করোনাভাইরাস

নমুনা পরীক্ষার ফল নিয়ে সন্দেহ বিশেষজ্ঞদের

প্রতিদিন যত নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার মধ্যে ২০-২২ শতাংশ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এটি প্রকৃত চিত্র নয় বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ

প্রকাশ | ০৮ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী -ফাইল ছবি
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে যেভাবে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তাতে প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আশঙ্কা করেন, সম্ভাব্য রোগীদের নাক এবং মুখ থেকে ঠিকমতো নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না। এই নমুনা ঠিকমতো সংগ্রহ না করা হলে কোনো ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ থাকলেও সেটি শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। সঠিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা না হলে সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানো রীতিমতো অসম্ভব বিষয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন যতগুলো নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার মধ্যে ২০ থেকে ২২ শতাংশ মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এটি প্রকৃত চিত্র নয় বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কারণ টেস্ট ঠিকমতো হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে। ল্যাবরেটরিতে যথার্থ ফল পেতে বেশকিছু পূর্বশর্ত পালন করতে হয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বেনজির আহমেদ বলেন, নাক এবং মুখ থেকে সঠিক পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা জরুরি। সব ক্ষেত্রে সেটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা নিয়েও সন্দেহ আছে তার। তার মতে নির্ভুল ফল পেতে নিচের পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি : ১. কার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, ২. কীভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, ৩. স্যাম্পল ঠিকমতো সংরক্ষণ করা, ৪. স্যাম্পল ঠিকমতো টেস্ট করা, ৫. সঠিক রিপোর্ট তৈরি করা। বেনজির আহমেদ বলেন, 'ভাইরাসটি কখনো থ্রোটে থাকবে, কখনো নস্ট্রিলে থাকবে। কখনো দুটোতেই থাকবে। এজন্য দুটি জায়গা থেকেই নমুনা নিতে হবে। আমাদের ন্যাজাল যে ক্যানেলটা আছে, এই ক্যানেলের ওয়াল থেকে সোয়াব নিলে এটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিতে হবে। আমি যদি শুধু নাকে ঢুকাই আর বের করি এবং ওয়ালটিকে যদি টাচ না করি, সেখানে কিছু আসবে না। কারণ ভাইরাসটি তো থাকে ওয়ালে।' বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথমদিকে শুধু ঢাকায় অবস্থিত আইইডিসিআরে পরীক্ষা করা হতো; কিন্তু এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫০টি ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এসব ল্যাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণে জড়িত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য এবং ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনিও মনে করেন, দ্রম্নততার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়ে গেছে। অধ্যাপক নজরুল বলেন, 'আমরা কন্টিনিউয়াস ট্রেনিং দিচ্ছি। ট্রেনিং এত কুইকলি করতে হয়েছে যে, অনলাইন ট্রেনিং ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব ছিল না।' বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সঠিক টেস্ট এবং দ্রম্নত সময়ের মধ্যে ফল পাওয়াটা বেশ জরুরি। সেটি না হলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতেই থাকবে; কিন্তু অনেকে অভিযোগ করছেন, অনেক ক্ষেত্রে নমুনা দেওয়ার পর রিপোর্ট পাওয়ার জন্য চার থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিবিসি বাংলা