সা ক্ষা ৎ কা র

নজরুলের মতো আমিও তরুণদের ভালোবাসি

নজরুল সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা। নজরুলসংগীত নিয়ে সাধনা করে যাচ্ছেন। সংগীতে অবদানের জন্য বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। গানের পাশাপাশি সুরসপ্তক নামে একটি গানের স্কুল রয়েছে। প্রতিষ্ঠাটি দুই দশক সময় পার করেছে। সেটি স্মরণীয় করে রাখতে আগামী ১৪ মার্চ পালন করা হচ্ছে সুর সপ্তকের ২০ বছর পূর্তি উৎসব। এ অনুষ্ঠান ও নানা বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- মাসুদুর রহমান

প্রকাশ | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ফেরদৌস আরা
সুরসপ্তক... ২০০০ সালে সুরসপ্তকের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাবার স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। নামকরণটা হয়েছিল আমার বাবার থেকে। আমার বাবা ইঞ্জিনিয়ার হলেও সংস্কৃতিমনা ছিলেন। প্রচুর বই পড়তেন। তার সংগ্রহে থাকা প্রতিটি বইয়ে সুরসপ্তক লিখা ছিল। সেই থেকে আমার গানের স্কুলের নাম দিয়েছি সুরসপ্তক। ছোটদের ৫টি আর বড়দের ৩টি ইয়ারে কয়েক শত শিক্ষার্থী এখানে গান শিখছে। এখানে ক্লাসিকেল ও নজরুল সংগীতসহ সব বাংলাগান শেখানো হয়। ঢাকার বাইরে মাগুরায় এর একটি শাখা রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো সহযোগিতা পাইনি। অনেকেই আগ্রহ দেখালেও কার্যত কোনো সহযোগিতা পাইনি। তবে আমি সব সময় পজেটিভলি দেখি। এরকম সাহস সবাই করতে পারে না। আমি বাচ্চাদের গান শেখাতে ভালোবাসি। সুরসপ্তকের শুরু হয়েছিল বাচ্চাদের নিয়েই। দুই দশকে... সুরসপ্তকের বিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১৪ মার্চ জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এতে মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকে উপস্থিত থাকবেন। বরেণ্য শিল্পীদের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের বেশ কয়েকজন শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। বরেণ্যশিল্পী ফেরদৌসি রহমান ও সৈয়দ আব্দুল হাদী ছাড়াও বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হবে পাঁচ গুণী শিল্পীর শিল্পী সন্তানদের। মানে, শিল্পী সন্তান শিল্পী হয়েছে- তাদের জন্য এ পুরস্কার। এ তালিকায় রয়েছেন উপমহাদেশের প্রথিতযশা নজরুল সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের ছেলে শাফিন আহমেদ, নিলুফার ইয়াসমীনের ছেলে আগুন, সোহরাব হোসেনের মেয়ে রওশন আরা সোমা, সুদিন দাসের মেয়ে মিতু প্রমুখ। এই স্কুলের শিক্ষকদের সম্মাননা ও বেশকিছু শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে বরেণ্য শিল্পীদের পাশাপাশি সুরসপ্তকের শিক্ষার্থীরাও গান পরিবেশন করবেন। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম অকর্ষণ হচ্ছে চিত্রনায়িকা মৌসুমী। গানের অনুরাগী এই নায়িকারও এখানে গান গাইবার কথা রয়েছে। ব্যক্তি জীবনে নজরুলের প্রভাব... নজরুলের আদর্শই আমার আদর্শ। তিনি তারুণ্যের কবি ছিলেন। নজরুলের মতো আমিও তরুণদের ভালোবাসি। তিনি বৈচিত্র্য ছিলেন আমিও তাই। নজরুল প্রতিবাদী ও প্রাণ উচ্ছল ছিলেন। তার মধ্যে স্বচ্ছতা ছিল আমিও স্বচ্ছতা ভালোবাসি। প্রাণোচ্ছল থাকতে পছন্দ করি। আমার ড্রেস আপেও নজরুলের প্রভাব রয়েছে বলে অনেকে বলেন। আমার রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে গান। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি আগ্রহ ছিল। আমার বড় বোনেরা যখন গান শিখত তখন আমি খেলা ফেলে গানের দিকে ছুটে যেতাম। ছোটবেলায় বুঝিনি তবে, বড় হতে হতে বুঝলাম আমি নজরুলকে ভালোবাসি। তার গানে দেশের কথা, সমাজের কথা, মাটির কথা- কি নেই। ব্যস্ততা... আমি প্রচন্ড ব্যস্ত মানুষ। গানের পাশাপাশি সুরসপ্তক নিয়েও ব্যস্ত থাকতে হয় সারা বছর। এছাড়া নিজের ঘর-সংসার তো রয়েছেই। আজ (শুক্রবার) সকালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠানে গান করে সুরসপ্তকে গিয়ে ক্লাস নিয়েছি। এখন বাসায় খেতে খেতে আপনার সঙ্গে কথা বলছি। কাল (আজ শনিবার) রাজশাহীতে প্রোগ্রাম আছে। রাতটা পার করে রওয়ানা হব রাজশাহীর উদ্দেশে। প্রাপ্তি... বাংলাদেশের জনসাধারণের যে ভালোবাসা এটা তো দেখতে পাওয়া যায় না। কমার্শিয়াল স্বীকৃতির চেয়ে মানুষের ভালোবাসার স্বীকৃতি আমার কাছে সবচেয়ে বড়। সেটাই আমার কাছে 'অ্যাওয়ার্ড'। যদিও দেশ-বিদেশের অনেক সম্মাননা পেয়েছি।