যমুনা ও ধরলায় নৌকাডুবি ১৪ জনের মৃতু্য

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদী ও কুড়িগ্রামের ধরলা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় মোট ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ছয়জন। সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে মঙ্গলবার দুপুরে ও কুড়িগ্রামের উলিপুরে বুধবার সন্ধ্যায় এই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। আমাদের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে মঙ্গলবার দুপুরে এনায়েতপুর থেকে ৭৩ জন যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা চৌহালী যাওয়ার পথে স্থলচর এলাকায় পৌঁছলে ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়ে ডুবে যায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা ৫৪ জন যাত্রীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় মোট ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে বেলকুচি উপজেলার গয়নাকান্দি গ্রামের মৃত জহির ফকিরের ছেলে পাশান ফকির (৬৫), কলাগাছি গ্রামের শামীম হোসেনের ছেলে নাইমুল ইসলাম (৪), টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার সুবর্ণতলী গ্রামের ব্যবসায়ী মৃত মজিদ মোলস্নার ছেলে শেখ কামাল মোলস্নার (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মনজিল হক জানান, ঢাকা থেকে ডুবুরি দল মঙ্গলবার রাতে এসে পৌঁছে বুধবার সকালে জোতপাড়া এলাকা থেকে আজিজল নামে এক যুবক (৩০) ও স্থলচর এলাকা থেকে কৈুজরী গ্রামের আফজাল (৩৮) নামে আরও এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। বিকাল ৫টার দিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে খাস কাউলিয়া, পয়লা ও স্থলচর এলাকা থেকে আরও চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুপুরে জোতপাড়া এলাকা থেকে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এই নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা মোট ১০ জনে দাঁড়াল। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শাহীনুর কবির জানান, দুপুরের দিকে চৌহালী উপজেলার খাস কাউলিয়া ইউনিয়নের জোতপাড়া এলাকা থেকে এক ব্যক্তির (৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সকালে চৌহালী থানাধীন খাস কাউলিয়ার চর ও পয়লার চর এলাকা থেকে তিনজনের এবং এনায়েতপুর থানাধীন স্থলচর এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে স্থলচর এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার গোবিন্দহ গ্রামের নূর মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে আলম মিয়ার পরিচয় জানা গেছে। অন্যদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এখনো ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। এদিকে নৌকাডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আমাদের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ধরলা নদীতে বুধবার সন্ধ্যার দিকে মেয়ের বিয়ের বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে ৪০-৫০ জন একটি নৌকায় করে সাতভিটা থেকে কাশিম বাজারে ফেরার পথে বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার কবলে পড়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় সবাই স্থানীয়?দের সহায়তায় উদ্ধার হলেও মেয়ের বাবাসহ চারজন নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় বৃহস্প?তিবার দুপুর সা?ড়ে ১২টার দি?কে রংপুর এবং কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ডুবুরি দল সা?ড়ে চার ঘণ্টা অভিযান চা?লি?য়ে মর?দেহগুলো উদ্ধার করে। বৃহস্প?তিবার সকাল সা?ড়ে ৮টার দি?কে রংপুর এবং কুড়িগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ডুবুরি দল উদ্ধার কাজ শুরু করে। প?রে দুপুর সা?ড়ে ১২টার মধ্যে নিখোঁজ কনের বাবা নূর ইসলামসহ আমেনা বেগম, কামরুজ্জামান ও নূরু মিয়াকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক মনোরঞ্জন সরকার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রংপুর এবং কুড়িগ্রামের তিনটি ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা অভিযানে নিখোঁজ সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বিষয়?টি নি?শ্চিত ক?রে জানান, নিখোঁজ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।