এক হলেই দুই ছবি মুক্তির নির্দেশ সরকারের আপত্তি চলচ্চিত্র পরিবারের

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিনোদন রিপোর্ট আগামী রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা মুক্তির ব্যাপারে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। নতুন এই নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, রোজার ঈদ থেকে সপ্তাহে এক হলে একটি নয়, একই সিনেমা হলে একসঙ্গে দুটি ছবি মুক্তি পাবে। এরই মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি চিঠি দেয়া হয়েছে এফডিসিতে। এতে বলা হয়েছে, এখন বিশ্বের অনেক দেশে এমনকি প্রতিবেশি দেশ ভারতের সিনেমা হলগুলোতে এক থিয়েটারে মুক্তি পাচ্ছে একাধিক ছবি। কিন্তু স্বাধীনতার আগে কিংবা পরে বাংলাদেশের হলে সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে একটি করে ছবি। অঘোষিত এই নিয়ম চলছে এখনো। দীর্ঘ সময় ধরে চলা দেশে সিনেমা মুক্তির এই রীতিতে আসছে নতুন নিয়ম। কিন্তু সরকারের এই নির্দেশকে পাগলের প্রলাপ বলে মন্তব্য করার পাশাপাশি ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিবারের নেতারা। জানা গেছে, সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রণালয় বরাবর একটি আবেদন করেছেন চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান। যেখানে সপ্তাহে একটি হলে দুটি করে ছবি মুক্তির আবেদন করেন তিনি। যা আমলে নিয়ে কার্যকরের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। যার ফলে সপ্তাহে একটি হলে একটি নয়, মুক্তি পাবে দুটি ছবি। কিন্তু নতুন নিয়ম মানতে চান না চলচ্চিত্র প্রযোজক কিংবা পরিচালকরা। কারণ, নতুন নিয়ম কার্যকর করতে বছরে ২০৮টি ছবি মুক্তির দরকার হবে। যা বাংলাদেশে এখন অসম্ভব। বছরে যেখানে মুক্তি পায় মাত্র ৪৫-৬০টি ছবি। তাই এই নিয়ম মানা সম্ভব না বলেই জানিয়েছেন পরিচালক ও প্রযোজকরা। তবে মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিলেও চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি আপাতত একটি হলে সপ্তাহে একটি করে ছবিই মুক্তির রীতি রাখছেন বলে জানিয়েছেন প্রযোজক ও প্রদর্শক সমিতির নেতা সামসুল আলম। এ নিয়ে প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, 'এটা পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছু নয়। দীর্ঘকালের প্রচলিত একটি নিয়ম ভেঙে নতুন এই নিয়ম চালু করা আদৌ সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। তথ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হলেও এটা নির্ভর করবে হল মালিকদের ওপর। হল মালিক তার হলে যে সিনেমা চালাবেন, সেই সিনেমাই চলবে। হল মালিকের ইচ্ছাতেই একটি সিনেমা সপ্তাহের পর সপ্তাহ চলে। আবার একদিনও চলে না। 'বেদের মেয়ে জোসনা'র মতো ব্যবসাসফল সিনেমা মধুমিতাসহ রাজধানীর আরও কয়েকটি বড় বড় হল চালাইনি। আবার অন্য হলে এটি মাসের পর মাস চলেছে। হঠাৎ \হকরে একজন প্রযোজকের কথায় এই নিয়ম হতে পারে না। এটা নির্ভর করবে হল মালিকদের ওপর। সিনেমার জায়গাটা এত সহজ নয় যে, বললাম আর হয়ে গেল। এর জন্য অনেক কিছু বুঝতে হয়। এলোমেলো কথায় কিছু হয় না। যদিও বসুন্ধরা সিনে পেস্নক্সে একাধিক ছবির শো হয়। সিনেপেস্নক্সের বাইরে এই নিয়ম নেই। এখন সিনেপেস্নক্সের সঙ্গে অন্যসব হলের তাল মেলালে চলবে না।' পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন 'এটা প্রযোজক ও প্রদর্শকদের ব্যাপার। তারা যেটা ভালো মনে করবেন, তাই হবে। হল মালিকরা বিষয়টি ভালো মনে করলে নিয়ম চালু হতে পারে। যদিও এই নিয়মটা আমাদের দেশে নেই। আমাদের দেশে প্রতি সপ্তাহে এক হলে একটি ছবি মুক্তির নিয়মটাই চলে আসছে। এই নিয়ম ভারতে প্রচলিত। সেখানে একই হলে দুটি সিনেমা চলছে। কোনো কোনো হলে তিনটিও মুক্তি পায়। তবে আমাদের দেশের জন্য এটা একটু কঠিন। যদিও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে সময় লাগবে। কারণ, যেখানে সিনেমা সংকট, সেখানে একই হলে দুটি ছবি কিভাবে মুক্তি পেতে পারে। এরপরও যদি হয়, তাহলে এটা খারাপ না। দর্শকের একটি সিনেমা পছন্দ না হলে আরেকটি দেখবে। হয়ত দিনের প্রথম দুই শো চললো একটি ছবির, পরের দুই শো চললো আরেকটি ছবির। আমাদের দেশে সিনেপ্রেক্সগুলোতে তাই হয়। এটা এক দৃষ্টিতে ভালো। এতে হয়ত দর্শক হলে আসতে শুরু করবে। এ নিয়ে প্রযোজক সেলিম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'দেশে বর্তমানে করোনা আতঙ্ক চলছে। এখন আর এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।' বলে ফোন রেখে দেন।