোট কেন্দ্রে যেতে ভয়ভীতি দেখানোর খবর প্রকাশ হয় সেগুলোকে উপজীব্য করে নিজ দেশের চিত্রের মালা গেঁথে গল্প লিখেছি। দর্শক পারিপার্শ্বিক এসব সমসাময়িক ঘটনা দেখতে পেয়ে 'বীর'কে সাদরে গ্রহণ করেছে।' 'বীর' ছবি দেখার পর শাকিবের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অভিনেতা ও সংসদ সদস্য ফারুকও। তিনি বলেন, 'এই ছবিটিতে শাকিব যে বলিষ্ঠ অভিনয় করেছেন তাতে কমপক্ষে আরও ১০ বছর ঢাকাই ছবিতে রাজত্ব করবেন। তিনি কোনো বিষয়েই আপোস করেন না। আমাদের চলচ্চিত্রের গর্ব শাকিব খান।' চিত্রনায়ক ইমন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে 'বীর' ছবি নিয়ে লিখেন, " 'বীর' দেখে মুগ্ধ হয়েছি। কাজী হায়াত ভাইয়ার সংলাপ ও শাকিব ভাইয়ের অভিনয় সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। বছরের শুরুর দিকেই আমাদের চলচ্চিত্রের এমন সাফল্য দরকার ছিল। গত বছর 'পাসওয়ার্ড' করার সময় দেখিছি শাকিব ভাই ভালো কাজের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ। 'বীর' ছবি তারই প্রমাণ।'' অপরদিকে, শোবিজ অঙ্গনের মানুষের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকরাও বীর নিয়ে মাতামাতি করছে। কেউ কেউ শাকিব খানের মুখে খুলনা অঞ্চলের ভাষা শুনে মুগ্ধ হয়েছে। কেউ আবার শাকিব বুবলীর রসায়নের প্রশংসা করছে। উলেস্নখ্য, গত শুক্রবার ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে স্টার সিনেপেস্নক্স, বস্নকবাস্টার সিনেমা, শ্যামলী, বলাকা, মধুমিতা, পুনাম, পুরবী ও অভিসারসহ দেশের আশিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় 'বীর'। এ দিবস উপলক্ষে প্রথমদিকে একাধিক ছবি মুক্তির গুঞ্জন শোনা গেলেও, মুক্তি পেয়েছে কেবল এ ছবিটিই। মুক্তির আগেই 'বীর'র ট্রেলার ও পোস্টার ছিল চলচ্চিত্র ভক্তদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়াও 'বীর' ছবির আইটেম গান 'মিস বুবলী'তে বুবলীকে অন্যরকমভাবে দর্শক আবিষ্কার করেছেন। গতানুগতিক আইটেম গানের পশ্চিমা সংস্কৃতির মোড়ক থেকে বের হয়ে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া ছিল এতে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সর্বত্র বুবলীর প্রশংসা করেছে দর্শকরা। সব মিলিয়ে চলচ্চিত্র বোদ্ধারা মনে করছেন এ ছবির মধ্য দিয়ে শাকিব খান আবারও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘরে তুলতে যাচ্ছেন। 'বীর' শাকিব-বুবলী জুটির ১১তম আর পরিচালক কাজী হায়াতের পঞ্চাশতম সিনেমা।