বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
করোনাভাইরাস

হাসপাতালেও লাল হলুদ সবুজ জোন

হাসান আরিফ
  ০৯ জুন ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশের ছোট বড় সব সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনা রোগী চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। ৫০ শয্যার উপরের সব হাসপাতালে আলাদা করোনা ইউনিট খোলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ৫০-এর নিচের শয্যার হাসপাতালগুলোকেও ভিন্ন ভিন্ন অংশে চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ট্রায়োড বা জোন পদ্ধতির আওতায় আনা হবে হাসপাতালগুলোকে। ট্রায়োড পদ্ধতি বলতে যখন কোনো দেশে সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে তখন দেশটির প্রতিটি হাসপাতালের ভেতরে লাল, হলুদ, সবুজ- এই তিনটি ইউনিটে ভাগ করা হয়। রোগী হাসপাতালের রিসেপশনে এলে রিসেপশনিস্ট দায়িত্ব নিয়ে রোগীকে মূল্যায়ন করে নির্দিষ্ট জোনে পাঠাবেন।

জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় ট্রায়োড পদ্ধতিতে কোভিড এবং সন্দেহভাজন কোভিড সব রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। হাসপাতালে যদি এমন কোনো রোগী আসেন যাদের সংক্রামক রোগের কোনো লক্ষণ নেই, তিনি সংক্রমিত কারও সংস্পর্শে আসেননি বা সম্প্রতি সংক্রমিত এলাকায় ভ্রমণ করেননি, তাহলে তাকে সবুজ জোনে পাঠিয়ে তার রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হবে।

রোগীর যদি সংক্রামক ব্যাধির লক্ষণ থাকে, অথবা তিনি আক্রান্ত ব্যক্তি বা এলাকার সংস্পর্শে এসেছেন এমন ইতিহাস থাকে তাহলে তাকে হলুদ ইউনিটে পাঠিয়ে হাসপাতালেই তার করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলে তাকে সবুজ ইউনিটে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং ফল পজিটিভ এলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে লাল ইউনিটে। এই লাল ইউনিটে ওই সংক্রামক ব্যাধির যাবতীয় চিকিৎসা সেবা সরবরাহ করা হবে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতাল নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশের সরকার। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত শয্যার অভাব, চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতার নানা অভিযোগ ওঠে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া নিশ্চিত না হলেও জ্বর, সর্দিকাশির সাধারণ রোগীরাও হাসপাতালে ভর্তি হতে না পারা বা চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে একই সঙ্গে কোভিড-১৯ ও নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সেবা চালু করার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রমতে, বাংলাদেশে শুধু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে মোট ১১০টি হাসপাতালে ২০ হাজার শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা মাত্র চারটি। এ পরিস্থিতিতে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলোকে সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি করোনা চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে।

বাংলাদেশে গতকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৫ হাজার ৭৬৯ জন। আর মৃতু্য হয়েছে ৮৮৮ জনের। এজন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে দেশব্যাপী চিকিৎসার পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো এক চিঠিতে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিকে কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীদেরকে হাসপাতালের ভিন্ন ভিন্ন অংশে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে ৫০ শয্যার উপরের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা চালু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১-এর অতিরিক্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পর্যালোচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য সেবা পর্যালোচনা করে সর ধরনের রোগীদের পৃথক পৃথকভাবে চিকিৎসা দিতে বলেছেন।

এর আগেও বাংলাদেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সন্দেহভাজন কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ নির্দেশনা জারি করলেও তার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। বরং প্রতিদিন অসংখ্য রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসা পেতেও নানা ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<101857 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1