২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত দুই হাজার ২৯, মৃত্যু ১৫

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাস
মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃতু্য হয়েছে। ফলে মোট ৫৫৯ জন মারা গেলেন করোনাভাইরাসে। একই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ২৯ জন। এটি একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ৪০ হাজার ৩২১। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাসবিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। বুলেটিন পড়েন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি নতুন একটিসহ মোট ৪৯টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ হাজার ২৬৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে ৯ হাজার ৩১০টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো দুই লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৬টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ২৯ জনের দেহে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এই প্রথম ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়াল। ফলে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৩২১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃতু্য হয়েছে আরও ১৫ জনের। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৫৯। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৫০০ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ৪২৫। নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ১১ জন পুরুষ, চারজন নারী। সাতজন ঢাকা বিভাগের, আটজন চট্টগ্রাম বিভাগের। এলাকাভেদে ঢাকা শহরের ছয়জন, নারায়ণগঞ্জের একজন, চট্টগ্রাম শহরের দুজন, চট্টগ্রাম জেলার দুজন, কক্সবাজারের দুজন ও কুমিলস্নার দুজন রয়েছেন। বয়সের দিক থেকে \হত্রিশোর্ধ্ব দুজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঁচজন, ষাটোর্ধ্ব পাঁচজন, সত্তরোর্ধ্ব দুজন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের একজন রয়েছেন। গত বুধবারের (২৬ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ জন মারা গেছেন। আট হাজার ১৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও এক হাজার ৫৪১ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতু্য কমলেও হয়েছে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্ত। এর আগে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে এক হাজার ৯৭৫ জনের, যা জানানো হয় গত ২৫ মে'র বুলেটিনে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্যর রেকর্ড আছে ২৮ জনের। এ তথ্য জানানো হয় গত ২২ মে'র বুলেটিনে। বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং মৃতু্যহার ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরও ২৪৮ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন চার হাজার ৯৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৩৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৩৮ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০৬টি। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে চার হাজার একজনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে দুই লাখ ৭৫ হাজার ১০৫ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৪০৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ১৬ হাজার ৮১২ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫৮ হাজার ২৯৩ জন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেওয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। বরাবরের মতোই ডা. নাসিমা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানো করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বকে মৃতু্যপুরীতে পরিণত করেছে। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে তিন লাখ ৫৭ হাজার। তবে ২৫ লাখের মতো রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।