শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় বিমানের কর্মকর্তার মৃতু্য

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৭ জুন ২০২০, ০০:০০
মো. জয়নাল আবেদীন

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিমানের প্রকৌশল শাখার এক কর্মকর্তার মৃতু্য হয়েছে।

মো. জয়নাল আবেদীন (৫৩) নামে এই কর্মকর্তা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জুনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার ছিলেন।

শনিবার প্রথম প্রহরে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে তার মৃতু্য ঘটে বলে জানিয়েছেন বিমানের জনসংযোগ শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার।

তিনি বলেন, অসুস্থতার কারণে বেশ কিছু দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন জয়নাল আবেদীন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার অসুস্থতা বেড়ে গেলে পরিবার তা অফিসকে জানায়। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার উদ্যোগ নেয় বিমান।

দুই ছেলে ও স্ত্রীসহ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের কসাইবাজার রেলগেট-সংলগ্ন মোলস্নারবাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন জয়নাল।

তার স্ত্রী হাফিজা সুলতানাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত; তিনি বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাফিজা সুলতানা বলেন, গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে জয়নাল আবেদীনের শরীরে জ্বর। প্রথমে ভেবেছিলেন মৌসুমি জ্বর। তবে জ্বর না কমায় ২ জুন তিনি ও তার স্বামী পরীক্ষা করানোর পর তাদের দুইজনেরই করোনাভাইরাস 'পজেটিভ' আসে।

হাফিজা বলেন, জয়নালের ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও কখনো শ্বাসকষ্ট ছিল না। শুক্রবার সন্ধ্যার পর তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেন।

'আমরা এখন কোথায় যাব'

জয়নাল আবেদীন ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃতু্যতে তার পরিবার ভীষণ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে জানিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন তার স্ত্রী হাফিজা সুলতানা।

তার তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে মেজ মেয়ে বিয়ের পর ফরিদপুরে বসবাস করেন। বড় ছেলে রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী, সবার ছোট ছেলে একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

হাফিজা বলেন, 'আমরা এখন কিভাবে বাঁচব? দুই সন্তান নিয়ে কার কাছে যাব? আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমরা বিমান কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাই।'

তার বড় ছেলে মিনহাজুল আবেদিন বলেন, 'আব্বার যখন জ্বর কমছিল না, তখনই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। আমরা তাকে গরম পানির ভাঁপ দিচ্ছিলাম। পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধও দেওয়া হচ্ছিল। বাসায় আমরা দুই ভাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আলাদা হয়ে ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা বাবাকে হারিয়ে এতিম হয়ে গেলাম। '

'বাবা এতদিন বটবৃক্ষের মতো আমাদের আগলে রেখেছিলেন। এখন মা, ৯ বছরের ছোট ভাইসহ আমরা কোথায় যাব জানি না। আত্মীয়স্বজন কতদিন আর আমাদের সহযোগিতা করতে পারবে?' ভারী কণ্ঠে বলেন মিনহাজুল।

জয়নালের মরদেহ ঝিনাহদহের হরিণাকুন্ড থানার হরিশপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান ছেলে।

জয়নাল আবেদীনের পরিবারকে সহায়তার জন্য বিমান শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. মশিকুর রহমানও দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'আমরা চাই বিমানে সবাই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলুক। কর্তৃপক্ষকে এই ব্যাপারে আরও কঠোর হতে হবে।'

'পাশাপাশি কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং মারা গেলে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ারও দাবি জানাই '।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<101604 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1