বাসে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও ভাড়া নিয়ে বাগ্‌বিতন্ডা

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মঙ্গলবার রাজধানীতে গণপরিবহণে ওঠার সময় যাত্রীদের হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করেন হেলপার -ফোকাস বাংলা
রাজধানীতে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই গণপরিবহণে চড়ে গন্তব্যস্থলে যাতায়াত করছেন মানুষ। সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই গণপরিবহণ চলছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটেছে। ভাড়া নিয়ে বাগ্‌বিতন্ডার চিত্রও নজরে পড়েছে। গণপরিবহণ চালুর দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার রাস্তায় বাসের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। সে সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যাও ছিল বেশি। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর পল্টন মোড়ে সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চললেও চালক ও যাত্রীদের মধ্যে ভাড়া নিয়ে বাগ্‌বিতন্ডা হতে দেখা যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চলাচলে সাধারণ জনগণ সন্তুষ্ট হলেও বর্ধিত ভাড়া অনেকেই এখনো মেনে নিতে পারেননি। এছাড়া কতদিন এ স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা। সরেজমিনে সদরঘাট থেকে মিরপুরগামী বিহঙ্গ পরিবহণে বাসে ওঠার সময়ই হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাসের মধ্যে কোনো স্যানিটাইজার ছিল না। যাত্রী ওঠানামার ক্ষেত্রে তিন ফুট শারীরিক দূরত্বও রক্ষা করা হয়নি। এ বিষয়ে বাসটির হেল্পার রাসেল বলেন, 'আপনি ওঠার সময়ই তো হাতে স্প্রে মারছি। আর তো কিছু নেই।' স্প্রেতে কী কী মেশানো জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা তো আমার জানা নাই। তবে কাজ হয় এটা দিয়া!' অন্যদিকে, পল্টন মোড়ে বিআরটিসির একটি বাসে ওঠার সময় যাত্রীদের জীবাণুনাশক স্প্রে করে দেওয়া হয়নি। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বাসে অর্ধেক সংখ্যক আসনে যাত্রী নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে বাস ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়েছে বিআরটিএ। কিন্তু বর্ধিত ভাড়ার তালিকা নেই কোনো বাসেই। চালক-হেল্পাররা জানান, সরকার থেকে বাড়তি ভাড়ার কোনো তালিকা আসেনি তাদের কাছে। তাই তারা নিজের মতো হিসাব করে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। যাত্রীদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও আসছে। এ বিষয়ে সুপ্রভাত পরিবহণের যাত্রী আল হাসান বলেন, 'আগে পল্টন মোড় থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটে যেতাম ৩০ টাকায়। ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়লে তা ৪৮ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু আমার কাছ থেকে ৫৫ টাকা রাখা হয়েছে।' যাত্রীর এ অভিযোগের বিষয়ে বাসের চালক বিলস্নাল হোসেন বলেন, 'আমরা তো মুখে মুখে হিসাব করছি। সরকার তো কোনো তালিকা দেয়নি।' প্রায় তিন ঘণ্টা পল্টন ও জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় অবস্থান করেও, বাসগুলো স্বাস্থ্যবিধি মানছে কি না, তা পর্যবেক্ষণে বিআরটিএ বা সরকারের কোনো সংস্থার কোনো অভিযান দেখা যায়নি। গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি স্বীকার করে মঙ্গলবার এক ভিডিও কনফারেন্সে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সোমবার থেকে শর্তসাপেক্ষে সারাদেশে গণপরিবহণ চলছে। প্রথমদিন অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে। কোথাও কোথাও স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগও পাওয়া গেছে।' যাত্রীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'সচেতনতা বোধ ও সামাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে আমরা এ সংক্রমণ রোধ করতে পারি। নিজেদের অবহেলা ও শৈথিল্য দুর্যোগ আরও ঘনীভূত করতে পারে।'